'ধর্মের নামে বিভাজনের' তরজা শুরু হয়েছিল নাগরিকপঞ্জি বিল থেকেই। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে সেই তরজাই জারি রইল। যদিও রাজ্যসভায় এই বিল পাসের সময় মুসলিমদের বরাভয় দেওয়ার চেষ্টাই করে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রি অমিত শাহ। তিনি বলেন, "এই বিল ভারতের মুসলিমদের কোনও ক্ষতি করবে না। এমনকী এই বিলের মাধ্যমে মুসলিমদের থেকে নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেওয়াও হবে না।" বুধবার রাজ্যসভায় বিরোধী কংগ্রেসকেও একহাত নেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, “এয়ার স্ট্রাইক, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, ৩৭০ ধারা অবলুপ্তি এবং ক্যাব-এর মতো বিষয়গুলি নিয়ে পাকিস্তানের নেতাদের সুরেই কথা বলছেন কংগ্রেস নেতারা।" প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার ভারতের লোকসভায় সদ্য পাশ হওয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের নিন্দা করে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, “নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র বানানোর ছক”।
আরও পড়ুন: আসামের পরিস্থিতি অতি উদ্বেগজনক, মানুষ বিভ্রান্ত, মানলেন বিজেপি সাংসদেরা
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বা ক্যাবের পক্ষে যুক্তি দিয়ে শাহ বলেন, "এই বিলের সাহায্যে পড়শি দেশ থেকে আসা সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। আমি চাই না কোনও মুসলিম ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ুক। ভারতে অবস্থিত মুসলিমদের কোনও ক্ষতি হবে না। পড়শি দেশগুলি থেকে নিপীড়িত সংখ্যালঘু শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের সমস্যা কী হতে পারে তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। ভারতীয় মুসলমানরা এই দেশের নাগরিক এবং তাই থাকবেন। মুসলমানদের ভয় বা উদ্বেগের কোনও কারণ নেই।"
প্রসঙ্গত, আট ঘন্টার দীর্ঘ বিতর্ক শেষে ১২৫ টি পক্ষে এবং ৯৯টি বিপক্ষের ভোট নিয়েই রাজ্যসভায় বুধবার পাস হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। যদিও এই বিলে কিছু সংশোধন চেয়ে বিলটি সিলেক্ট কমিটির কাছে পাঠানোর সুপারিশ করে বিরোধীরা। যদিও ভোটাভুটিতে সে প্রস্তাবও নাকচ হয়। ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্যকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে এই বিলটিতে এবং এই বিল সংবিধানে উল্লেখিত মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী, এমন অভিযোগই আনা হয় বিরোধীদের তরফে।
আরও পড়ুন: ক্যাব প্রতিবাদ: বনধের ক্ষীণ প্রভাব বরাক উপত্যকায়, গ্রেফতার প্রায় ৪০০
সংসদের উচ্চ এবং নিম্ম উভয়কক্ষে বিল পাসের সময় অনুপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে বিল পাসের পরই টুইট করে মোদী বলেন, ‘‘দেশ ও দেশবাসীর ভাবাবেগ ও ভ্রাতৃত্ববোধের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন আজ। রাজ্যসভায় সিএবি-২০১৯ পাশ হওয়ায় আমি খুশি। বিলের পক্ষে যাঁরা ভোট দিয়েছেন তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। যাঁরা বহু বছর ধরে ধর্মীয় অত্যাচারের শিকার, তাঁদের স্বস্তি দেবে এই বিল।’’ পাশাপাশি রাজ্যসভায় ক্যাব পাসের সাতাত্তর মিনিটের বক্তৃতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের গলায় ছিল মোদীর প্রশংসা। ইতিহাসের প্রসঙ্গ তুলে কীভাবে বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদী এই বিল নিয়ে কাজ করেছে তা নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যাও দেন বিজেপির রাজ্যসভাপতি শাহ।
Read the full story in English