Advertisment

দুঃসাহসিক ডাকাতির ‘মাস্টারমাইণ্ড’ সুন্দরী তরুণী! পুলিশের পাতা ফাঁদে পা দিয়েই শ্রীঘরে ‘ডাকু হাসিনা'

১০ টাকার ঠান্ডা পুলিশকে সাহায্য করেছিল অপরাধের 'মাস্টারমাইণ্ড'কে ধরতে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Ludhiana heist, Ludhiana heist news, Ludhiana police, Mandeep Kaur, Manjinder Singh, Punjab police, indian express, express premium"

দুঃসাহসিক ডাকাতির ‘মাস্টারমাইণ্ড’ সুন্দরী তরুণী! পুলিশের পাতা ফাঁদে পা দিয়েই শ্রীঘরে ‘ডাকু হাসিনা’

সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে দুঃসাহসিক ডাকাতি। মাত্র ১১ দিনের মধ্যে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে প্রায় ৭ কোটির বেশি নগদ উদ্ধার করেছে পাঞ্জাব পুলিশ। এই ডাকাতির পিছনে মাস্টারমাইণ্ড ছিলেন এক তরুণী। জানা গিয়েছে ওই তরুণীর নাম মনদীপ কৌর, যিনি আবার 'ডাকু হাসিনা' নামেও পরিচিত। পাঞ্জাব পুলিশ ৪ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকা ডাকাতির জন্য ওই তরুণীকে গ্রেফতার করে। ১০ জুন লুধিয়ানায় হয় এই দুঃসাহসিক ডাকাতি। মজার বিষয় হল, ১০ টাকার ঠান্ডা পুলিশকে সাহায্য করেছিল অপরাধের মাস্টারমাইণ্ডকে ধরতে।

Advertisment

পাঞ্জাবের লুধিয়ানায় সাড়ে আট কোটি টাকার ডাকাতির ‘মাস্টারমাইন্ড’ মনদীপ কৌর ওরফে মোনাকে পাঞ্জাব পুলিশ গ্রেফতার করেছে। উত্তরাখণ্ডের চামোলির হেমকুন্ড সাহিব থেকে মোনাকে গ্রেফতার করেছে পাঞ্জাব পুলিশ। সেখানে মোনার সঙ্গে তার স্বামীও ছিলেন। আশ্চর্যের বিষয় হল, কোটি কোটি টাকা ডাকাতির এই মাস্টারমাইণ্ড স্রেফ ১০ টাকার পানীয় খেতে গিয়েই পুলিশের জালে পড়ে।

লুধিয়ানায় ক্যাশ ভ্যান ডাকাতির ঘটনার পর থেকে মোনা পলাতক ছিল। তিনি তার স্বামীর সঙ্গে হেমকুন্ড সাহেবে পৌঁছেছিলেন। এর পর কেদারনাথ ও হরিদ্বার যাওয়ারও পরিকল্পনা ছিল তাঁর। কিন্তু পুলিশ তার বিষয়ে তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে ধররে ফাঁদ পাতে।

পুলিশ কমিশনার মনদীপ সিং সিধু বলেছেন যে খবর পাওয়া গেছে যে মোনা এবং তার স্বামী নেপাল হয়ে বিদেশে পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, কিন্তু লুকআউট নোটিশ জারির কারণে তারা দুজনেই তা করতে পারেনি। আমাদের দল তাদের কাছ থেকে ২১ লক্ষ টাকা নগদ উদ্ধার করেছে। এর সঙ্গে মোনার সহযোগী গৌরব ওরফে গুলশানকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

১০ জুন রাত দেড়টার নাগাদ লুধিয়ানার নিউ রাজগুরু নগর এলাকায় কিছু অস্ত্রধারী একটি ‘ক্যাশ ভ্যান’ চুরি করে নিয়ে যায়। পুলিশ জানায়, ভ্যানে ছিল ৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। এরপর ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত অবস্থায় ক্যাশ ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়। তার কাছ থেকে দুটি পিস্তল ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। জিপিএস ট্র্যাকিং ও সাইবার সেলের সহায়তায় পুলিশ ইতিমধ্যে প্রথমে ৫ জনকে গ্রেফতার করে এবং এখন ডাকাতির মাস্টারমাইণ্ড মোনাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

মনদীপ কৌর ওরফে 'ডাকু হাসিনা' কে?

