ওআরএস জল, ফলের রস নিয়ে তখন তৈরি হচ্ছেন অনশনকারীদের সহপাঠীরা। মিষ্টির দু-এক প্যাকেটও ঢুকলো। ১৪ দিন অনশনে বসা কঙ্কালসার চেহারার অনিকেত, দেবাশিষ, হিল্লোল, অর্ণবের মুখে জয়ের হাসি। অনশন ভঙ্গের কিছুক্ষণ আগের ছবিটা এমনই ছিল। দীর্ঘ আন্দোলনের পর সোমবার অবশেষে জয়ের মুখ দেখলেন মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারি পড়ুয়ারা। এদিন সকালে কলেজ কাউন্সেলিং-এর মিটিংয়ের পর ছাত্রদের সমস্ত দাবি মেনে নিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। লিখিত ভাবে জানালেন, নতুন হস্টেলের দুটি তলা যথাযত নিয়ম মেনেই বরাদ্দ করা হবে পুরনো বর্ষের ছাত্রদের জন্য। পাশাপাশি মেরামত করা হবে পুরনো ভেঙে পড়া হস্টেলও। আবর্জনা পরিস্কারেরও আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা। শেষে অধ্যক্ষ অশোক ভদ্র নিজের হাতে খাইয়ে দিলেন ছাত্রদের। উঠলো টানা ১৪ দিনের অনশন।
কর্তৃপক্ষের দেওয়া বিজ্ঞপ্তি
আন্দোলন চলাকালীন ছাত্রদের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছেন মিরাতুন নাহার থেকে শুরু করে বহু বিশিষ্টজনেরা। বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল থেকে একাধিক নেতা মন্ত্রী দেখা করতে এসেছেন ছাত্রদের সঙ্গে। তবে প্রথম থেকেই আন্দোলনকারীরা সাফ জানিয়েছিলেন, এই আন্দোলনে কোনওরকম রাজনৈতিক রঙ লাগতে দেবেন না তাঁরা। আর সেই মতই বিজেপির মুকুল রায় বা সিপিএমের মহম্মদ সেলিম, প্রত্যেককেই ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে গত কয়েকদিনে।
গত রবিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করে গণ কনভেনশনের আহ্বান জানানো হয়। সাধারণ মানুষের উপচে পড়া ভীড়ে ভর্তি হয়ে যায় মেডিক্যাল কলেজের লেকচার থিয়েটার। আজ মিলল সেসবের সদুত্তর। জয়ের পর আন্দোলনকারীদের কথায়, ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাসে নজির হয়ে থাকবে তাঁদের এই আন্দোলন। অনশনকারী দেবাশিষ বর্মনের মা ললিতা বর্মনের কথায়, "এই আন্দোলনর জয় একা মেডিক্যাল কলেজের নয়। গোটা ছাত্রসমাজের জয়।" এদিনের সাফল্যে স্বাভাবিকভাবেই খুশী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকে।
তবে সমস্যার শেষ হয়েও হইল না শেষ। আন্দোলনকারীদের পৌষ মাসেও পিজিটি ছাত্রীদের সর্বনাশের আঁচ চোখে পড়ল ফের। সুপ্রিয়া বসাক নামে এক ছাত্রীর কথায়, প্রথমে ১৭৫ জনের জন্য তিনটে তলা দেওয়া হয়েছিল। এখন কোনও আগাম বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই একটা তলা নিয়ে ওদের দিয়ে দেোয়া হল। ৮৮ জনের নির্ধারিত থাকার জায়গাতেই মাথা গুঁজতে হবে ১৭৫ জনকে" সব মিলিয়ে কার্যত ক্ষিপ্ত পিজিটির ছাত্রীরা। ইতিমধ্যেই পিজিটির ছাত্রীরা সমস্যার সমাধানের দাবি জানিয়ে দ্বারস্ত হয়েছেন প্রিন্সিপালের কাছে।