ফেব্রুয়ারির পর মহারাষ্ট্রে করোনা সংক্রমণে রেকর্ড। একদিন আগেই রাজ্যে আক্রান্ত ১৩৫৭ জন। এর মধ্যে শুধু মুম্বইতে আক্রান্ত ৮৮৯। এবার সেই সংখ্যাও ছাড়িয়ে গেল নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা। রবিবার স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুসারে মুম্বইয়ে নতুন করে করোনা পজিটিভ হয়েছেন ৯৬১ জন। গত পরশুর তুলনায় প্রায় ৮ শতাংশ বেশি।
মুম্বই সহ মহারাষ্ট্রে করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে। তবে এই মুহূর্তে রাজ্য সরকারের তরফে সকলের জন্য মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে না। এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ টোপে।
তিনি স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করেছেন যে রাজ্য সরকার এই মুহূর্তে রাজ্য মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে তিনি সাধারণ লোকেদের কাছে ভিড় জায়গায় মাস্ক ব্যবহার করার জন্য আবেদন করেছেন। মুম্বই, থানে, পালঘর, পুনে এবং রায়গড়ের মতো জেলাগুলিতে করোনার বাড়বাড়ন্ত নজরে এসেছে।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে প্রশাসন করোনার পরিসংখ্যার ওপর কড়া নজর রেখে চলেছে। এদিকে জুন জুলাইয়ে ভারতে করোনার চতুর্থ ঢেউ আছড়ে পড়ার কথা বলেছেন বিজ্ঞানীরা। তার মাঝেই বাড়তে থাকা সংক্রমণ রীতিমত ভয় ধরাচ্ছে।
এই সপ্তাহের শুরুতেই মাস্ক রাজ্যে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক বলে মিডিয়া রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। সে প্রসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ” বিষয়টি তেমন নয়। রাজ্যে করোনা সংক্রমণ মাথাচাড়া দেওয়ায় মানুষের কাছে প্রশাসনের তরফে আবেদন ভিড় জায়গায় মাস্ক পরে চলুন। পাশাপাশি কোভিড বিধি মেনে চলুন। যে কোন মূল্য আমাদের করোনা সংক্রমণকে রুখতে হবে”।
করোনা কাঁপুনি ধরাচ্ছে বানিজ্যনগরীতে। রোজই বেড়ে চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। পুনে, থানে, রায়গড় এবং পালঘর সহ মুম্বাই এবং শহরতলির ছ’টি জেলার মধ্যে সাপ্তাহিক কোভিড পজিটিভিটি হার এবং সক্রিয় রোগীর সংখ্যা রেকর্ড হারে বেড়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব এই নির্দেশে রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য সচিবকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চিঠিও দিয়েছেন। স্বভাবতই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। শহরে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার ৮৮০।
আরও পড়ুন: কী আছে কেদারনাথে, যার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ভক্তরা?
রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব ডঃ প্রদীপ ব্যাস রাজ্য জুড়ে করোনা পরীক্ষা বাড়ানোর ব্যাপারে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে সামগ্রিক ভাবে করোনার সংখ্যা বাড়লেও হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম, যা কিছুটা হলেও রাজ্য প্রশাসনকে সস্তিতে রেখেছে।
এব্যাপারে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের মতই, আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা সেভাবে বাড়বে না। তা সত্ত্বেও কোভিড কেয়ার সেন্টারগুলিকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে ৪ হাজার ৭৬৮টি শয্যার মধ্যে মাত্র ১৪টি বেডে এই মুহুর্তে রোগী ভর্তি রয়েছেন। একইভাবে, আইসিইউতে ১,৫৪৪টি শয্যার মধ্যে মাত্র ৩৪ টিতে রোগী ভর্তি রয়েছেন। রবিবার ৯৬১ জন আক্রান্তের মধ্যে ৪ জন রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।