প্রায় চার দশক ধরে মুসলিম পরিবারের সঙ্গে বসবাস করছেন বছর বিথানাসেরি রাজন। কেরালার মালাপ্পুরম জেলার একটি মুসলিম পরিবারে হিন্দু হিসেবে থাকতেন তিনি। সব কিছুই ঠিক ঠাক চলছিল। হঠাৎ করেই ছন্দপতন। মঙ্গলবার, ৬২ বছর বয়সে মৃত্যু হয় রাজনের। হিন্দু রীতি অনুসারে রাজনের শেষ বিদায় জানাতে নিজেদের 'বিশ্বাসকে' একপাশে রেখেছিলেন এই মুসমিল পরিবার।
রাজ্যের মুসলিম-অধ্যুষিত জেলায় এই ধর্মীয় সম্প্রীতির গল্প নজর কেড়েছে সকলের। মুসলিম পরিবারের অন্যতম সদস্য আলিমন বলেছেন, "আমি রাজনকে হিন্দু রীতি মেনে দাহ করার জন্য আমার বিশ্বাসকে এক মুহুর্তের জন্য সরিয়ে রেখেছিলাম,"।
পালাক্কাদের বাসিন্দা রাজন অল্প বয়সেই তার বাবা-মাকে হারিয়েছিলেন। প্রায় চার দশক আগে, যখন কেভি মুহম্মদ, সমাজকর্মী এবং মালাপ্পুরমের স্থানীয় কংগ্রেস রাজনীতিবিদের চোখে পড়ে রাস্তায় ভবঘুরের মত ঘুরে বেড়াচ্ছেন রাজন। সেই থেকে এই মুসলিম পরিবারই হয় রাজনের স্থায়ী ঠিকানা। ধীরে ধীরে রাজন পরিবারের সদস্য হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন: < সনিয়া থেকে দেবগৌড়া, বিতর্ক এড়াতে রামমন্দির উদ্বোধনের আমন্ত্রিতদের তালিকাতেও বিরাট চমক! >
আলিমন বলেন, “যখন আমার বাবা মারা যান, লোকেরা আমাকে রাজনকে কোনো হোমে দিয়ে দিতে বলেছিল। কিন্তু আমি তা করিনি। ও আমাদের কাছে পরিবারের একজন। আমার বাবা ওকে বাড়ি নিয়ে আসেন। বাবার সেই ইচ্ছা আমি রাখার চেষ্টা করেছি মাত্র"। রাজনও মুসলিম পরিবারে বেড়ে ওঠেন, এবং পরিবারের সঙ্গে একাত্ম হয়ে ওঠেন। যখনই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, আলিমনের পরিবারের সদস্যরা তার পাশে দাঁড়ান। তার স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ায়, স্থানীয়রা আবার পরিবারকে তাকে একটি ত্রাণ শিবিরে রেখে যাওয়ার পরামর্শ দেয়, কিন্তু তারা তাতে কর্ণপাত করেনি।
মঙ্গলবার, মৃত্যুর পর আলিমন বলেন, "আমরা তার আত্মার শান্তির জন্য জন্য হিন্দু রীতি অনুসারে সমস্ত আচার-অনুষ্ঠান করব
পাশাপাশি তিনি বলেন, "আমরা মুসলিম হিসেবে থাকতাম, আর রাজন হিন্দু হিসেবে আমাদের মধ্যে, আমাদের পরিবারে, এক ছাদের নিচে থাকর। আমরা যখন মসজিদে যেতাম তিনি স্থানীয় মন্দিরে প্রার্থনা করতেন"।