দু'বছর আগে, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে দিল্লি জল বোর্ডের (ডিজেবি) একটি প্রাঙ্গনে ১৫ শতকের স্মৃতিস্তম্ভ পরিদর্শন করেছিল প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। তার এক মাস পরে, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ডিজেবিকে চিঠি লিখে ওই স্মৃতিস্তম্ভের দায়িত্ব নিতে চেয়েছিল। ওই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের দখল, তার ওপর নজরদারি এবং সংরক্ষণের জন্য একটি দরজা চেয়েছিল।
তারপর দীর্ঘদিন কোনও উত্তর না-পেয়ে এবছরের জানুয়ারিতে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আধিকারিকরা স্থানটি পরিদর্শনে যান। আর, তখনই তাঁরা দেখতে পান যে স্মৃতিস্তম্ভটি অদৃশ্য হয়ে গেছে। খোঁজ নিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, এটি দিল্লি জল বোর্ডের তৎকালীন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিকের একটি সরকারি বাংলোর পথ তৈরি করতে ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার, ভিজিল্যান্স বিভাগ ২০০৭ ব্যাচের আইএএস (এজিএমইউটি ক্যাডার) অফিসার উদিত প্রকাশ রাইকে স্মৃতিস্তম্ভটি ভেঙে ফেলার অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্মৃতিস্তম্ভ সুলতানি আমলের, সৈয়দ রাজবংশের জমানায় ১৪১৮ সালে তৈরি হয়েছিল। তা ভেঙে সেই জায়গায় ডিজেবির তৎকালীন সিইও উদিত প্রকাশের নতুন সরকারি আবাসন তৈরি হয়েছে।
রাইকে এবছরই দিল্লি থেকে মিজোরামে বদলি করা হয়েছে। কিন্তু, তাঁর পরিবার এখনও সুলতানি যুগের স্মৃতিস্তম্ভ ভেঙে তৈরি দিল্লির নতুন আবাসনেই থাকে। ভেঙে ফেলা স্মৃতিস্তম্ভটির একটি প্রবেশদ্বার আজও দিল্লির লাজপত নগরের কাছে দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির জল বিহারে রয়েছে। তার উল্লেখ ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের হিন্দু ও মুসলমান স্মৃতিস্তম্ভের তালিকার চতুর্থ খণ্ডে রয়েছে। সেই তালিকা অনুযায়ী, এই স্মৃতিস্মারক ইটের গাঁথনি এবং লাল বেলেপাথর দিয়ে তৈরি। এটি তিনটি খিলান আর দুটি ঘরের সাহায্যে যুক্ত।
আরও পড়ুন- রেকর্ড সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সরকার গড়বে বিজেপি, দলীয় কর্মীদের বিরাট বার্তা মোদীর
ভিজিল্যান্সের কারণ দর্শানোর নোটিসে বলা হয়েছে যে স্মৃতিস্তম্ভটি ডিজেবির 'নিয়ন্ত্রণ'-এ ছিল। একই প্রাঙ্গণে নির্মিত কয়েকটি ছোট আবাসিক কোয়ার্টারের কাছে ছিল ওই স্মৃতিস্তম্ভ। স্মৃতিস্তম্ভটির বদলে তৈরি নতুন বাড়িটি তৈরি হয়েছে ৭০০ বর্গমিটার এলাকাজুড়ে। কারণ দর্শানোর নোটিস অনুসারে, 'একটি টাইপ VIII কোয়ার্টারের জন্য নির্ধারিত থাকে ৪০৩ বর্গমিটার। কিন্তু, তার চেয়ে নতুন বাড়িটি ৩০০ বর্গমিটার অতিরিক্ত এলাকাজুড়ে তৈরি হয়েছিল'।