সিএএ ও এনআরসি বিরোধী বিক্ষোভের তপ্ত হয়েছে গোটা আসাম সহ উত্তর পূর্ব ভারত। আসামে প্রাণ গিয়েছে বেশ করেয়কজন বিক্ষোভকারীর। বিক্ষোভের আঁচ রুখতে আসামে ইন্টারনেট, মোবাইল পরিষেবা বন্ধ করে দেয় বিজেপির সর্বানন্দ সোনোয়ালের সরকার। কেটে গিয়েছে ৯ দিন। এখন অনেকটাই শান্ত উত্তর পূর্বের এই রাজ্যটি। শেষমেষ ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করল রাজ্য সরকার। তবে, বৃহস্পতিবারের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে উত্তরপ্রদেশ ও কর্নাটকের বিস্তীর্ণ অংশে।
আসামের এডিজি জিপি সিং টুইটে রাজ্যবাসীকে সতর্ক করে জানিয়েছেন, 'আসামে ফের ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা স্বাভাবিক করা হল। তবে, কোনও কিছু লেখা ও ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ফরওয়ার্ডের ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে। শক্তিশালী আসাম গড়ার ক্ষেত্রে আসুন আমরা সবাই প্রচেষ্টা করি।' আসামে শান্তি বজায় রাখতে রাজ্যবাসীর সহায়তার আর্জি জানানো হয়েছে পুলিশের তরফে।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় গতকালই ধুন্ধুমার বেধে যায় দেশের একাধিক জায়গায়। পুলিশকে পাথর ছোড়া, গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। পাল্টা পুলিশও লাঠিচার্জ করে, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। যোগী রাজ্য উত্তরপ্রদেশে গুলিতে নিহত হন এক বিক্ষোভকারী। পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ নিহতের পরিবারের। তবে এবিষয়ে তেনম মুখ খুলছে না প্রশাসন। পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার জুম্মার প্রার্থনা রয়েছে। রাজ্যে আইন-শঙ্খলা বজায় রাখাই তাদের আগ্রাধিকার। স্পষ্ট যে এদিন ফের বিক্ষোভ ও তা থেকে ঝামেলার আশঙ্কা করছে প্রশাসন। ফলে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আগে থেকেই পদক্ষেপ করেছে পুলিশ। আলিগড়, গাজিয়াবাদ, সম্বল, মাউ, আজমগড় জেলায় ইন্টারনেট, মোবাইল, এসএমএস পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। লখনউতে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ এই পরিষেবা। উত্তর প্রদেশজুড়ে জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা।
আরও পড়ুন: সিএএ প্রতিবাদ, দুই বিজেপি শাসিত রাজ্যে নিহত তিন বিক্ষোভকারী
অ্যদিকে মেঙ্গালুরুতে পুলিশেরর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন দু'জন। দিল্লি, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, পটনা, চণ্ডীগড়, আমেদাবাদেও এনআরসি সংশোধিত নাগরিক্ত আইন ঘিরে উত্তেজনা দেখা গিয়েছে। বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবার সকাল থেকেই থমথমে মেঙ্গালুরু। কেরালার ডিজি পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের আধিকারিকদের রাজ্যের উত্তরভাগে অবস্থিত মেঙ্গালুরুর পরিস্থিতির উপর কড়া নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন। দক্ষিণ কন্নড়ে ইন্টারনেট, মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রয়েছে।
রাজধানী দিল্লিতেও বৃহস্পতিবার সিএএ বিরোধী বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়ে। নজিরবিহীনভাবে সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করা হয় ইন্টারনেট, মোবাইল পরিষেবা। এদিনও বিক্ষোভের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। তাই আগেভাগেই যান নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ জানিয়েছে, মথুরা রোড ও কালিন্দিকুঞ্জের রাস্তা বন্ধ রয়েছে। দিল্লিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে ডিএনডি ও অক্ষরধামের রাস্তা ব্যবহার করতে হবে। তবে দিল্লির মেট্রো পরিষেবা সচল রয়েছে, সব স্টেশনের দরজা খোলা রয়েছে।
Read the full story in English