পলাতক হিরে ব্যবসায়ী মেহুল চোকসি এবার আবহাওয়ার আড়াল নিয়েছেন। অ্যান্টিগা ও বারবুডায় অসময়ের টাইফুনের জন্য তিনি যথাসময়ে ভারতে তাঁর আইনি নথিপত্র পাঠাতে পারেননি বলে জানিয়েছেন তিনি। ৩১ জানুয়ারি বম্বে হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা চ্যালেঞ্জ করার জন্য একমাসের যে সময়সীমা, তা টাইফুনের জন্য মানতে পারেননি বলে দাবি চোকসির।
যে সাক্ষীর সাক্ষ্যের ভিত্তিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট মেহুল চোকসিকে ২০১৮ সালের পলাতক আর্থিক অপরাধী আইনে পলাতক ঘোষণা করেছে,মুম্বইয়ের বিশেষ আদালতে মেহুল চোকসির আবেদন ছিল, সেই সাক্ষীকে জেরা করার সুযোগ দেওয়া হোক। গত ৩১ জানুয়ারি সে আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। চোকসি এখন মুম্বই আদালতের ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করতে চান।
গত বছর জুন মাসে অ্যান্টিগা ও বারবুডার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন চোকসি। আপাতত সেখানেই থাকেন তিনি। গত ৪ জুলাই তিনি বম্বে হাইকোর্টে বিলম্বের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করে তাঁর আবেদন গ্রহণ করার অনুরোধ জানিয়েছেন। আইনানুসারে কোনও নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানাতে গেলে ৩০ দিনের মধ্যে হাইকোর্টে আবেদন করতে হয়।
চোকসির হয়ে আবেদন করেছেন তাঁর আইনজীবী রাহুল আগরওয়াল। তিনি বলেছেন, "অ্যান্টিগায় ব্যাপক ঝঞ্ঝার কারণে কুরিয়র সার্ভিসে সমস্যা হয়, ফলে চোকসির সই করা ওকালতনামা যা ১৮ জুন ফেডএক্স কুরিয়র সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছিল তা তাঁর আইনজীবীর হাতে পৌছয় ২৪ জুন।"
ওকালতনামার মাধ্যমেই কোনও ব্যক্তি আদালতে একজন আইনজীবীকে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে অনুমোদন দেন।
চোকসি ও তাঁর ভাগ্নে নীরব মোদী পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক থেকে লেটার অফ আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের জাল চিঠি দিয়ে ১৫,৬০০ কোটি টাকা প্রতারণা করেন। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে দুজনেই ভারত ছাড়েন। ইডি ছাড়াও এই দুজনের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে সিবিআই এবং সিরিয়াস ফ্রড ইনভেস্টিগেটিং অফিস।
চোকসির বিরুদ্ধে মোট ৬০৯৭.৭৩ কোটি টাকার অপরাধের মামলা চলছে। এর মধ্যে ইডি ২৫৩৪.৭ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে।
চোকসির তরফ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল অ্যান্টিগায় গিয়ে ইডি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করুক। সে প্রস্তাব গত মাসে নাকচ করেছে ইডি। এখন চোকসি বম্বে হাইকোর্টে জানিয়েছেন, যেহেতু তাঁর সে দেশে চিকিৎসা চলছে, ফলে তিনি ভারতে ফিরতে পারবেন না। ভারতের তদন্ত সংস্থার তরফ থেকে বলা হয়েছে তারা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে সঙ্গে রেথে অ্যান্টিগা থেকে ভারতে উড়িয়ে আনতে এবং এ দেশে সমস্ত রকম চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে রাজি।
এর পর বম্বে হাইকোর্ট চোকসিকে গত ১ জুলাইয়ের মধ্যে মেডিক্যাল রিপোর্ট ইডি-র কাছে জমা দিতে বলে এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান জেজে হসপিটালকে বলে ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে তাদের মতামত জানাতে। চোকসি এখনও সে রিপোর্ট জমা দেননি।