বাবা চাষী। আর ১৮ বছরের ছেলে বিজয় মাকওয়ানা এবার জয়েন্ট এন্ট্রান্স এডভান্সড পরীক্ষায় উত্তীর্ন হলেন। এসসি ক্যাটাগরিতে বিজয়ের সর্বভারতীয় ক্রমতালিকা ১৮৪৯। আহমেদাবাদের নভি আকল এলাকায় একজন প্রান্তিক চাষীর কাজ করে ভরণপোষণ চালান বিজয়ের পিতা। এদিন জয়েন্ট এন্ট্রান্স এ দুরন্ত সাফল্যের পর তিনি জানালেন আইআইটি খড়্গপুর অথবা রৌরকে থেকে কম্পিউটার অথবা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনরিয়ারিং নিয়ে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে চান। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানালেন, "বিটেক উত্তীর্ন হওয়ার পর মাস্টার্স করতে চাই। তারপর পরিবারের ভরণপোষণ চালানোর জন্য নতুন চাকরির সন্ধান করব।"
বিজয়ের বাবার বার্ষিক উপার্জন ৫০ হাজার টাকারও কম। প্রতিদিনের খরচ চালাতেই হিমশিম দশা তাঁদের। এর আগে বিজয়ের দাদা গুজরাট সরকারের স্কলারশিপ প্রোগ্রামের সহায়তায় আহমেদাবাদের ইন্দাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম টেক উত্তীর্ন হয়েছেন।
বিজয়ের বাবা বলছিলেন, "পরিবারের তিন সন্তানের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করা মোটেও সহজ নয়। তবে দারিদ্র্যের এই শৃঙ্খল ভেঙে ফেলার জন্য সবথেকে ভাল উপায় হল শিক্ষা দান। ওরা আইআইটিতে সুযোগ পেয়ে আমার স্বপ্ন পূরণ করেছে।"
প্রাক নার্সারি সময় থেকেই বিজয়ের শিক্ষার খরচের দায়িত্ব সামলেছে আহমেদাবাদের সংস্থা ভিসামো কিডস ফাউন্ডেশন। নিজের প্রস্তুতি নিয়ে জানাতে গিয়ে বিজয় বলছিলেন, "প্রতিদিনের পড়াশুনার পাশাপাশি কোচিং ইনস্টিটিউটের ক্লাস আমাকে সাহায্য করেছে। কোর্স মেটারিয়াল, অনলাইন মক টেস্ট আমাকে জয়েন্ট এন্ট্রান্স এ সুযোগ করে দিয়েছে।"
জেইই মেন এবং রাজ্য বোর্ডের পরীক্ষায় বিজয়ের পারফরম্যান্স একদমই সন্তোষজনক হয়নি। বিজয় বলছিলেন, দুই ধরনের পরীক্ষার জন্য ভারসাম্য রাখতে পারছিলেন না তিনি। সেই কারণেই ফলাফল খারাপ হয়। বিজয় নিজে ক্রিকেট খেলা দেখতে পছন্দ করেন। প্রিয় ক্রিকেটার মহেন্দ্র সিং ধোনি। ধোনিকে আদর্শ করেই এগিয়ে চলেছেন। "ধোনি ধৈর্য্য এবং কঠিন সময়ে পারফর্ম করার বিরল গুন আমাকে অনুপ্রাণিত করে। যখন জেইই মেন পরীক্ষায় ব্যর্থ হই, তখন ধৈর্য্য হারাইনি। আরো কঠিন পরিশ্রম করে জেইই এডভান্সড এর জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি।" এমনটা জানিয়ে বিজয় আরো বললেন, বড় হয়ে দরিদ্রদের শিক্ষার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করতে চান।
Read the full article in ENGLISH
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন