Advertisment

মোরবি ব্রিজ বিপর্যয়: সন্তানহারা বহু মা-বাবা, নিখোঁজ শিশুদের ছবি নিয়ে ঘুরছেন অভিভাবকরা

গুজরাটের মোরবিতে ব্রিজ বিপর্যয়ে এমন কত পরিবারের সব শেষ হয়ে গিয়েছে তার হিসাব নেই।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

মোরবির এই সেতু বিপর্যয় দীর্ঘদিন ক্ষতিগ্রস্তদের মনে দাগ কেটে রাখবে।

ঘোরার প্ল্যান হঠাৎ করেই পাল্টায়। মন্দির দর্শনের পরিকল্পনা এমন ভয়াবহ ও মর্মান্তিক হবে ভাবতে পারেনি জাদেজা পরিবার। একসঙ্গে পরিবারের সাতজনের মৃত্যু, তার মধ্যে রয়েছে ৪ শিশুও। এবং ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক মহিলা। একসঙ্গে সলিল সমাধি। গুজরাটের মোরবিতে ব্রিজ বিপর্যয়ে এমন কত পরিবারের সব শেষ হয়ে গিয়েছে তার হিসাব নেই।

Advertisment

রবিবার প্রতাপ সিং জাদেজার পরিবার ওই ঝুলন্ত সেতুতে উঠেছিল। প্রতাপের দুই সন্তান, তাঁর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তাঁরা দেবী মেলদির মন্দিরে গিয়েছিলেন মোরবিতে। ফেরার পথে বাচ্চারা বায়না করে ঝুলন্ত সেতুতে ওঠার। শতাব্দী প্রাচীন ব্রিটিশ জমানার সেই কেবল ব্রিজ মাচ্ছু নদীর উপর গত চার দিন আগেই সংস্কারের পর খোলা হয়। তার আগে সাত মাস সেটা সংস্কারের কাজ হয়।

ঘণ্টা খানেক বাদে সেতু ভেঙে বহু মানুষ জলে পড়ে যান। প্রতাপের পরিবারের সাতজনের সলিল সমাধি হয় মাচ্ছু নদীতে। জাদেজা পরিবারের আত্মীয় কনক সিং জানিয়েছেন, প্রতাপ এবং তাঁর ভাই প্রদুম্ন কাজে থাকার কারণে পরিবারের সঙ্গে আসতে পারেননি। সেটাই তাঁদের বাঁচিয়ে দিল। এখন পরিবারের জীবিত সদস্য একমাত্র তাঁরাই।

আরও পড়ুন মোরবিতে পরিবারেরই ১২ জনের অকালমৃত্যু, সান্ত্বনা দিতে গিয়ে বুক চাপড়ে কাঁদছেন সাংসদ

জামনগরের জালিয়া গ্রামের বাসিন্দা দুই ভাই পরিবার নিয়ে মোরবিতে থাকতেন গত ৬ বছর ধরে। এখন তাঁদের সব শেষ। পরিজনকে হারিয়ে কথা বলার শক্তিটুকু হারিয়ে ফেলেছেন তাঁরা।

Morbi_Acci
গুজরাটের মোরবিতে ব্রিজ বিপর্যয়ে এমন কত পরিবারের সব শেষ হয়ে গিয়েছে তার হিসাব নেই।

মোরবির কবরস্থানের বাইরে ৫২ বছরের তাইয়ুব সুমরা দাঁড়িয়ে রবিবারের বিভীষিকার কথা বলছিলেন। তাঁর ভগ্নিপতি নিজের ৩০ বছরের ছেলে এবং ৭ ও ৫ বছরের নাতি-নাতনিকে হারিয়েছেন। সুমরা বলছেন, "আমার ভগ্নিপতির ছেলে এবং পরিবার ওই ঝুলন্ত সেতুতে গিয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্রিজ ভেঙে পড়ার খবর পেয়ে আমার ভগ্নিপতি পরিবারকে খুঁজতে চলে যান। রাত আটটা নাগাদ দুঃসংবাদ আসে। নাতি-নাতনির দেহ উদ্ধার হয় নদী থেকে। রাত ১১টা নাগাদ আমার ভগ্নিপতির ছেলের দেহ উদ্ধার হয়। একমাত্র বউমা বেঁচে গিয়েছেন। এখনও শোকস্তব্ধ আমার ভগ্নিপতি।"

সাত বছরের নন্দন চৌহান সারা সপ্তাহ ধরে অপেক্ষায় ছিল এই সেতুতে ওঠার জন্য। রবিবার দুর্ঘটনার পর এখন তার ঠিকানা মোরবির বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ। ডান হাতে চিড় ধরেছে, কথা বলার অবস্থায় নেই সে। নন্দনের বাবাও আহত হয়েছেন। তিনি পাশের আরও একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

এরকম বহু মানুষের অবস্থা সঙ্গীন। কেউ আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি, কেউ আবার পরিজনকে হারিয়ে শোকে ডুবেছেন। মোরবির এই সেতু বিপর্যয় দীর্ঘদিন ক্ষতিগ্রস্তদের মনে দাগ কেটে রাখবে।

Morbi Tragedy Gujarat Bridge Collapse Morbi Bridge Collapse
Advertisment