জন্মদিনের পার্টিতে হুল্লোড়ের পর মহিলা বন্ধুর সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল। তখনও জানত না কী দুর্ভোগ অপেক্ষা করছে তার জন্য। পরেরদিনই বিতর্কিত লাভ জিহাদ আইনে মামলা রুজু হল বিজনৌরের বছর ষোলোর কিশোরের বিরুদ্ধে। সেইসঙ্গে এসসি-এসটি ও পকসো আইনেও মামলা দায়ের হয়েছে। যার সঙ্গে বাড়ি ফিরে ফ্যাঁসাদে পড়ল কিশোর, সেই ১৪ বছরের নাবালিকা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছে, "আমি বিচারককে বলেছি, আবারও বলব। আমি আমার বন্ধুর সঙ্গে হেঁটে বাড়ি ফিরেছিলাম, সেটাই সবার সমস্যা। আমাদের ভিডিও বানিয়ে এখন সেটাকে লাভ জিহাদ বলছে। আমি কোনও অন্যায় করিনি, আমি স্বেচ্ছায় বন্ধুর সঙ্গে ফিরেছি।"
ঠিক কী হয়েছিল? জানা গিয়েছে, গত ১৪ ডিসেম্বর রাত সাড়ে দশটা নাগাদ এক দলিত নাবালিকা তার পুরনো সহপাঠীর সঙ্গে এক বন্ধু জন্মদিনের অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফিরছিল। সেই কিশোর এক মুসলিম। বাড়ি ফেরার সময় একদল যুবক তাদের তাড়া করে। তারপর লাঠি দিয়ে কিশোরকে ব্যাপক মারধর করে এবং তাদের ধরে থানায় নিয়ে যায়। কিশোরীর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের হয়। বয়ানে তিনি বলেন, মেয়েকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল অভিযুক্ত কিশোর। বিয়ে করে ধর্মান্তরিত করার উদ্দেশ্য ছিল বলেও অভিযোগ করেন।
আরও পড়ুন রামমন্দির নির্মাণে বিরাট বাধার সম্মুখীন স্থাপত্য বিশেষজ্ঞরা, কেন জানেন?
কিন্তু পরে মেয়েটির বাবা অভিযোগ করার কথা অস্বীকার বলেন, পুলিশ জোর করে বয়ান নিয়েছে। তাঁর মেয়ের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস আছে। সে কোনও অন্যায় করেনি। কেন তাঁর মেয়েকে রাজনীতির মধ্যে টেনে আনা হচ্ছে বুঝতে পারছেন না তিনি। তাঁর প্রশ্ন, একটি ছেলের সঙ্গে একটি মেয়ে হাঁটলে সেটা কি অন্যায়?
বর্তমানে ওই কিশোরকে জেলে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের দাবি, সে ১৮ বছরের সাবালক। কিশোরীর বাবার অভিযোগেই মামলা রুজু হয়েছে। বর্তমানে জুভেনাইল হোমে পাঠানো হয়েছে অভিযুক্ত কিশোরকে। গ্রামের প্রধানের বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছেন কিশোরীর বাবা। এদিকে, মেয়েটির বাড়ি থেকে কয়েক কিমি দূরে একটি এক কামরার ঘরে বাস করে কিশোরের পরিবার। মা ও চার ভাইবোন রয়েছে বাড়িতে। কিশোরের মা জানিয়েছেন, "পুলিশ মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই।"
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন