বর্ষবরণের রাতে দিল্লির রাজপথে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার তদন্তে ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে সিসিটিভি ফুটেজ, অঞ্জলির বন্ধু নিধির বিবৃতি, অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দিল্লি পুলিশের হাতে উঠে এসেছে নানান চাঞ্চল্যকর তথ্য। পাশাপাশি ফরেনসিক রিপোর্টও হাতে এসেছে দিল্লি পুলিশের। । স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বিষয়টি্র ওপর সরাসরি নজর রাখার কাজ করছে। একই সঙ্গে দিল্লি পুলিশকে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সূত্রের খবর, ঘটনার সময় তিনটি পিসিআর ভ্যান মোতায়েন ছিল, তাদের মধ্যে উপস্থিত পুলিশ কর্মীদেরর অবিলম্বে সাময়িক বরখাস্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে।
পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দিল্লি পুলিশ বলেছে যে ২টি পুলিশ পিকেটে নিযুক্ত জওয়ানরাও তাদের দায়িত্ব ঠিকমত পালন করেননি এবং তাদেরও অবিলম্বে বরখাস্ত করা উচিত। জেলা পুলিশের ইনচার্জ অর্থাৎ ডিসিপিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে ডিসিপিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সেই রাতে শহরের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা সম্পর্কে একটি লিখিত ব্যাখ্যা জমা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । যথাযথ জবাব না পেলে ডিসিপির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ডার্ক স্পট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ঘটনা স্থলের আশপাশের এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও সূত্রের খবর।
এর আগে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দিল্লি পুলিশকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই মামলায় চার্জশিট দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে, দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার ব্যবস্থার পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্যও ব্যবস্থা নিতে বলেছে দিল্লি পুলিশকে। একই সঙ্গে মহিলা ও শিশুদের উপযুক্ত নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মাত্র ৬ মাস আগেও মৃত্যুর মুখ থেকে কোনমতে রক্ষা পান অঞ্জলি। নিহত অঞ্জলির পরিবার জানিয়েছে, ৬ মাস আগেও অঞ্জলি পথ দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। অঞ্জলির বোন এপ্রসঙ্গে জানান, ৬ মাস আগে অঞ্জলির স্কুটিতে একটি গাড়ি পিছন থেকে ধাক্কা মারে, তাতে গুরুতর আহত হন তিনি। তার পরই পথ দুর্ঘটনায় মেয়ের মৃত্যু ভাবাচ্ছে পরিবারকে। বড় ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে নিহত অঞ্জলির পরিবার।
অঞ্জলির পরিবারের দাবি, প্রায় ৬ মাস আগে দিল্লির পাঞ্জাবি বাগ এলাকায় একটি গাড়ি তাকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে, অঞ্জলি সেই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। তার অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিল যে তাকে মাথার অপারেশন করাতে হয়। প্রায় ১৫ দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিল অঞ্জলি। গাড়ির চালক এখনও পলাতক। কেউ কি আগে থেকেই অঞ্জলিকে খুন করতে চেয়েছিল? উঠছে প্রশ্ন।
দিল্লির ঘটনায়, মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজে অনুসারে জানা গেছে ঘটনার সময় অঞ্জলি তার বন্ধু নিধির সঙ্গে ছিলেন।
একই সময়ে, হোটেল কর্মচারী্র দাবি ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় অঞ্জলি হোটেলে এসেছিলেন এবং দুজনেই রুম বুক করেছিলেন। নিধি জানিয়েছিল যে অঞ্জলির বন্ধুরাও এবং তার বয়ফ্রেন্ডও সেদিন ওই হোটেলেই আসেন। হোটেলের কর্মীরা দাবি করেন, অঞ্জলি ও নিধি দুজনেই মদ্যপ ছিলেন এবং গভীর রাতে দুজনের মধ্যে টাকা নিয়ে বচসাও হয়। এর পর দুজনেই স্কুটি নিয়ে চলে যায়।