তদন্তের ক্ষেত্রে সিবিআইয়ের সাধারণ সম্মতি প্রত্যাহার করল মেঘালয়। এর আগে দেশের বিরোধী শাসিত সব রাজ্যেই একই পদক্ষেপ করেছে। রাজ্যে সিবিআইয়ের তদন্তের সম্মতি বাতিলে মেঘালয় নবম রাজ্য। উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য়ে ক্ষমতায় রয়েছে কনরাড সাংমা নেতৃত্বাধীন পিপলস পার্টি ও বিজেপির জোট সরকার। তাসত্ত্বেও সিবিআইয়ের ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।
সরকারি এক অফিসারের কথায়, 'এটা সত্যি যে তদন্তের ক্ষেত্রে সিবিআইয়ের সম্মতি প্রত্যাহার করেছে মেঘালয়। কিন্তু এর কারণ জানা নেই।'
এর আগে রাজ্যে তদন্তের ক্ষেত্রে সিবিআই সম্মতি প্রত্যাহার করেছে, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খন্ড, ছত্তিশগড় ও কেরল। সিবিআই দিল্লির বিশেষ পুলিশ প্রতিষ্ঠা আইন দ্বারা পরিচালিত। এই আইন সিবিআইকে দিল্লি পুলিশের একটি বিশেষ শাখায় পরিণত করেছে এবং এর আসল একতিয়ারটি দিল্লির মধ্যে সীমাবদ্ধ। তাই সিবিআইকে দিল্লি ছাড়া অন্যান্য রাজ্যে তদন্তের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হয়। সম্মতি পেলেই সিবিআই তদন্ত করতে পারে।
২০১৫ সালেও একই পদক্ষেপ করেছিল মেঘালয়। সেই সময় রাজ্যের ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। ২০১৮ সালে মেঘালয়ের ক্ষমতায় আসে মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট। মুখ্যমন্ত্রী হন জোরামথাঙ্গমা। তবুও সিবিআইয়ের তদন্তের জন্য সম্মতি দেওয়া হয়নি।
বিরোধী দলগুলির দাবি, কেন্দ্র ও ভারতের শাসক দল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে নিজেদের হাতিয়ারে পরিণত করেছে। সিবিআইয়ের দ্বারা কেন্দ্র বিরোধী দল ও নেতাদের উপর প্রতিহিংসাপরায়ণ পদক্ষেপ করে। সিবিআই তদন্ত মোটেও নিরপেক্ষ নয়। ফলে, সিবিআই-কে রাজ্য়ে তদন্তের ক্ষেত্রে আগে থেকে সাধারণ অনুমতি দেওয়া যাবে না।
মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার ভাই জেমস পি কে সাংমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের পটভূমিতে মেঘালয়ে সিবিআই-য়ের সম্মতি প্রত্যাহার করা হয়েছে৷ জেমসের বিরুদ্ধে রাজ্যে সৌভাগ্য প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনায় কংগ্রেসের সিবিআই তদন্তের দাবি করেছিল। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের শহর ও গ্রামীণ এলাকার সব বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়ে থাকে। এর আগে, সিন্ডিকেটরাজ,অবৈধ খনন ও কয়লা পরিবহনের অবৈধ অনুমতি দেওয়ার অভিযোগের পরে মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা ভাই জেমসকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন।
২০১৮ সালের নভেম্বরে পশ্চিমবঙ্গ ও অন্ধ্রপ্রদেশও তদন্তের ক্ষেত্রে সিবিআইয়ের সাধারণ সম্মতি প্রত্যাহার করেছিল। সেই সময় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেচিলেন যে, 'রাজনৈতিক কারণে ও প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে কাজে লাগাচ্ছে কেন্দ্র।'
২০১৯ সালের ভোটে অন্ধ্রপ্রদেশে টিডিপি পরাজিত হয়। ক্ষমতায় আসে ওয়াইএসআর কংগ্রেস। তারপর ওই রাজ্যে সিবিআইকে তদন্তের সাধারণ সম্মতি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ওই বছরই ছত্তিশগড়ের বাঘেল সরকারও সিবিআইয়ের সাধারণ সম্মতি প্রত্যাহার করে। একই পদক্ষের ২০২০ সালে করেছে পাঞ্জাব, কেরল, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র।
Read in English