সাড়ে আট কোটি লুধিয়ানা ডাকাতির পিছনে অভিযুক্ত মনদীপ কৌর, ‘ডাকু হাসিনা’ নামেও পরিচিত। তিনি ১০ জুন নিউ রাজগুরু নগর এলাকার অফিসে সিএমএস সিকিউরিটিজ কোম্পানির পাঁচজন কর্মচারীকে বন্দী করে ক্যাশ ভ্যান লুট করে পালান। এখন পর্যন্ত তদন্তে জানা গেছে, তিনি বড়লোক হতে চেয়েছিলেন। আগে একজন বীমা এজেন্ট এবং একজন আইনজীবীর সহকারী হিসাবে কাজ করেছিলেন মোনা। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাসবিন্দর সিংকে বিয়ে করেন তিনি।

বিনামূল্যে পানীয় পুলিশকে কীভাবে সাহায্য করেছিল?

পাঞ্জাব পুলিশ খবর পেয়েছিল যে মনদীপ কৌর এবং তার স্বামী জাসবিন্দর সিং নেপালে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। তবে তার আগে তাদের হরিদ্বার, কেদারনাথ এবং হেমকুন্ট সাহেব সহ বিভিন্ন মন্দিরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। উত্তরাখণ্ডের শিখ মন্দির পরিদর্শনকারী ভক্তদের বিশাল ভিড়ের মধ্যে তাদের উভয়কে সনাক্ত করা কঠিন ছিল পুলিশের পক্ষে। তাই, পুলিশের তরফে করা হয় এক মাস্টারপ্ল্যান তীর্থযাত্রীদের জন্য বিনামূল্যে পানীয় বিতরণের প্ল্যানিং করে পুলিশ। আর তাতেই বাজিমাৎ।

অভিযুক্ত দম্পতি ধরা পড়ার ভয়ে জন্য তাদের মুখ ঢেকে রেখেছিল, কিন্তু পানীয়তে চুমুক দেওয়ার জন্য তাদের মুখ খুলতে হয়েছিল। এ সময় পুলিশ তাদের শনাক্ত করে। সঙ্গে সঙ্গে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে মোনা এবং তার স্বামী দুজনেই প্রচুর দেনায় ডুবে ছিল যার থেকে অব্যাহতি পেতেই এই ডাকাতির প্ল্যান করে তারা।

লুধিয়ানার অতিরিক্ত ডিসিপি (অপারেশন) সমীর ভার্মা বলেছেন, ‘তারা দুজনেই ভেবেছিলেন যে ডাকাতি করে এক থেকে দুই কোটি টাকা পাবেন। কিন্তু এত বিপূল পরিমাণে নগদ যে পেতে পারেন তা তারা ভাবেন নি’। তিনি আরঅ জানিয়েছেন "অভিযুক্তরা তাদের মোবাইল সঙ্গে রাখেনি। ফলে পুলিশের পক্ষে তা ট্র্যাক করে তদন্ত করা সম্ভব ছিল না। সেই কারণে পুলিশ তদন্তে সিসিটিভি ফুটেজের ওপর বেশি নির্ভর করে”। বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কে লুকিয়ে রাখা হয় ৫০ লক্ষ টাকা। সেই সঙ্গে ওয়াশিং মেশিন সহ আরও নানান জায়গায় ডাকাতির টাকা লুকিয়ে রাখে হয় বলেও জানিয়েছে পুলিশ।  

Robbery
Advertisment