লিভ-ইন পার্টনার খুনে পুলিশকে বিভ্রান্তের চেষ্টা? অভিযুক্তের বোনের বিস্ফোরক স্বীকারক্তি ঘিরে ইতিমধ্যেই বেড়েছে জল্পনা। এর মাঝেই পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে সরস্বতী বৈদ্যকে দশমে পড়াশুনায় সাহায্য করতেন অভিযুক্ত মনোজ। তিনি তাকে মূলত অঙ্ক শেখাতেন। ফ্ল্যাট থেকে মিলেছে বেশ কিছু নোট। মনোজ চাইতেন তার লিভ-ইন পার্টনার দশম পাস করুক। এদিকে দেরি করে বাড়ি ফেরার কারণে দুজনের মধ্যে হামেশাই ঝগড়া হত বলেই প্রতিবেশিরা পুলিশকে জানিয়েছেন। ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে ঝগড়ার কথা স্বীকার করেন অভিযুক্ত। জেরায় মনোজ জানিয়েছেন, সরস্বতী সবসময়ই চাইতেন মনোজ সকল বিষয়েই তার প্রশংসা করুক।
দেহ ২০ টুকরো করে প্রেসার কুকারে সিদ্ধ করে কুকুরকে খাওয়ানোর ভয়ঙ্কর অভিযোগে ইতিমধ্যেই পুলিশি হেফাজতে অভিযুক্ত, জেরায় লিভ-ইন পার্টনার খুনে পুলিশের হাতে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। এর মাঝেই ধৃত মনোজ সানের বোনের বিস্ফোরক স্বীকারক্তি ঘিরে তুঙ্গে জল্পনা। তবে কী পুলিশকে বিভ্রান্ত করছে অভিযুক্ত?
পুলিশি জেরায় মূল অভিযুক্ত মনোজ সানে পুলিশকে জানিয়েছিলেন, “ও আমার মেয়ের মত ছিল। আমি ওকে সেভাবেই দেখতাম। আমি নিজে একজন HIV আক্রান্ত। সরস্বতীর সঙ্গে আমার কোন শারীরিক সম্পর্ক ছিল না”। মুম্বই পুলিশের এক সিনিয়ার আধিকারিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, “জেরায় ধৃত ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, সরস্বতী বৈদ্য,গত ৩রা জুন আত্মহত্যা করে মারা যান। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হবে এই ভয়ে তিনি দেহটি টুকরো টুকরো করেন”। এমনকী এই ঘটনার পর অভিযুক্ত নিজেকেও শেষ করতে চেয়েছিলেন বলেই জেরায় তিনি পুলিশকে জানান। সানের বয়ান ইতিমধ্যেই রেকর্ড করা হয়েছে। তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এদিকে এই তথ্য সামনে আসার মাত্র কয়েকঘন্টার মধ্যেই ধৃত মনোজ সানের বোনের বিস্ফোরক স্বীকারক্তি ঘিরে ছড়িয়েছে তুমুল চাঞ্চল্য। ‘মনোজ-সরস্বতী লিভ-ইন পার্টনার নয়, স্বামী স্ত্রী’। তিন বোনের বয়ান রেকর্ড করার পর পুলিশ শুক্রবার মনোজ ও সরস্বতীকে স্বামী-স্ত্রী বলে দাবি করেছে। ডিসিপি জয়ন্ত বাজবেলে জানিয়েছেন, তাঁরা একটি মন্দিরে বিয়ে করেছেন। “বয়সের পার্থক্যের কারণে তারা অনেকের থেকেই বিয়ের কথা লুকিয়েছিলেন।” মনোজ সানে এখনও সরস্বতী বৈদ্যকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেননি। পুলিশ জানিয়েছে যে সে একটি গাছ কাটার যন্ত্র কিনেছিল যা দিয়ে সে সরস্বতীর দেহ টুকরো টুকরো করে। হাড়হিম করা ঘটনায় শিউরে উঠলো দেশ। আফতাব শ্রদ্ধা হত্যার স্মৃতি এখনও মানুষের মনে দগদগে তার মাঝেই নারকীয় খুনে কেঁপে উঠলো মুম্বই।
পুলিশ জানিয়েছে মহিলাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে যে মহিলার নাম সরস্বতী বিদ্যা। তিনি তার লিভ-ইন পার্টনার মনোজ সানের সাথে থাকতেন। লিভ ইন পার্টনারের বয়স ৫৬ বছর। গত ৪ জুন এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। দুজনেই আকাশগঙ্গা ভবনের একটি ভাড়া ফ্ল্যাটে ৩ বছর ধরে বসবাস করছিলেন। সন্দেহের ভিত্তিতে ওই মহিলার লিভ-ইন পার্টনার মনোজ সানেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।
মিরা রোড হত্যাকাণ্ডে মৃতদেহ টুকরো টুকরো করে কুকারে রান্না করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি খুনের পর মহিলার দেহ টুকরো টুকরো করে কুকারে রান্না করে কুকুরকে খাওয়ায় বলেই খবর মিলেছে। মীরা রোড এলাকায় সোসাইটির ফ্ল্যাটে ওই মহিলার মৃতদেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মহিলাকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর দেহ টুকরো টুকরো করা হয়েছে বলেই পুলিশের অনুমান। পুলিশ ফ্ল্যাট থেকে মহিলার টুকরো টুকরো দেহ উদ্ধার করেছে। যদিও মনোজ জেরায় পুলিশকে জানিয়েছে, দেহ টুকরো টুকরো করার আগেই আত্মহত্যা করেন সরস্বতী। তথ্য অনুযায়ী, মহিলার বয়স প্রায় ৩২ বছর। তিনি বছর ৫৬-এর এক ব্যক্তির সঙ্গে তিন বছর ধরে লিভ-ইন-এ থাকতেন। গত ৪ জুন ওই মহিলাকে হত্যা করা হয়। তবে হত্যার কারণ স্পষ্ট নয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ গত পরশু রাত ৮টার দিকে মুম্বাই সংলগ্ন মীরা রোডে অবস্থিত গীতা কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির একটি বিল্ডিংয়ের সপ্তম তলার ফ্ল্যাট থেকে কয়েক টুকরোয় এক মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার করে। বাসিন্দাদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পরই ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় পুলিশ। আবাসনের বাসিন্দারা পুলিশকে জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই ফ্ল্যাট থেকে পচা গন্ধে টেকা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে এলাকাবাসীর।এমনকী প্রতিবেশিরা পুলিশকে জানিয়েছেন, বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই মনোজ রাস্তার কুকুরদের খাওয়ানো শুরু করেছিলেন, যা তিনি আগে কখনও করেননি।