কখনও হস্টেলের ভাঙা সিলিং আবার কখনও থাকার জায়গায় অব্যবস্থা, তবু কোনও হস্টেল কাউন্সেলিং হয়নি গত কয়েক বছরে। এমনই একাধিক সমস্যার সমাধানের দাবিতে আন্দোলনে বসেছেন মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা। আমরণ অনশনের ৭৬ ঘণ্টা কেটেও গিয়েছে ইতিমধ্যেই, অন্যদিকে পাল্লা দিয়ে জমছে অভিযোগের পাহাড়।
বেশ কয়েকদিন আগে মূলত হস্টেলের দাবিতেই শুরু হয় এই আন্দোলন। পরিস্থিতি জটিল হতে থাকে ক্রমশ। পড়ুয়াদের দাবি, শুধুমাত্র প্রথম বর্ষের ছাত্ররা থাকবে বলে যে হস্টেল বানানো হয়েছে বলে বলা হচ্ছে, সেখানে রীতিমতো জোর করে ভয় দেখিয়েই স্থানান্তরিত করা হয়েছে পিজির ছাত্রীদেরও। পাশাপাশি কয়েকদিন আগে হঠাৎই ফোন যায় নতুন ফার্স্ট ইয়ারদের কাছে, কোনও হস্টেল কাউন্সেলিং ছাড়াই তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয় যত শীঘ্র সম্ভব তাঁরা যেন হস্টেলের দখল নেন, নচেৎ পরবর্তীকালে হস্টেল নাও পেতে পারেন। এই ফোন পাওয়া মাত্রই বীরভূম, বাঁকুড়া থেকে তড়িঘড়ি চলে আসেন ছাত্ররা।
আন্দোলনকারীদের দাবি, এই ফোন গিয়েছিল প্রিন্সিপালের ঘর থেকেই। আরও অভিযোগ, অধ্যক্ষ উচ্ছ্বল কুমার ভদ্র কার্যত বিপথে চালিত করেছেন জুনিয়রদের, এবং এখানেই চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছেন তাঁরা। এখানেই শেষ নয়, আন্দোলনরত এক পড়ুয়ার দাবি, তাঁরা যাতে এখানে হস্তক্ষেপ না করতে পারেন সে কারণে রীতিমতো পুলিশি পাহারায় প্রথম বর্ষের ছাত্রদের হস্টেল দেওয়া হয় এদিন। বিক্ষোভকারীদের আরও একটি গুরুতর অভিযোগ, সেখানে সেসময় উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন কুখ্যাত ছাত্রনেতা পার্থপ্রতিম মন্ডল, যিনি জুনিয়রদের রীতিমত র্যাগিং করেন।
আরও পড়ুন: হস্টেলের দাবিতে অনির্দিষ্ট কাল অনশনে মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা
এমনই একাধিক অভিযোগে উত্তপ্ত মেডিক্যাল কলেজ প্রাঙ্গন। অভিযোগ একাধিকবার জানানো সত্ত্বেও সদুত্তর পাওয়া যায়নি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে, এমনটাই বলছেন পড়ুয়ারা। আজ বৃহস্পতিবার আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীরা একটি কনভেনশন ডাকেন। কনভেনশনে উপস্থিত ছিলেন একাধিক অধ্যাপকও। সেখানে দীর্ঘ কথা কাটাকাটির পর একটি মিটিং-এর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় দু তরফেই। কর্তৃপক্ষ জানান, ছাত্রদের যে ছ'টি দাবি রয়েছে তার মধ্যে চার নম্বর দাবিটি মেনে নেওয়া হবে, অর্থাৎ কলেজ কাউন্সিল মিটিং-এ ছাত্র প্রতিনিধিদের প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে। এরপর আন্দোলনকারীদের ছজন প্রতিনিধি সহ শিক্ষকরা বসেন এই মিটিং-এ।
গত বুধবার বিকেলে ছাত্রদের সঙ্গে দেখা করে অনশন প্রত্যাহার করে নেওয়ার আর্জি জানান অধ্যক্ষ উচ্ছলবাবু। তবে অনশনকারীদের তরফে সেই আবেদন নাকচ করা হয়েছে।পড়ুয়ারা জানান, তাঁদের ছটি দাবির সবকটি মানা না হলে আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, অনশন চলাকালীন ইতিমধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বেশ কয়েকজন। রক্তচাপের সমস্যা ও রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ার কারণেই সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। মেডিক্যালেই তাঁদের চিকিৎসা চলছে।