Advertisment

মরিশাস থেকে বেনামে আদানি গ্রুপের শেয়ারে কোটি কোটি বিনিয়োগ, লাইসেন্স বাতিল ভুঁইফোঁড় সংস্থার

হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে আদানি গ্রুপের কথিত অনিয়ম প্রকাশের প্রায় আট মাস আগেই ব্যসায়িক এবং বিনিয়োগ সংক্রান্ত লাইসেন্স বাতিল হয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Firm linked to Adani investors lost licences in Mauritius

মরিশাস থেকে বেনামে আদানি গ্রুপের শেয়ারে কোটি কোটি বিনিয়োগ, লাইসেন্স বাতিল ভুঁইফোঁড় সংস্থার

২০২২ সালের মে মাসে, হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে আদানি গ্রুপের কথিত অনিয়ম প্রকাশের প্রায় আট মাস আগে, মরিশাসের আর্থিক লেনদেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস কমিশন (এফএসসি) ইমার্জিং ইন্ডিয়া ফান্ড ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড (ইআইএফএম) এর ব্যসায়িক এবং বিনিয়োগ সংক্রান্ত লাইসেন্স বাতিল করে।

Advertisment

গত মাসে, সাংবাদিকদের একটি কনসোর্টিয়াম অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিআরপি) –এর নথির ভিত্তিতে, ব্রিটিশ দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমস দাবি করেছে যে অজানা উৎস থেকে আদানিগ্রুপের বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনা হয়েছে। মরিশাস-ভিত্তিক যে তহবিলগুলি থেকে আদানি সংস্থাগুলিতে বিনিয়োগ করা হয়েছিল সেইগুলি এখন তদন্তের অধীনে রয়েছে৷

FSC এনফোর্সমেন্ট কমিটির সিদ্ধান্তে অভিযোগ করা হয়েছে যে EIFM আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত নিয়ম এবং কর্পোরেট সংক্রান্ত আইনি গাইডলাইন লঙ্ঘন করেছে। ১২ মে,২০২২ তারিখে লাইসেন্স প্রত্যাহার বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। FSC বলেছে যে EIFM আর্থিক পরিষেবা আইন, সিকিউরিটিজ অ্যাক্ট, আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিভিন্ন ধারা "লঙ্ঘন" করেছে। লাইসেন্স প্রত্যাহার করার অর্থ হল EIFM-এর সকল প্রকার আর্থিক লেনদেন সম্পুর্ন রূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

FSC-এর মুখপাত্র দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন যে "যখন একটি লাইসেন্স প্রত্যাহার করা হয়, তখন সেটা করা হয় একেবারে স্থায়ী ভাবে। বাতিলকরণের পর…লাইসেন্সধারীদের তাদের ব্যবসা বন্ধ করতে এবং দায় পরিশোধের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

EIFM এর লাইসেন্স প্রত্যাহার করার প্রভাব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, আদানি গ্রুপের একজন মুখপাত্র বলেছেন: "আমরা স্বাধীন ব্যক্তিগত শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়ে মন্তব্য করতে পারি না।" ইআইএফএম,-এর বিষয়ে ঘটনাক্রমে, হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে কোনরকমের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। এফএসসি অনুসারে, ইএম রিসার্জেন্ট ফান্ড ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘বিলুপ্ত’ হয়ে গিয়েছিল।

PMLA এর অধীনে, SEBI রেকর্ডগুলি দেখায় যে, ১৩টি বিদেশী সংস্থার মধ্যে যে দুটি সংস্থার বিরুদ্ধে আদানি গ্রূপের শেয়ার বেআইনিভাবে কানার অভিযোগ রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে তদন্তাধীন, ইমার্জিং ইন্ডিয়া ফোকাস ফান্ড এবং EM রিসার্জেন্ট ফান্ড। EIFM-কে তাদের নিয়ন্ত্রণকারী শেয়ারহোল্ডার হিসাবে ঘোষণা করেছে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, EIFM-কে মরিশাসের মরিশাসের আর্থিক লেনদেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস কমিশন (এফএসসি) যাবতীয় নিয়ম-নীতি লঙ্ঘনের জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছে।

মার্চ-এপ্রিল ২০১৮-এর মধ্যে, সর্বশেষ উপলব্ধ রেকর্ড অনুযায়ী, EIFM-এর আদানি পাওয়ার লিমিটেডে ৩.৯%, আদানি ট্রান্সমিশন লিমিটেডের ৩.৮৬% এবং আদানি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের অন্তত ১.৭৩% শেয়ার ছিল।

যে দুটি সংস্থার বিরুদ্ধে অবৈধ শেয়ার কেনার অভিযোগ সামনে এসেছে সেই দুটি সংস্থার কর্ণধার আদানি গ্রুপের চেয়ারপারসন গৌতম আদানির ভাই বিনোদ আদানির অন্যতম সহযোগী ছিলেন। প্যান্ডোরা পেপারস তদন্তে উঠে আসাএ সংস্থাগুলি প্রকৃতপক্ষে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গেই যুক্ত ছিল৷

গোপনে আদানি গ্রুপের বিপুল পরিমাণ শেয়ার কিনেছেন প্রতিষ্ঠানের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা এমনই এক অভিযোগ ঘিরে ফের শোরগোল পড়ে যায় দেশজুড়ে। ভারতীয় আইন লঙ্ঘন করে তারা গোপনে এসব শেয়ার কিনেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্টের (ওসিসিআরপি) রিপোর্টে বলা হয়েছে, দুই ব্যক্তি মরিশাসের একটি ‘অস্বচ্ছ বিনিয়োগ তহবিল' ব্যবহার করে এসব শেয়ার কিনেছেন। পাবলিক শেয়ার প্রায় ১৪ শতাংশই তারা নিয়ন্ত্রণ করছেন। দুই বিনিয়োগকারীর নাম বলা হয়েছে নাসের আলি শাবান আহলি ও চ্যাং চুং-লিং। বলা হয়েছে, আদানি পরিবারের সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে এবং তারা গ্রুপের কোম্পানিতে ডিরেক্টর ও শেয়ারহোল্ডার হিসেবে কাজ করেছেন।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, দুই বিনিয়োগকারী ২০১৩ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে চারটি আদানি কোম্পানিতে বড় পরিমাণে শেয়ার লেনদেন করেছেন। যদিও আদানি গ্রুপ প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং বলেছে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলি আইন মেনে চলছে।

Adani
Advertisment