রবিবার ফের হিংসায় তেতে উঠলো মণিপুর। রাজধানী ইম্ফলের উপকণ্ঠে একটি অ্যাম্বুলেন্সে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে এক মহিলা ও তার সাত বছরের নাবালক সন্তানের। পাশাপাশি আরও একজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। জানা গিয়েছে সাত বছর বয়সী ছেলে, তার মা এবং তাদের এক নিকট আত্মীয়কে জীবিত পুড়িয়ে হত্যা করেছে মেইতি সম্প্রদায়ের লোকজন। নিহতরা হলেন টনসিং হ্যাংসিং (৭), তার মা মীনা হ্যাংসিং (৪৫) এবং তাদের আত্মীয় লিডিয়া লোরেম্বাম (৩৭)।
রবিবারের ঘটনা এবং সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে ডিজিপি রাজীব সিং, এডিজি (আইন শৃঙ্খলা) এল কাইলুন এবং মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সাড়া মেলেনি। অসম রাইফেলসের এক সিনিয়ার আধিকারিক জানিয়েছেন, “বেশ কিছু কুকি পরিবার আমাদের ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের ক্যাম্প লক্ষ করে গুলি ছোঁড়া হয়। রবিবার, এই ধরনের একটি হামলায় শিশুসহ তিনজন আহত হয়েছেন,” ।
৩ মে থেকে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে জাতিগত হিংসার ঘটনায় ১০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ইম্ফল পশ্চিমের ল্যামফেল থানার অধীনে এক গ্রামে। ঘটনা প্রসঙ্গে একজন সিনিয়র পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘রবিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ গাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আমরা গাড়ির ভেতর থেকে কিছু হাড়গোড় উদ্ধার করেছি। ঘটনায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
দিন কয়েক আগেই মণিপুর সফরে গিয়ে ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রবিবার (৪ জুন), মণিপুরের সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন গুয়াহাটি হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি অজয় লাম্বা, অবসরপ্রাপ্ত আইএএস আধিকারিক হিমাংশু শেখর দাস এবং অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস আধিকারিক অলোক প্রভাকর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারত সরকার কমিশন অফ ইনকোয়ারি অ্যাক্ট, ১৯৫২-এর অধীনে এই তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। কমিশন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তার রিপোর্ট পেশ করবে ।
গত ৩রা মে থেকে পার্বত্য রাজ্যের একাধিক জেলাতে হিংসার ঘটনাত কমপক্ষে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আহতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা একটি বিবৃতি অনুসারে, হিংসার ঘটনায় ৩৭,৪৫০ জন ঘরছাড়া হয়েছেন এবং রাজ্যজুড়ে ২৭২ টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। করছেন। রাজ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সেনা ও আসাম রাইফেলসের প্রায় ১০ হাজার কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।