বিধানসভা ভোটের আগে বাংলার কৃষকদের বঞ্চনার কথা তুলে ধরে মমতা সরকারকে নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। রাজনৈতিক স্বার্থেই পশ্চিমবঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্প চালু করা হয়নি বলে অভিযোগ মোদীর। কৃষক বিদ্রোহের মাঝেই এ দিন ৬ রাজ্যের কৃষকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই মমতা সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি।
এ দিন প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, 'এখন আর বিভ্রান্তির সুযোগ নেই। টাকা সোজা অ্যাকাউন্টে চলে যায়। আজ দেশের সব রাজ্যের সরকার এই যোজনার সঙ্গে জুড়ে গিয়েছেন। শুধু পশ্চিমবঙ্গে ৭০ লক্ষ কৃষক এই যোজনা থেকে বঞ্চিত। বাংলার সরকার রাজনীতির কারণে কৃষকদের সরকারি প্রকল্প থেকে দূরে রেখে দিয়েছে।'
একই সঙ্গে এ দিন বামেদেরও আক্রমণ করেন মোদী। হলেন, 'বামপন্থীরা ৩০ বছরের বেশি সময় সরকারে ছিল, আজ কৃষকরা যখন মমতার রাজনীতির কারণে কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সেই বামেরা কোনও আন্দোলন করছে না।'
কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরোধীতায় দিল্লি সীমানায় চলছে কৃষক বিক্ষোভ। কেন্দ্র-আন্দোলনকারী কৃষক সংগঠনগুলোর মধ্যে আলোচনাতেও মেলেনি সমাধান। তারমধ্যেই কৃষকদের জন্য বড় ঘোষণা ঘোষণা করেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ দেশের ৯ কোটি কৃষকের জন্য ১৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দের ছাড় দিল মোদী সরকার৷ পিএম কিষাণ (প্রধানমন্ত্রী কিশান সম্মান নিধি) প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের অ্যাকাউন্টে এই অর্থ ঢুকবে৷
মোদীর আলাপচারিতার আগে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার। তাঁরও অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্পের বিরোধিতা করছে একমাত্র বাংলা। সেই কারণেই বাংলার কৃষকরা এই টাকা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হলেন।
কিষাণ সেনা-র ব্যানারে কৃষি আইনের সমর্থনে বিজেপি কর্মীরা রাস্তায় নেমেছেন বলেই মনে করছেন আন্দোলনকারী সংগঠনগুলি। মোদীর ভাষণও লোক দেখানো ও চাষিদের মধ্যে বিভাজন তৈরির চেষ্টা বলে তাঁদের ধারণা।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের নজরকাড়া প্রচারে ইতিমধ্যেই উদ্যোগ নিয়েছিল গেরুয়া শিবির। বড়দিনে কৃষকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতা শুনতে কোনও না-কোনও জমায়েতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও দলীয় সাংসদদের। প্রতিটি ব্লকে কৃষক, আমজনতাকে জমা করে বড় স্ক্রিন লাগিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা প্রচারিত হয়।
বিজেপি সূত্রের খবর, প্রায় ১৯ হাজার জমায়েতে মোদীর বক্তব্য পেশ করা হয়। শুধু উত্তরপ্রদেশেই ৩ হাজার জায়গায় জমায়েত হয়। বিজেপি নেতাদের দাবি, এই জমায়েত ও কৃষকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলাপচারিতা থেকেই স্পষ্ট হয়ে গেল, দিল্লির সীমানায় আন্দোলন চললেও দেশের কৃষকেরা আসলে মোদী সরকারের সঙ্গেই রয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন