কেরালায় মহিলাদের হিজাব পরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হতেই মুসলিম শিক্ষা দলের প্রধানের দিকে ধেয়ে এলো প্রাণনাশের হুমকি। ছাত্রীদের হিজাব পরার ক্ষেত্রে কেরালায় যে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল, তার বিরোধিতা করেছিল কেরালার সুন্নী মুসলিম সংগঠন 'সমস্থা কেরালা জামিয়াতুল উলেমা'। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কেরালা পুলিশের এক মুখপাত্র জানান, কেরালার এক মুসলিম শিক্ষা সংগঠনের প্রধানকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মহিলাদের হিজাব পরা রুখতে তাঁর যে লড়াই, সেখানেই উঠে আসছে বিরোধের সুর।
কেরালার মুসলিম এডুকেশনাল সোসাইটির (এমইএস) প্রধান পি এ ফজল গফুর পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ইদানিং একটি অপরিচিত নম্বর থেকে তার কাছে ফোন আসছে। যেখানে হুমকির সুরে বলা হচ্ছে, অবিলম্বে তাঁর এই 'হিজাবের উপর নিষেধাজ্ঞা'র নির্দেশ তুলে না নিলে ভয়ানক পরিণতি নেমে আসবে গফুরের জীবনে। পুলিশের মুখপাত্র সংবাদ সংস্থাকে আরও জানান, আরও বিভিন্ন ধরণের হুমকি এবং প্রাণনাশের কথাও বলা হচ্ছে ফোনে।
আরও পড়ুন: "দরগা গেলেই কেউ মুসলমান হয়ে যায় না"
এর আগে ছাত্রীদের হিজাব পরার ক্ষেত্রে কেরালায় যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন গফুর, তার বিরোধিতা করেছিল কেরালার সুন্নী মুসলিম সংগঠন 'সমস্থা কেরালা জামিয়াতুল উলেমা'।
শুক্রবার একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয় যেখানে বলা হয়, ছাত্রীরা স্কুল-কলেজে হিজাব পরে ক্লাস করতে পারবে না। গফুর জানান, ১৭ এপ্রিল শ্রীলঙ্কায় বিস্ফোরণের পর এই বিজ্ঞপ্তিটি ইস্যু করা হয়েছিল, তবে এর সঙ্গে শ্রীলঙ্কায় ঘটে যাওয়া ঘটনাটির কোনও সম্পর্ক নেই। গফুর আরও বলেন, হিজাব পরা ইসলামের কোনও ধর্মীয় আচার নয়। বিদেশ থেকে এই "নতুন সংস্কৃতি" আনা হয়েছে, এর সঙ্গে ধর্মের কোনও যোগাযোগ নেই। বর্তমানে এই সংস্কৃতি কেরালাতেও প্রভাব বিস্তার করেছে।
এই সোসাইটি একটি সাম্প্রদায়িক সংগঠন যা কেরালার মুসলমানদের মধ্যে সংস্কারবাদী ঐতিহ্য বজায় রাখতে গঠিত হয়। সোসাইটির কাজকর্ম বর্তমানে কেরালার মসজিদ ও মাদ্রাসা নিয়ন্ত্রণকারী সুন্নি গোষ্ঠীগুলির উপর বিপরীত প্রভাব ফেলেছে, এবং সেখান থেকেই বিরোধের সূত্রপাত। সম্ভবত, বিদেশ থেকে এই সংস্কৃতির আগমন বলেই তা মেনে নিতে পারেনি মুসলিম শিক্ষা সংগঠন এবং তা প্রত্যাখ্যানের সুর তুলেছিল। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের প্রতিক্রিয়া যে এতটা কঠোর হতে পারে সেটি বোধহয় আশাতীত ছিল গফুরের কাছে।
Read the full story in English