ফের চোখ রাঙাচ্ছে করোনা। ভারতে কোভিড -১৯ সংক্রমণের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে বুধবার তড়িঘড়ি বৈঠক করল প্রশাসন। নেতৃত্বে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরিস্থিতি মেনে জনস্বাস্থ্য প্রস্তুতির পর্যালোচনা করার জন্য এই বৈঠক করা হয়েছে। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ল্যাবের মাধ্যমে নজরদারি বাড়ানো, সমস্ত গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রের অসুস্থতার (এসএআরআই) ক্ষেত্রে পরীক্ষা করা এবং জিনোম সিকোয়েন্সিং বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি কোভিডবিধি মেনে চলা এবং শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়েছেন। নজরদারি জোরদার করার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি বৈঠকে, ইনফ্লুয়েঞ্জা নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ভূমিকারও প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সরকারি ওয়েবসাইট অনুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায় ভারতে ১,১৩৪টি নতুন করোনা ভাইরাসের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। দেশে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭,০২৬। দৈনিক সংক্রমণের হার ১.০৯ শতাংশ। সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার ০.৯৮ শতাংশ। গত ২৪ ঘন্টায় পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫,৩০,৮১৩। ছত্তিশগড়, দিল্লি, গুজরাট এবং মহারাষ্ট্র থেকে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। কেরলে একজনের মৃত্যু হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক এমনটাই জানিয়েছে। এর মধ্যেই কেরল সরকার করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সামান্য বৃদ্ধির কারণে সমস্ত জেলায় সতর্কতা জারি করেছে।
কারণ, মঙ্গলবারই দক্ষিণের এই প্রান্তিক রাজ্যে ১৭২ জন নতুন করোনা আক্রান্ত ধরা পড়েছে। এই ব্যাপারে কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ বলেছেন, এরনাকুলাম এবং তিরুবনন্তপুরম জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তিনি বলেন, 'বর্তমানে কেরলে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১,০২৬। তার মধ্যে ১১১ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ব্যাপারে সমস্ত জেলাকে সতর্ক করা হয়েছে।'
এই পরিস্থিতিতে দেশে গত ২৪ ঘন্টায় ১.০৩ লক্ষের বেশি করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে । সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৯২.০৫ জনের। যার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১,০৩,৮৩১ জনের পরীক্ষা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, বুধবারের বৈঠকে উঠে এসেছে অন্যান্য পরিসংখ্যানও। স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে খবর, দেশে এখনও পর্যন্ত ২২১ কোটি করোনার ডোজ দেওয়া হয়েছে । শুধু তাই নয়। দেশে প্রায় ৪,৪১,৬০,২৭৯ জন করোনা রোগ থেকে সুস্থ হয়েছেন।
আরও পড়ুন- মেহুল চোকসির বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস প্রত্যাহার, এতে কার কতটা লাভ?
স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে খবর, দেশে এইচ৩এন২ সংক্রমণ বাড়ছে। যার উপসর্গ অনেকটাই কোভিড-১৯ এর মত। স্বাস্থ্যকর্তারা মনে করছেন, এইচ৩এন২ ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট ফ্লু সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। চলতি মাসে অমৌসুমি বৃষ্টি এই জ্বরের সংখ্যাবৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এতে প্রাথমিকভাবে শিশু এবং বয়স্করা প্রভাবিত হয়েছে। যার ফলে ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্তারা উদ্বিগ্ন। এইচ৩এন২ সংক্রমণের লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে কাশি, শরীরে ব্যথা, জ্বর এবং গলা ব্যথা। যা করোনার মতই। এ পর্যন্ত এইচ৩এন২ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে নয় জনের মৃত্যু হয়েছে।