Advertisment

প্র্যাক্টিক্যাল ট্রেনিংয়ের দাবিতে রাস্তায় নেমে আন্দোলন চিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল পড়ুয়াদের

ভারতীয় দূতাবাসের প্রকাশিত তথ্য অনুসারে ২০ হাজারের বেশি ছাত্র করোনাকালীন পরিস্থিতিতে চিন থেকে দেশে ফিরে এসেছেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Medical students of Chinese universities hold protest,

রবিবার এই সমস্যার দ্রুত সমাধান দাবি করে দিল্লির যন্তর-মন্তরে চিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।

প্রায় দুবছরের বেশি সময় অতিক্রান্ত। চিনে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের প্রবেশের উপর “অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা” এখনও জারী রয়েছে। আর তার জেরেই সংকটের মুখে হাজার হাজার মেডিকেল পড়ুয়ারা। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ তাদের যেন তাড়া করে বেড়াচ্ছে। এমন অনেক পড়ুয়া রয়েছেন যাদের কোর্স প্রায় শেষের মুখে। ইন্টার্নের অপেক্ষায় দিন গুনছেন। এদিকে আবারও চিনে বেড়েছে করোনা সংকট। একাধিক শহরে জারী করা হয়েছে লকডাউন। এমন পরিস্থিতিতে কী করবেন ভেবে উঠতে পারছেন না চিনের একাধিক মেডিকেল কলেজের ভারতীয় পড়ুয়ারা। চিনের জিলিন শহরের বেহুয়া ইউনিভার্সিটির মেডিকেল পড়ুয়া বছর ২১ এর হর্ষ ব্যাস ২০২০ সালে করোনার সময় ভারতে ফিরে এসেছেন সেই থেকে কলেজে ফিরে যাওয়ার অপেক্ষায় দিন গুনছেন।

Advertisment

রবিবার দিল্লিতে মেডিক্যাল পড়ুয়ারা এক বিক্ষোভে অংশ নেয়। তাদের দাবি, দেশের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে তাদের প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হোক। তা না হলে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে পড়তে হবে তাদের। চলতি মাসের শুরুতেই দেশের সর্বোচ্চ আদালত ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনকে আগামী দি'মাসের মধ্যে একটি নীতি গ্রহণের নির্দেশ দেয় যাতে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল পড়ুয়ারা দেশে প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিংয়ের সুযোগ পান।

রবিবার এই সমস্যার দ্রুত সমাধান দাবি করে দিল্লির যন্তর-মন্তরে চিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। চিনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চুড়ান্ত বর্ষের মেডিক্যাল পড়ুয়া সোনিয়া জর্জ বলেন গত মে'তে তাঁর চুড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। এখন প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিং শেষ না হলে ভবিষ্যৎ সংকটের আশঙ্কা করছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, " ২০২০ সাল থেকেই সবটাই অনলাইনে চলছে। হাতে কলমে প্রশিক্ষণ ছাড়া আমার ডিগ্রীটি বৈধ কিনা তা নিয়ে আমি নিজেই বিভ্রান্ত। সিচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে এখনও। সেদেশে ফেরত আসা নিয়ে কোন সবুজ সংকেত দেয়নি। আমার ইন্টার্নশিপ পরের বছর শুরু হওয়ার কথা এবং যদি এর মধ্যে বিষয়টির সমাধান না করা হয়, তাহলে সেটাও অনলাইনে হবে। হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ ছাড়া ডাক্তারি পড়া অসম্পুর্ণ বলেও দাবি করেন তিনি।

এক সাক্ষাতকারে হর্ষ বলেন, “২০২০ সালের জানুয়ারিতে ভারতে আসি, মার্চেই ফিরে যাওয়ার কথা ছিল, করোনার বাড়বাড়ন্ত সব কিছু এলোমেলো করে দিয়েছে। সেই সময় আমি প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলাম আজ তৃতীয় বর্ষ আমার। সবটাই হয়েছে অনলাইনে। কিন্তু এর ফলে অনেক কিছু বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে। বিশেষ করে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস অফলাইনে হওয়াটাই বাঞ্ছনীয়। কিন্তু তার উপায় নেই। প্রায় দু বছরের বেশি সময় ধরে দেশে আটকে রয়েছি। কবে ফিরতে পারব জানিনা, নতুন করে করোনা বাড়ায় আমাদের ভবিষ্যৎ আরও অন্ধকারে তলিয়ে গেল”। সেই সঙ্গে ব্যাস ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, আমরা হাজার হাজার পড়ুয়া শুধু এটা জানতে চাই, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের প্রবেশের উপর “অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা” কবে উঠবে? চীন ছাড়া একাধিক দেশ আবার অফলাইন ক্লাস শুরু করেছে। আমরা জানিনা কেন আমাদের এখনও সেদেশে ফিরতে দেওয়া হচ্ছে না”।

তামিলনাড়ুর বাসিন্দা এবং ইয়াংঝো বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী অলকা কৃষ্ণান বলেন, 'দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ নিয়ে আমরা দীর্ঘকাল অপেক্ষা করে রয়েছি। আমরা চাই আমাদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দ্রুত শুরু করা হোক'। ২০২০ সাল থেকে আমরা শুনেই যাচ্ছি যে আমাদের সমস্যাটি 'শীঘ্রই' সমাধান করা হবে। আমরা এখনও আড়াই বছর পরে এখানে আছি,” বলেছেন ওয়ানঝো বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মোঃ ওয়াসিম।

ভারতীয় দূতাবাসের প্রকাশিত তথ্য অনুসারে ২০ হাজারের বেশি ছাত্র করোনাকালীন পরিস্থিতিতে চিন থেকে দেশে ফিরে এসেছেন। ইউক্রেনের মত চিনেও কোর্স ফি কম হওয়ার কারণে ভারতীয় পড়ুয়াদের কাছে চীন অন্যতম পছন্দের দেশ। সেদের ডাক্তারি পড়ার খরচ প্রতি বছর ভারতীয় মুদ্রায় ২.৫ লক্ষ টাকা। ভারতের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে এই কোর্স ফি বার্ষিক ৪ লাখ থেকে 20 কোটি টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। সেই সঙ্গে অপর একটি কারণ ভারতে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। অনেকেই এদেশে সুযোগ না পেয়ে চীন অথবা ইউক্রেনকেই ডাক্তারি পড়ার জন্য বেছে নেন।

Read full story in English

china Medical students
Advertisment