Advertisment

'চিনা সেনা ভারতীয় ভূমিতে ঢুকে পরেছিল', লিখেও মুছে দিল প্রতিরক্ষামন্ত্রকের ওয়েবসাইট

গত বুধবারই ওই নথি ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছিল। কিন্তু ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই তা ওয়েবসাইট থেকে তুলে নেওয়া হয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

পূর্ব লাদাখে ভারতীয় সীমানায় চিনা সেনা অনুপ্রবেশের নথি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ওয়েবসাইট থেকে উধাও

পূর্ব লাদাখে ভারতীয় সীমানায় চিনা সেনা অনুপ্রবেশের নথি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ওয়েবসাইট থেকে উধাও হয়ে গেল। গত বুধবারই ওই নথি ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছিল। কিন্তু ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই তা ওয়েবসাইট থেকে তুলে নেওয়া হয়। এ দেশের ভূখণ্ডে চিনা সেনা অনুপ্রবেশের সঙ্গেই দুই দেশের সেনার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকার বিষয়ও ওই নথিতে উল্লেখ ছিল। মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে এর আগে (মে-জুন মাসে) নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে লাল-ফৌজের অনুপ্রবেশের কথা বলা হয়নি।

Advertisment

গত জুন মাসে নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত-চিন সেনা সংঘর্ষের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকে সর্বদল বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে চিনা সেনার আগ্রাসন ও অনুপ্রবেশের কথা খারিজ করে ছিলেন মোদী। কিন্তু, ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নথিতে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতের চিনা সেনার ঢুকে পড়ার বিষয়টির উল্লেখ ছিল। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ওই নথি কার্যত খারিজ করে বসেছিল মোদীর বক্তব্য। ওই নথিকে ভিত্তি করেই মোদীকে 'মিথ্যাবাদী' বলে কটাক্ষ করেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। তারপরই মন্ত্রকের ওয়েবসাইট থেকে ওই নথি উধাও হয়ে যায়।

কেন চিনা সেনার অনুপ্রবেশ সংক্রান্ত নথি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে দেওয়া হল তা নিয়ে বৃহস্পতিবার মুখ খুলতে চাননি মন্ত্রকের মুখপাত্র। নথিতে 'নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনা আগ্রাসন' সংক্রান্ত একটি অধ্যায়ে লেখা ছিল, 'চিনা সেনার একতরফা আগ্রাসনে পূর্ব লাদাখ সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে, ওই অঞ্চলের নজরদারি প্রয়োজন এবং পরিস্থিতি পর্যালোচনার ভিত্তিতে পদক্ষেপ হবে।'

এছাড়াও উল্লেখ ছিল, '২০২০ সালের ৫ মে থেকে লাইন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর চিনা আগ্রাসন বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষত গালওয়ান উপত্যকা এলাকায় চিনাদের উপস্থিতি লক্ষ করা গিয়েছে। ১৭-১৮ মে চিনারা বেআইনিভাবে কুংরাং নালা, গোগরা এবং প্যাংগং তাসো অঞ্চলের উত্তর দিকে ঢুকে পড়েছিল।' ওই নথিতে লেখা ছিল, 'পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে কথা হয়েছে। গত জুন মাসে এক কোর কম্যান্ডার চিনের সেনাকর্তাদের সঙ্গে ফ্ল্যাগ মিটিং করেছেন। গত ১৫ জুন দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। তাতে দু’পক্ষেরই কয়েকজন হতাহত হয়েছে।'

গত ১৯ জুন প্রধানমন্ত্রী সর্বদল বৈঠকে বলেছিলেন যে, 'আমাদের দেশের সীমানা অতিক্রম করে না কেউ প্রবেশ করেছে, না কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। আমাদের কোনও পোস্ট কারুর কব্জায় নেই।' এরপরই বিরোধী শিবির থেকে প্রশ্ন তোলা হয় যে, যদি অনুপ্রবেশ বা কোনও ভারতীয় এলাকা চিনাদের দখলে না থাকে তবে সংঘর্ষের প্রয়োজন হল কেন? মোদীর বক্তব্য ও বাস্তব পরিস্থিতির মধ্যে অসামঞ্জস্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে বলা হয়, 'কেউ কেউ প্রধানমন্ত্র্রীর বক্তব্যের ক্ষতিকর ব্যাখ্যা' করার চেষ্টা করছেন। লাল-ফৌজ নিয়ন্ত্রণরেখায় যে কাঠামো নির্মাণের চেষ্টা করছে তা প্রতিহত করাতেই দুই দেশের সেনা সংঘর্ষ হয়। এতে ২০ ভারতীয় সেনাকর্মী প্রাণ হারান।

বৃহস্পতিবার সকালে রাহুল গান্ধী টুইটে বলেন, 'কেন প্রধানমন্ত্রী মিথ্যা বলছেন? প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বা ওয়েবসাইট থেকে নথি সরিয়ে ফেললেই বাস্তব বদলে যাবে না।' কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেন বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীকে বাঁচাতেই কি মন্ত্রকের এি পদক্ষেপ। সত্যিটা কী, তা আমরা জানতে চাই। প্রতিরক্ষামন্ত্রক, নাকি মোদী কে সত্যি বলছেন?'

সিপিআইএম-য়ের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির দাবি, 'নিশ্চিতভাবে প্রধানমন্ত্রী দেশকে বিভ্রান্ত করছেন। মোদী ও তাঁর সরকার কী লুকোবার চেষ্টা করছেন? সরকারের সত্যি জানানো উচিত।' আরজেডির মনোজ কুমার ঝাঁ বলেছেন, '১৯ জুন সর্বদল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর চিনা অনুপ্রবেশ সংক্রান্ত বক্তব্য কি তাহলে মিথ্যা ছিল?'

উল্লেখ্য, ভারত-চিন নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনা প্রশমণে দুই দেশের সেনা ও কূটনৈতিকস্তরে আলোচনা চলছে। গালওয়ান ও পিপি -১৫ থেকে উভয় দেশের সেনা সরলেও গোগরার পিপি ১৭-ও ও প্যাংগং থেকে এখনও লাল-ফৌজ সরেনি। পিঙ্গার ৪-য়ের রিজ লাইনও চিনাদের কব্জায়।

Read in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

india china standoff PM Narendra Modi
Advertisment