রোজগারের আশায় ভিটে মাটি ছেড়ে কয়েক হাজার পথ দূরে গিয়ে ওঁদের বসবাস। কিন্তু, লকডাউনের জেরে কাজ নেই। সঞ্চয়ের যৎসামান্যও শেষ হয়ে গিয়েছে। যা রেশন মিলেছে তাও শেষ। বারে বারে আবদার করেও লাভ হচ্ছে না। ফলে চরম দুর্দশায় দিন কাটছে এ রাজ্যের মালদা থেকে সুদূর রাজস্থানের জয়পুরে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের। অবিলম্বে রেশন চাই, নয়তো বাড়ি ফেরানোর উদ্যোগ নিক প্রশাসন। এই দাবি নিয়েই রাজস্থান প্রশাসেনর দ্বারস্থ হয়েছিলেন বাংলা সহ জয়পুরে আটকে পড়া বিভিন্ন রাজ্যের বহু পরিযায়ী শ্রমিক। কিন্তু, বিক্ষোভকারী পরিযায়ী শ্রমিকদের অভিযোগ, সহায়তা তো দূর, বদলে মিলেছে পুলিশের মার। তবে, এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি খাঁকি উর্দিধারীদের।
জয়পুরের শাস্ত্রী নগরের নাহরী কা নাকা এলাকায় থাকেন মালদার রেজাউল করিম। লকডাউনের জেরে সেখানে আটকে পড়ে চরম সমস্যায় রয়েছেন। তাঁর কথায়, 'গত একমাসের বেশি সময় ধরে আমরা চাল, আটা পাচ্ছি না। যা জমানো ছিল তাও শেষ হয়ে গিয়েছে। বাধ্য হয়ে আমরা তাই আজ পথে নামি। প্রশাসনকে বলতে গিয়েছিলাম পরিযায়ী শ্রমিকদের খাবার দিন, নাহলে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করে দিন। এমনকী প্রয়োজনীয় অনুমতি দিলে আমরা পায়ে হেঁটেও বাড়ি ফিরতে রাজি। কিন্তু, এ সবকিছু পুলিশ শুনতেই রাজি নয়। উল্টে আমাদের বার করে দিতে পুলিশ লাঠি চালিয়েছে।এতে বহু শ্রমিক আহত হয়েছেন।'
আরও পড়ুন- লকডাউন কি পুরোপুরি তোলা হবে? মোদী-মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে সর্তক সব পক্ষ
রেজাউলের প্রতিধ্বনি শোনা গেল মালদা থেকে জয়পুর আসা আরেক পরিযায়ী শ্রমিক মহম্মদ জালালউদ্দীনের মুখেও। তাঁর দাবি, বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সে ছিল না, তবুও পুলিশ তাঁকে মেরেছে। জালালউদ্দীন বলেন, 'সত্যিই আর থাকা যাচ্ছে না। তবে ওই বিক্ষোভে আমি ছিলাম না। ইফতারের জন্য দোকানে গুড় কিনতে গিয়েছিলাম। তখনই পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। তাতে আমিও জখম হই। হাসপাতাল থেকে ব্যান্ডেজ বেঁধে দিয়েছে।'
যদিও, পুলিশ লাঠি চালানোর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। শাস্ত্রী নগর থানার অফিসার সজ্জন সিং কাভিয়া বলেন, 'পুলিশ বিক্ষোভকারী পরিযায়ীদের উপর লাঠি চালায়নি বা মারধর করেনি। শাস্ত্রী নগরে প্রায় ৫০০ পরিযায়ী বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ যায়। পুলিশের গাড়ি দেখেই বিক্ষোভকারীরা ভয়ে পালাতে থাকেন। হুড়োহুড়িতে অনেকে পড়ে গিয়েছেন, অনেকে আবার পুলিশি ব্যারিকেড টপকাতে গিয়ে আহত হযেছেন। তবে, ওঁদের রেশনের দাবি কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।' এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার বা কোনও মামলা রুজু হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন