প্রয়াত হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মা হীরাবেন। যার ফলে প্রধানমন্ত্রীর বাংলায় সফরসূচিতে কাটছাঁট হচ্ছে। কথা ছিল শুক্রবার সকাল ১০টায় কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছবে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বিমান। সকাল ১০টা ১৫ নাগাদ বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে RCTC হেলিপ্যাডে পৌঁছবেন প্রধানমন্ত্রী। ১০টা ৩০ RCTC হেলিপ্যাড থেকে গাড়িতে করে রওনা দেবেন হাওড়া স্টেশন। ১১টা নাগাদ ‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেস’-এর উদ্বোধন-সহ একাধিক রেল প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। তার মধ্যেই এল প্রধানমন্ত্রী মায়ের প্রয়াণের দুঃসংবাদ। তার ফলে, গুজরাটে নিজের বাড়িতে জরুরি ভিত্তিতে ফিরতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। তাই কাটছাঁট হচ্ছে সফরসূচি। তবে, প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ‘বন্দে ভারত’ ট্রেনের উদ্বোধন করবেন বলেই এখন পর্যন্ত খবর।
এমনিতে উন্নয়ন যানে চেপেই ২৪-এর লোকসভা বৈতরণী পেরোতে মরিয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হাতে এখনও একবছর কয়েক মাস। তার মধ্যেই বাংলায় ভোটব্যাংক তৈরিতে তিনি তৎপর। সেই তৎপরতা কতটা, শুক্রবার বছর শেষের আগে তার প্রমাণ রাখতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ৭,৮০০ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন করার কথা ছিল এদিন। লোকসভা নির্বাচনে তাঁর পাখির চোখ যে বাংলা, বৃহস্পতিবার গুচ্ছের টুইটে বঙ্গ মনের সন্ধান পাওয়ার চেষ্টা বুঝিয়ে দিয়েছিল সেকথাও।
বিধানসভা ভোটের সময় ‘দিদি ও দিদি’ করে সেই যে রাজ্য থেকে চলে গিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর ব্যস্ত সূচিতে তারপর আর তেমন একটা ঠাঁই পায়নি বাংলা। রাজ্যবাসীর তা নিয়ে যাবতীয় খেদ বর্ষশেষে ঝোলা খুলে বের করা উন্নয়নেই পুষিয়ে দিতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- ‘জানুয়ারিতেই রাজ্য সরকারের চেহারা নগ্ন হবে,’ বোমা ফাটালেন তরুণজ্যোতি
কেন্দ্রীয় প্রশাসনের সঙ্গে হাতে হাত রেখে এই ভোটব্যাংকের চারাগাছে মাটি দিতে গোড়া থেকেই নেমে পড়েছে বিজেপি। দলের তরফে প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচির আদ্যপ্রান্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করা হয়েছে। পাশাপাশি, জানানো হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভও দেখানো হবে উন্নয়নের কান্ডারি হিসেবে মোদীকে বঙ্গ সমাজের কাছে তুলে ধরতে।

বিজেপির প্রকাশিত সূচিতে জানানো হয়েছিল, সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে হাওড়া স্টেশন থেকে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্বোধন করবেন। মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। সূচিতে তাঁর দ্বিতীয় কার্যক্রম বলতে আইএনএস নেতাজি সুভাষ স্ট্যাচু সাইটে। সেখানে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তিতে মাল্যদান করবেন প্রধানমন্ত্রী। এসব হবে বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যক্রমের সূচিতে তৃতীয় স্থানে ছিল ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং নমামি গঙ্গে ও ড্রিংকিং ওয়াটার এবং স্যানিটেশন প্রকল্প উদ্বোধন।

প্রধানমন্ত্রী চতুর্থ কর্মসূচি বলতে আইএনএস নেতাজি সুভাষ কনফারেন্স রুমে জাতীয় গঙ্গা কাউন্সিলের বৈঠকে সম্বোধন। যে বৈঠক উপলক্ষে বাংলা ইতিমধ্যে জাতীয় রাজনীতির চাঁদের হাট। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে তো রেল প্রকল্পের জন্য আসতেই হয়েছে। পাশাপাশি, শুধুমাত্র গঙ্গা কাউন্সিলের বৈঠকের জন্য কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী, জাতীয় গঙ্গা কাউন্সিলের সদস্য অন্যান্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা আসছেন বলে কথা ছিল। পাশাপাশি উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীরাও থাকছেন বৈঠকে। অন্যান্যদের সঙ্গে থাকছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এমনটাই ঠিক ছিল হীরাবেনের প্রয়াণের আগে পর্যন্ত।