প্রেমিকাকে চুলের মুটি ধরে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ মহারাষ্ট্রের আমলাপুত্রের বিরুদ্ধে। তারপর শরীরে উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। গুরুতর জখম প্রেমিকা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনার পর অবিযুক্ত আমলাপুত্রের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন প্রিয়া। তবে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চাপে মামলা প্রত্যাহারের বাধ্য হয়েছিলেন বলে অভিযোগ। তরুণীর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের পরই পুলিশ সক্রিয় হয়েছে। এখন ডিসিপি পদমর্যাদার অফিসারের নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (এসআইটি) মহারাষ্ট্র রাজ্য সড়ক উন্নয়ন কর্পোরেশনের (এমএসআরডিসি) এমডি অনিলকুমার গায়কওয়াড়ের ছেলে অশ্বজিৎ গায়কওয়াডের বিষয়টি তদন্ত করবে।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে প্রিয়া জানিয়েছেন, “আমি অশ্বজিৎ-এর সঙ্গে সম্পর্কে ছিলাম। আমি জানতাম না যে তিনি বিবাহিত”। বছর ২৬-এর বয়সী প্রিয়া সিং যাকে ১১ ডিসেম্বর থানের একটি হোটেলের কাছে তার প্রেমিক অশ্বজিৎ প্রথমে ধাক্কা দিয়ে ফেলে তার শরীরের ওপর দিয়ে গাড়ির চালিয়ে তাকে খুন করতে চেয়েছিলেন। অভিযুক্ত অশ্বজিৎ গায়কওয়াড়, অনিল গায়কওয়াদের ছেলে। অনিল মহারাষ্ট্র রাজ্য সড়ক উন্নয়ন কর্পোরেশনের সচিব।
গায়কওয়াড়ের এক্স (পূর্বে টুইটার) বায়ো অনুসারে, তিনি থানে ডিভিশনের ভারতীয় জনতা পার্টি যুব মোর্চা (বিজেওয়াইএম) এর সভাপতিও। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর কাছে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রিয়া আরও বলেন, "যখন আমি জানতে পারি (যে তিনি বিবাহিত), তিনি আমাকে বলেছিলেন যে তারা (তার স্ত্রী এবং তিনি) আর একসঙ্গে নেই, তারা আলাদা থাকেন। তিনি বলেছিলেন যে তিনি আমাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। আমি তার সঙ্গে অনেকদিন সম্পর্কে ছিলাম।"
সেই রাতের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে প্রিয়া বলেন, "সেই রাতে যখন আমি তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম, তখন তার স্ত্রী'ও তার সঙ্গে ছিল। আমি যখন সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম তখন আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম, হঠাৎ করেই ও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছিল। আমাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল,"। নিজের আঘাতের কথা বলতে গিয়ে প্রিয়া বলেন, "আমার ডান পায়ের তিনটি হাড় ভেঙে গিয়েছে, তাতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। আমার বাম কাঁধ থেকে নিতম্ব পর্যন্ত গভীর আঘাত রয়েছে। আমি আমার শরীরকে নড়াচড়া করতে পারছি না।"
"চার দিন আগে আমি এফআইআর করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। আজ যখন আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলাম, আজ পুলিশ নিজেই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে"। নির্যাতিতার আইনজীবী দর্শনা পাওয়ার বলেন, "আমি সকালে প্রিয়ার সঙ্গে দেখা করেছিলাম সে স্থিতিশীল হলেও আঘাতগুলি বেশ গুরুতর। আঘাতের কারণে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারা যুক্ত করা উচিত ছিল, যা করা হয়নি।"
প্রিয়া সিং নামের ওই মহিলা তার ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে ঘটনাটি পোস্ট করেছেন এবং বলেছেন "আমার বয়ফ্রেন্ড আমাকে চড় মেরেছিল, আমাকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিল, আমি তাকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করি সে আমার হাত কামড়ে ধরে, আমাকে মারধর করে, আমার চুল টেনে ধরে এবং তার বন্ধু আমাকে মাটিতে ঠেলে দেয়,"। তিনি যোগ করেছেন যে তিনি তার ফোন এবং তার ব্যাগ পেতে তার গাড়ির কাছে ছুটে গিয়েছিলেন এবং তখনই অশ্বজিৎ তার ড্রাইভারকে গাড়ি চালাতে বলেছিল"। তবে অশ্বজিৎ প্রিয়ার সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বলে সূত্রের খবর। তিনি পুরো ঘটনাটিকে "অর্থ আদায়ের চেষ্টা" বলেও অভিহিত করেছেন। পাশাপাশি অশ্বজিৎ-এর পরিবারের দাবি তরুণী মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন এবং অশ্বজিৎকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টাও করেন।