মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার পশ্চিমবঙ্গ শাখার নির্বাচনে দুর্নীতি অব্যাহত। বিগত কয়েক বছর ধরেই নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে প্রার্থীদের মধ্যে। কলকাতা, বাঁকুড়া, বীরভূম, উত্তরবঙ্গ সহ গোটা রাজ্যে ভোট প্রক্রিয়া নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। জানা গিয়েছে, এখন পর্যন্ত যে ক'জনের কাছে খাম পৌঁছেছে তার মধ্যে প্রায় অর্ধেকই ফাঁকা, অর্থাৎ খামের মধ্যে ব্যালট নেই।
খবরে প্রকাশ, ২০ জুলাই থেকে ব্যালট পাঠাতে শুরু করেছে কাউন্সিল। এ বছর চিকিৎসকদের অভিযোগ, যে সমস্ত খাম আসছে তাতে কোনও স্ট্যাম্প নেই। বেশ কয়েক বছর খালি খাম এলেও স্ট্যাম্প নিয়ে সমস্যা এবছরই প্রথম। নিয়ম অনুযায়ী, যে খাম আসে সেই খামের ভিতরে পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচন করে সেই খামের মুখ বন্ধ করে পাঠিয়ে দিতে হয়। এক্ষেত্রে স্ট্য়াম্প না থাকায় তৈরি হচ্ছে জটিলতা, উঠছে একাধিক প্রশ্ন। স্ট্যাম্প ছাড়া কীভাবে ব্যালট চিকিৎসকদের কাছে পৌঁছাচ্ছে, বা সেই খাম কীভাবেই বা কাউন্সিলের অফিসে পৌঁছাবে, এই নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। কাউন্সিলের পক্ষ থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: মেডিক্যালের আন্দোলনে জয়, মিছিলে হাঁটলেন নাগরিকরা
বিরোধী পক্ষের দাবি, নির্বাচন সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক ভাবে পরিচালিত হচ্ছে। চিকিৎসকের একাংশ জানিয়েছেন, আগামিকাল আদালতের দ্বারস্থ হবেন তাঁরা, এবং আদালতই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। আজ বুধবার কাউন্সিলের সামনে অবস্থানে বসেন চিকিৎসক শিবিরের একাংশ।
এদিন দুপুরে এ বিষয়ে আলোচনার জন্য একটি সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করা হয় ডক্টরস ফোরামের পক্ষ থেকে। উপস্থিত ছিলেন ডাঃ কৌশিক লাহিড়ী, পূর্ণব্রত গুন, রেজাউল করিম সহ আরও অনেকেই। তাঁদের দাবি, মেডিক্যাল কাউন্সিল নির্বাচনে যে দুর্নীতি শুরু হয়েছে তা বন্ধ হয়ে অবিলম্বে স্বচ্ছ ভোটের ব্যবস্থা করা হোক, যদিও ব্যালট ভোটে তা কখনও সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন তাঁরা। এক্ষেত্রে অনলাইন ভোটকেই প্রাধান্য দেওয়ার কথা তুলেছেন তাঁরা। ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের তরফে ডাঃ রেজাউল করিম বলেন, "আমরা চাইছি না এমসিআই নির্বাচনে কোনও রাজনৈতিক রঙ লাগুক, প্রার্থীরা প্রত্যেকেই অরাজনৈতিক হোক এটাই আবেদন, কারণ বেশ কিছু বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, এমসিআই-তে যা ঘটছে তা স্বচ্ছ নয়, দোষীদেরও কোনও শাস্তি হচ্ছে না, এক্ষেত্রে একটা বড় অংশের ক্ষতির সম্ভবনা রয়ে যাচ্ছে।"
— IE Bangla (@ieBangla) July 25, 2018
আরও কয়েকটি প্রস্তাব পেশ করেছেন বিরোধী পক্ষের চিকিৎসকরা। তাঁরা জানান, কলেজে ব্যালটের খাম নেওয়ার সময় প্রিন্সিপাল এর কাছেই খুলতে হবে। এ ক্ষেত্রে যদি খামে ব্যালট না থাকে, তাহলে প্রিন্সিপালের কাছে চিঠি লিখে জানাতে হবে তৎক্ষনাৎ। চিঠিতে সিরিয়াল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, ডিপার্টমেন্ট এবং কোন পদ তা লিখতে হবে। একই চিঠি রিটারনিং অফিসারকেও লিখতে হবে wbmc@vsnl.net মেল আইডিতে। পাশাপাশি তাঁদের দাবি চিকিৎসকদের কাছে খাম পৌঁছনো থেকে খামে সই করা পর্যন্ত সমস্ত প্রক্রিয়ারই ভিডিও করা হোক।