Advertisment

নলবনে উৎখাত, সমবায় সমিতির সদস্যদের আমরণ অনশন চারদিনে

এক সময়ে ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম ও তাঁর অনুগামীদের এলাকায় আধিপত্য ছিল। সম্প্রতি আরাবুল কোণঠাসা হতেই ওই সমবায়ে প্রভাব বিস্তার করতে ময়দানে নামেন ক্যানিং পূর্ব বিধানসভার বিধায়ক সওকত মোল্লার অনুগামীরা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

নলবনে অনশন (ফোটো- ফিরোজ আহমেদ)

ইকো পার্ক-নিকো পার্কের পাশাপাশি কলকাতার উপকণ্ঠে অবস্থিত ভাঙড়ের নলবনের বৃহৎ জলরাশি ও প্রকৃতির কোলে নলবনের অপরূপ সৌন্দর্য প্রকৃতিপ্রেমিদের নজর কেড়েছে। চলচ্চিত্র জগতের নামজাদা কলাকুশলীরা ওই নলবনে শুটিংও করেছেন। সেই নলবন থেকে শ্রমিকদের উৎখাত সহ তাঁদের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে শ্রমিকরা আমরণ অনশন শুরু করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, স্থানীয়  তৃণমূল নেতারা নলবনের সম্পত্তি লুঠ করছেন এবং শ্রমিকদের পারিশ্রমিক দিচ্ছেন না। এর প্রতিবাদ করলে উৎখাত করে দেওয়া হচ্ছে। এর প্রতিবাদে আমরণ অনশনে বসেছেন ভাঙড়ের ১নং নলবন সমবায় সমিতি লিমিটেডের সদস্যরা। মঙ্গলবার থেকে বামনঘাটা বাজারের কাছে মঞ্চ বেঁধে অনশন শুরু করেছেন তাঁরা। অনশনকারীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মহিলাও রয়েছেন।

Advertisment

তাঁদের  অভিযোগ, সরকারি সমবায় কমিটি জোর করে ভেঙে দিয়ে শাসক দলের নেতা নান্টু কুমার মন্ডল ও রাকেশ রায়চৌধুরীরা নলবনের সম্পত্তি লুটপাঠ করছেন। অবিলম্বে এসব বন্ধ করতে হবে, এবং বহিরাগতদের অত্যাচার, হুুমকি ও প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে বলে দাবি তুলেছেন তাঁরা।

লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ এবং ভাঙড় ১ ব্লকের মৎস্য আধিকারিক বিক্ষোভ তুলে নেওয়ার কথা বললেও শ্রমিকরা সে কথায় কর্ণপাত করেন নি। তাঁরা দাবি আদায়ে চার দিনের মাথায়ও অনশন আন্দোলনে অনড়।

publive-image অনশনকারীদের মধ্যে রয়েছেন মহিলারাও (ফোটো- ফিরোজ আহমেদ)

জানা গিয়েছে, ২০০১ সালে ভাঙড় ১ ব্লকের তাড়দহ অঞ্চলের ১ নম্বর নলবনের প্রায় ২০০ বিঘা সরকারি খাস জমিতে মেছোভেড়ি  গড়ে ওঠে। বাম আমলে ভাঙড়ের বিভিন্ন অঞ্চলের গরিব মানুষকে নিয়ে ওই সমিতি তৈরি করা হয়েছিল। এক সময়ে ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম ও তাঁর অনুগামীদের এলাকায় আধিপত্য ছিল। সম্প্রতি আরাবুল কোণঠাসা হতেই ওই সমবায়ে প্রভাব বিস্তার করতে ময়দানে নামেন ক্যানিং পূর্ব বিধানসভার বিধায়ক সওকত মোল্লার অনুগামীরা। অনশনকারীদের অভিযোগ, ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লার অনুগামী রাকেশ রায় চৌধুরী, নান্টু মণ্ডলরা সমবায়ের দখল নিতে উঠে পড়ে লেগেছে।

এ বিষয়ে নলবন মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি গোলাপ হালদার বলেন, ‘‘গত চল্লিশ বছর ধরে পঞ্চাশজনের একটা গ্রুপ নিয়ে আমরা নলবনে মাছ চাষ করছিলাম। এই আমাদের জীবিকা। গত চার বছর ধরে আমাদের একটি সরকারি কমিটিও আছে। কিন্তু মাস ছয়েক আগে সেই কমিটি ভেঙে দিয়ে তাড়দহ অঞ্চলের দুই তৃণমূল নেতা ছড়ি ঘোরাচ্ছেন। তাঁরা লোকবল দেখিয়ে ভয় ভীতি প্রদর্শন করে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ, আম,ডাব বিক্রি করছেন। টেলি সিরিয়ালের শুটিং, পিকনিক থেকে যে টাকা আসছে সেটাও তাঁরা নিয়ে যাচ্ছে। নিজেরা নলবনে কব্জা করে নিয়েছেন, আমাদের আর ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।’’

অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল নেতা রাকেশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘যারা অনশনের নাটক করছে তারা কেউ সমিতির সদস্য নয়।চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক হিসাবে ওখানে কাজ করে।ওরা বেআইনি ভাবে প্রতিবাদ করছে।’‘ এ বিষয়ে এলাকার বিধায়ক সওকত মোল্লা বলেন, ‘‘আমার বিধানসভা এলাকার মধ্যে কোনও অনৈতিক কাজ মানব না। তবে ওই মৎস্যজীবীদের কোনও সমস্যা থাকলে আমাকে জানাতে পারতেন। আমি পাশে থেকে সমাধান করতাম।“

ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, নলবনের বৃহৎ জলরাশিকে কেন্দ্র করে প্রকৃতি পার্ক তৈরি করা হবে। এর ফলে ওই এলাকায় প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

Bhangar Fishermen
Advertisment