পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে ভারতের বিরুদ্ধে নেওয়া প্রস্তাব ফুৎকারে ওড়াল নয়াদিল্লি। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরের সীমানা পুনর্বিন্যাস নিয়ে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট জমা পড়েছে। এই রিপোর্টের বিরুদ্ধেই পাক জাতীয় পরিষদ একটি প্রস্তাব পাস করেছে। পড়শি দেশের জাতীয় পরিষদের সেই প্রস্তাবকে 'প্রহসনমূলক' বলে মনে করে ভারত। ওই প্রস্তাব পত্রপাঠ খারিজ বিদেশমন্ত্রকের।
গত ১২ মে জম্মু কাশ্মীরের সীমানা পুনর্বিন্যাস নিয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করা হয়। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ উপত্যকার ডিলিমিটেশন নিয়ে ভারতের তৈরি ওই রিপোর্ট খারিজ করে দেয়। ওই রিপোর্টের বিরুদ্ধে পাক জাতীয় পরিষদে একটি প্রস্তাব পাস করা হয়। পাকিস্তানের অভিযোগ, ''ভারতের ওই রিপোর্টটির লক্ষ্য হল, ওই এলাকার মুসলিমদের ধর্মান্তরিত করা। সংখ্যাগরিষ্ঠ বাসিন্দাদের সংখ্যালঘুতে পরিণত করা। কাশ্মীরি জনগণকে ভোটাধিকারমুক্ত করে তাঁদের ক্ষমতাচ্যুত করাই লক্ষ্য। আদতে বিজেপির রাজনৈতিক ও নির্বাচনী উদ্দেশ্যগুলিকেই এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।''
উল্লেখ্য, ডিলিমেটনশন কমিশনের রিপোর্টে জম্মু ও কাশ্মীরে সাতটি অতিরিক্ত নির্বাচনী এলাকার সুপারিশ করা হয়েছে। জম্মুতে ৬টি এবং কাশ্মীরে একটি নির্বাচনী কেন্দ্র বাড়ানোর সুপারিশ রিপোর্টে। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির মোট আসন সংখ্যা ৮৩ থেকে বাড়িয়ে ৯০ এ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জম্মু বিভাগের আসন সংখ্যা আগের ৩৭ থেকে বেড়ে ৪৩ হবে। কাশ্মীর উপত্যকায় ৪৬ থেকে বেড়ে আসন সংখ্যা হবে ৪৭।
জম্মু কাশ্মীরের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে পাক জাতীয় পরিষদে নেওয়া প্রস্তাবকে গুরুত্বই দিচ্ছে না ভারত। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, "পাকিস্তানের অবৈধভাবে এবং জোর করে দখল করে রাখা ভারতের এলাকাগুলি-সহ আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনও কিছু বলা বা হস্তক্ষেপ করার অধিকার ওদের নেই।'' কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং লাদাখের গোটা এলাকা ভারতেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল আছে এবং সর্বদাই থাকবে বলে জানিয়ে বাগচি আরও বলেন, ''সীমানা নির্ধারণের বিষয়টি স্টেকহোল্ডারদের পরামর্শ এবং অংশগ্রহণের নীতির ভিত্তিতে একটি গণতান্ত্রিক উপায়ে স্থির করা হয়েছে।''
আরও পড়ুন- জ্ঞানবাপির পর চূড়ান্ত টানাপোড়েন মথুরার কৃষ্ণজন্মভূমিতেও, মসজিদের বিরুদ্ধে এগোল নারায়ণী সেনা
কিছুদিন আগেই পাকিস্তানে বড়সড় রাজনৈতিক বদল এসেছে। ইমরান খানের কুর্সিতে এখন শাহবাজ শরিফ। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব নিয়েই ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। এদিন সেই প্রসঙ্গে পাক প্রশাসনকে বিঁধেছে বিদেশমন্ত্রক।
বিদেশমন্ত্রক একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, "এটি দুঃখজনক, নিজেদের ঘর সাজানোর বদলে পাকিস্তানের নেতৃত্ব ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে চলেছে। ভিত্তিহীন এবং উস্কানিমূলক ভারত বিরোধী প্রচারে তাঁরা লিপ্ত রয়েছে।" সবশেষে এদিন আবারও পাকিস্তানকে ভারত বিরোধী কার্যকলাপ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে বিদেশমন্ত্রক। একইসঙ্গে পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং লাদাখে মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধেরও আবেদন জানিয়েছে ভারত।
Read full story in English