কেরালার ভয়াবহ বন্যার জেরে উত্তর ও উত্তর পূর্ব ভারতের অভিবাসী শ্রমিকদের অনেকেই সে রাজ্য ছেড়েছেন। গত ১০ দিনে কেরালা থেকে উত্তর পূর্বে গেছে দুটি বিশেষ ট্রেন । তবে এখনও এই অভিবাসী শ্রমিকরা সকলে ঘরে ফিরতে পারেননি।
কেরালা সরকার এই অভিবাসী শ্রমিকদের রাজ্যের বিভিন্ন অংশে চলা ত্রাণ শিবিরে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছেন। এবার যেহেতু ত্রাণশিবির থেকে রাজ্যবাসীরা নিজেদের বাসস্থানে ফিরতে শুরু করেছেন, এবং শিবিরগুলিও বন্ধ হতে শুরু করেছে, কিছু অভিবাসী শ্রমিক নিজেদের রাজ্যের দিকে রওনা দিতে শুরু করেছেন।
রাজস্ব দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘‘এর্নাকুলামের আলুভা এলাকার এক ত্রাণ শিবিরে পশ্চিমবঙ্গের ১৫০ অভিবাসী ছিলেন। শিবির বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর, শুক্রবার, তাঁরা নিজেদের রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন। পেরুম্বাভুর এবং কোথামঙ্গলম এলাকায় শিবিরে ছিলেন অভিবাসী শ্রমিকেরা। এঁরা কেরালার যে অংশে বাস করতেন, সেগুলি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্যবসা ও বাড়িঘরের পরিস্থিতি ঠিক হয়ে গেলে, এঁরা ফিরে আসবেন।’’
এর্নাকুলাম জেলায় পেরুম্বাভুর ও সন্নিহিত এলাকায় অভিবাসী শ্রমিকদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। পেরুম্বাভুর মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যান সাথী জয়কৃষ্ণণ জানিয়েছেন, কর্মহীন হয়ে পড়ার দরুনই অভিবাসী শ্রমিকরা রাজ্য ছাড়ছেন। তিনি বলেন, ‘‘নির্মাণকাজ ও ছোটখাটো কাজে যুক্ত শ্রমিকরা এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। বন্যাদুর্গত এলাকায় দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।’’
পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার বাসিন্দা বছর তিরিশেকের সেলিম গায়েন। তিনি জানালেন, আরও ছ জনের সঙ্গে নিজের রাজ্যে ফিরে যাচ্ছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘মালিক কাজ নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে।’’
আরও পড়ুন, বন্যাত্রাণে আরবের টাকা ফেরানোর সিদ্ধান্তের সমালোচনায় সরব প্রকাশ কারাত
আলুভা এলাকা বন্যায় ভেসে যাওয়ার সময়ে তাঁরা একটি নির্মীয়মাণ বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন সেলিম। তিনি বলেন, ‘‘আমরা চারতলায় ছিলাম। আমাদের মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। দু দিন ধরে বৃষ্টির জল খেয়ে ছিলাম আমরা। জল একটু নামলে আমরা ক্যাম্পে যাই।’’ সিনবাদ গায়েন নামে আর একজন অভিবাসী শ্রমিক জানালেন তাঁরা আগেই বাড়ি ফিরতেন, কিন্তু তাঁদের হাতে কোনও টাকা ছিল না। ‘‘গতকাল আমাদের সুপারভাইজর টিকিট কাটার টাকা দিয়েছে’’, জানিয়েছেন তিনি।