রুশ আগ্রাসনে ধ্বস্ত ইউক্রেন। লন্ডভন্ড সেদেশের রাজধানী কিয়েভ। রুশ হামলায় প্রতিদিনই মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসছে। ইতিমধ্যেই নিহত এক ভারতীয় পড়ুয়া। এই অবস্থায় সেদেশে আটকে থাকা ভারতীয়দের নিয়ে চিন্তায় দিল্লি। আগেই রাশিয়া ও ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূতদের সেদেশ থেকে ভারতীয় পড়ুয়াদের নরাপদে ফেরাতে সেফ প্যাসেজ দেওয়ারদাবি করেছিল দিল্লি। এবার, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলে একই দাবি জানালেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। জানা গিয়েছে, খারকিভে আটকে পড়া ভারতীয় পড়ুয়াদের উদ্ধার নিয়ে দুই রাষ্ট্রনেতার কথা হয়েছে।
নয়াদিল্লিতে রুশ রাষ্ট্রদূত বলেছেন যে, রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্ত দিয়ে আটকে পড়া ভারতীয়দের নিরাপদ যাতায়াতের জন্য একটি "মানবিক করিডোরে" করা হচ্ছে। ক্রেমলিন বুধবার রাতে দাবি করেছে যে খারকিভের ভারতীয় ছাত্রদের ইউক্রেনীয়রা জোর করে আটকে রাখছে। রুশ নিরাপত্তা বাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে ইউক্রেন ভারতীয় পড়ুয়াদের "মানব ঢাল" হিসেবে ব্যবহার করছে।
তবে ভারতীয় বিবৃতিতে এ বিষয়ে কোনোও উল্লেখ করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, 'নেতৃত্ব ইউক্রেনের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন, বিশেষ করে খারকিভ শহরের, যেখানে বহু সংখ্যায় ভারতীয় পড়ুয়া আটকে আছে। দুই রাষ্ট্রনেতা সংঘাতপূর্ণ এলাকা থেকে ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছেন।'
ক্রেমলিনের বিবৃতি অনুসারে, 'যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চল থেকে ভারতীয় পড়ুয়াদের সরিয়ে দেশে ফেরাতে প্রেসিডেন্ট পুতিন জোর দিয়েছিলেন এবং সমস্ত প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।' মস্কোর দাবি, 'রাশিয়ানদের পক্ষ থেকে, বিশেষ করে, রাশিয়ার সংক্ষিপ্ততম রুট বরাবর মানবিক করিডোরের মাধ্যমে খারকভ (খারকিভের রাশিয়ান নাম) থেকে ভারতীয় ছাত্রদের জরুরীভিত্তিতে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, ভারতীয় পড়ুয়াদের একাংশকে ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা বাহিনী আটকে রেখেছে, এদের মানব ঢাল হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং প্রতিটি সম্ভাব্য উপায়ে তাদের রাশিয়ান ভূখণ্ডে চলে যেতে বাধা দেওয়াও হচ্ছে। এই ক্ষেত্রে দায়িত্ব সম্পূর্ণরূপে কিয়েভ কর্তৃপক্ষের উপর বর্তায়।'
মস্কোতে এক ব্রিফিংয়ে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকও বলেছে যে, 'আমাদের তথ্য অনুসারে, ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জোরপূর্বক ভারতীয় ছাত্রদের একটি বড় দলকে খারকিভে আটকে রেখেছে, এইসব পড়ুয়া ইউক্রেনীয় অঞ্চল ছেড়ে বেলগোরোডে যেতে চায়। পড়ুয়াদের ইউক্রেন-পোল্যান্ড সীমান্ত দিয়ে ইউক্রেনের ভূখণ্ড ছেড়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ইউক্রেনের তরফে সেই অঞ্চলের মধ্য দিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে যেখানে সক্রিয় শত্রুতা বহাল রয়েছে।'
রাশিয়ার মন্ত্রক বলেছে যে, 'ভারতীয় পড়ুয়াদের সুরক্ষিতভাবে উদ্ধারের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত আছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। আমাদের বিমান বা ভারতের বিমানের মাধ্যমে তাঁদের রাশিয়ার ভূখণ্ড থেকে দেশে ফেরানো হবে। যেমনটা ভারত প্রস্তাব দেবে সেভাবেই তাঁদের ফেরত পাঠানো হবে।'
পাল্টা ইউক্রেনের দাবি, 'রাশিয়ার সামরিক বাহিনী লাগাতার গোলাবর্ষণ এবং পৈশাচিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে। ফলে অন্যদেশের কেউই খারকিভ ছাড়তে পারছেন না।'
এদিকে গতকালও কিয়েভ, খারকিভ ছাড়ার জন্য ভারতীয় পড়ুয়াদের নির্দেশ দিয়েছে ভারতীয় দূতাবাস।
Read in English