দেশে মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনা বাড়ছে। সম্প্রতি হাথরাসকাণ্ডে প্রবলভাবে সমালোচিত বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ভূমিকা। এরমধ্যেই মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ সংক্রান্ত মামলায় পুলিশের আরও পোক্তভাবে গাইডলাইন মেনে চলা ও কড়া পদক্ষেপ করার পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। শনিবার এই মর্মেই রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলোকে নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্র।
অ্যাডভাইজারিতে উল্লেখ, 'মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ক্ষেত্রে যেসব কড়া বিধান রয়েছে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত তার প্রয়োগ করেন- রাজ্য বা কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলো যেন পুলিশ সহ এ সংক্রান্ত সব সংস্থাকে এই মর্মেই নির্দেশ দেয়। চার্জশিট আইন মোতাবেক যথাযত সময় দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ যেন ইনভেসটিগেশন ট্র্যাকিং সিস্টেম ফর সেক্সচুয়াল অফেনসেস প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই মামলাগুলোর তদন্ত করে।'
শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে যে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, নারীদের বিরুদ্ধে যৌনহেনস্থা ও ধর্ষণের ঘটনায় কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই সংক্রান্ত নির্দেশিকা রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে পাঠান হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে তার এফআইআর দায়ের করতে হবে পুলিশকে। প্রাথমিকভাবে যদি ঘটনাটি কোনও থানার এলাকার বাইরে হয়, তাহলেও সেখানে এফআইআর দায়ের করা সম্ভব। ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে দু’মাসের মধ্যে ঘটনার তদন্ত শেষ করতে হবে। দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করতে জাতীয় ডেটাবেসও ব্যবহার করতে পারে পুলিশ।
নির্দেশিকায় কেন্দ্র স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে নির্যাতনের ফলে কোনও মহিলার মৃত্যু হলে তিনি মৃত্যুর আগে যদি পুলিশকে কোনও মৌখিক বয়ানও দিয়ে যান, তাকে অবশ্যই মান্যতা দিতে হবে। সেই বয়ানই ওই নির্যাতিতার লিখিত বয়ান হিসেবে বিবেচিত হবে।
এছাড়া ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের জন্যও নির্দেশিকা দিয়েছে কেন্দ্র। নমুনা সংগ্রহ করা, তা সংরক্ষণ, এক জায়গা থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম বলা হয়েছে। এর জন্য কেন্দ্রের তরফে প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে সেক্সুয়াল অ্যাসল্ট এভিডেন্স কালেকশন কিট দেওয়া হয়েছে। সেই কিটের ব্যবহার করতে হবে তাদের।
মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের তদন্তের ক্ষেত্রে প্রায়ই পুলিশি গাফিলতির বিষয়টি উঠে আসে। কেন্দ্রীয় নির্দেশিকায় উল্লেখ, যদি কোনও মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করা না হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই পুলিশ কর্মী কর্তব্যে অবহেলা করেছেন বলেই তা বিবেচিত হবে। একাধিক ধারায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা যাবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কড়া শাস্তি পেতে হবে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মী বা আধিকারিককে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন