রাজ্যসভার পর এবার লোকসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণের ধন্যবাদজ্ঞাপন বক্তৃতায় বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন তিনি প্রথমেই মহিলা সাংসদের ধন্যবাদ জানান। বাজেট বক্তৃতার ওপর আলোচনা এবং রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নেওয়ার জন্য দুই কক্ষের মহিলা সাংসদদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। এদিন লোকসভায় প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের মধ্যেই কৃষি আইন বিলোপের দাবি তুলে ওয়াকআউট করেন কংগ্রেস সাংসদরা। তিনি রাষ্ট্রপতির ভাষণকে সঙ্কল্প শক্তি আখ্যা দিয়ে কৃষি আইন থেকে সংসদ অচল, সব বিষয়ে সরব হয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘কৃষি আইন পাসের পর থেকে ন্যুনতম কৃষি সহায়ক (MSP) মুল্য কিংবা মান্ডি, কোনও কিছুর কাজ আটকায়নি। অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে এই আইন পাস হলেও কিছুকেই প্রভাবিত করেনি। আমাদের প্রবীণ মন্ত্রীরা কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করছেন। যবে থেকে এই আন্দোলন পাঞ্জাবে শুরু হয়েছে, তবে থেকে সরকার সমাধান্সুত্র খুঁজছে। কৃষকদের প্রতি আমাদের সম্মান প্রচুর।‘
এদিন তিনি বিরোধীদের একহাত নিয়েছেন। বাজেট পেশের পর থেকে দফায় দফায় মুলতুবি হয়েছে সংসদের অধিবেশন। সেই প্রসঙ্গে বিরোধীদের কাঠগড়ায় তুলে মোদী বলেন, ‘সংসদ চলতে না দেওয়া বিরোধীদের পরিকল্পিত চক্রান্ত। ওরা সত্যি সহ্য করতে পারছে না। কোনওভাবেই মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে পারছে না।‘
কৃষি আইন নিয়েও এদিন বিরোধীদের সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন মোদী। তিনি খানিকটা কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘অনেকে প্রশ্ন করছেন সবার মত না নিয়ে কেন এই আইন? সবার মত না নিয়েই পণ-বিরোধী আইন আর তিন তালাক বিরোধী আইন লাগু করা হয়েছিল। তখন কেউ প্রশ্ন করেনি। সামাজিক উন্নয়নের প্রয়োজনে এই আইন লাগু করা হয়েছে।‘
তাঁর আরও দাবি, ‘কৃষি ক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তি আর বিনিয়োগ না আনলে সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমাদের গম আর ধান উৎপাদনের বাইরেও অভিনব কিছু ভাবতে হবে।‘কেন্দ্রীয় সরকারের বেসরকারিকরণ নীতির সমালোচনায় সরব বিরোধীরা। এদিন সেই বিরোধী সেই অবস্থানকেও দুষেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘দেশের সার্বিক উন্নয়নে সরকারি সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থার অবদান অনস্বীকার্য। তাই কিছু ভোটের আশায় বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধাচারণ ঠিক নয়। এতে যুব সম্প্রদায়ের কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে। ওরা অপমানিত হতে পারে।‘
লোকসভায় আরও আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনজীবীদের নিশানা করেন। তিনি বলেন, ‘প্রথম প্রথম কৃষক আন্দোলনকে আমি পবিত্র চোখে দেখতাম। কিন্তু যবে থেকে আন্দোলনজীবীরা এই বিক্ষোভের হাইজ্যাক করেছে তবে থেকে অশান্তি শুরু। তাঁদের মধ্যে অনেকে আবার গর্হিত অপরাধে জেল খেটেছেন। আন্দোলনের নামে টোল বুথ অচল করে দেওয়া, টেলিকম টাওয়ার গুঁড়িয়ে দেওয়া। এতা কী ধরনের আন্দোলন?’ এমনকি বিরোধীরা কথায় যেটা বলে, কাজে সেটার প্রতিফলন ঘটায় না। এমন অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।