মুজফ্ফরনগরে ২০১৩ সালের হিংসার ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্তের রহস্যমৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। হিংসার ঘটনায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ জনকে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল রামদাস ওরফে কালাকে। পরবর্তী সময়ে ৪২ বছর বয়সী কালাকে জামিন দেয় আদালত। শনিবার বিকেলে কুটবা গ্রামে নিজের ঘর থেকেই কালার দেহ উদ্ধার করা হয়। কালার দেহে গুলির ক্ষতচিহ্ন মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
ইতিমধ্যেই এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঠিক কী কারণে কালার মৃত্যু হল, তা নিয়ে ধন্দ বাড়ছে। বদলা নিতেই কি কালাকে খুন করা হল? এ নিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, কালার ভাই অভিযোগ করেছেন যে, কয়েকজন বন্দুকধারী কালার ঘরে ঢুকে তাঁকে গুলি করেছে। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে হিংসার ঘটনায় যেসব এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছিল, তার মধ্যে কুটবা গ্রাম অন্যতম।
আরও পড়ুন, টাটা ম্যানেজার হত্যা: সিঙ্গাপুর পালানোর আগেই ধৃত প্রাক্তন কর্মী
কালার রহস্যমৃত্যুর তদন্তে নেমে পালদা গ্রামের কাছে একটি পুনর্বাসন শিবিরে হানা দেয় পুলিশ। ৫ বছর আগে হিংসার ঘটনার পর কুটবা এলাকা ছেড়ে ওই শিবিরে আশ্রয় নেন মুসলিমরা। ওই শিবিরে হানা দিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের মোবাইল ফোন খতিয়ে দেখে পুলিশ। কালাকে হত্যার সময় শিবিরের বাসিন্দাদের মোবাইলের লোকেশন কী ছিল তা জানতেই তদন্তকারীরা হানা দেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। এদিকে, কালার মৃত্যুর পর নিরাপত্তার খাতিরে কুটবা এলাকায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কালার মৃত্যুর ঘটনা প্রসঙ্গে তাঁর ভাই দাবি করেছেন যে, কয়েকজন বন্দুকধারী বাইকে করে এসে কালার ঘরে ঢুকে গুলি চালায়। সেসময় কালার দুই ছেলে ও এক মেয়ে দোতলাতে ছিল। সেসময় তাঁর স্ত্রী ঘরে ছিলেন না। কালার পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন যে, প্রতিবেশীদের অনেকেই বন্দুকধারীরা পালাতে দেখেছেন।
যদিও কালার মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে ২০১৩ সালের হিংসার ঘটনার কোনও যোগ নেই বলেই জোর দিয়েছেন মুজফ্ফরনগরের পুলিশ সুপার সুধীর কুমার সিং। কালার দেহের আশপাশে কোনও অস্ত্র মেলেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে। হিংসার ঘটনার পর থেকে কুটবা এলাকায় আর কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছেন কুটবা প্রধান অশোক।
এ ঘটনা প্রসঙ্গে শাহপুর থানার ভারপ্রাপ্ত প্রধান মহেন্দ্র ত্যাগী জানিয়েছেন, ‘‘৩০২ ধারায় এফআইআর দায়ের করেছেন কালার ভাই। এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।’’ কালার ভাই আরও জানিয়েছেন যে, কালার জামিন মেলায় অনেকেই রেগে গিয়েছিলেন। এর আগেও কালার উপর হামলা চালানো হয় বলে দাবি করেছেন তাঁর ভাই। যদিও শাহপুর থানার স্টেশন হাউস অফিসার কুশল পাল একথা অস্বীকার করেছেন।
Read the full story in English