একমাসের প্যারোলে আজ, বৃহস্পতিবার, ভেলোর সেন্ট্রাল জেল থেকে মুক্তি পেল রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত নলিনী শ্রীহরণ। এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত সাতজনের একজন নলিনী, আরেকজন তার স্বামী মুরুগান। ভারতে সর্বাধিক সময় ধরে জেলবন্দি মহিলা কয়েদী নলিনী তার ২৭ বছরের কারাজীবনে এই প্রথম সাধারণ প্যারোলে মুক্তি পেল।
চলতি মাসের গোড়ার দিকে মাদ্রাস হাইকোর্টে নলিনীর প্যারোলের আবেদন মঞ্জুর হয়ে যায়। তার মেয়ের বিয়েতে উপস্থিত থাকতে চেয়ে প্যারোলের আবেদন করেছিল নলিনী। তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাই থেকে ১৪০ কিমি দূরে ভেলোর শহরেই থাকবে নলিনী। শহরের সাতুভাচারি এলাকায় বিয়ের জন্য একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছে তার পরিবার। এখানেই মেয়ে হরিদ্রা শ্রীহরণ, মা পদ্মাবতী, বোন কল্যাণী এবং ভাই ভাগ্যনাথনের সঙ্গে একমাস কাটাবে নলিনী। থাকবেন অন্যান্য পরিজনও।
চেন্নাইয়ের রয়াপেট্টায় তার নিজের বাড়িতে ফেরত যাওয়ার অনুমতি নেই নলিনীর।
১৯৯১ সালে রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয় নলিনী। টাডা (TADA) কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টেও মৃত্যুদণ্ড হয় তার। পরে ২০০০ সালে তামিলনাড়ু সরকার মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে নলিনীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়।
আরও পড়ুন: ২৭ বছর পর প্রথমবার সাধারণ প্যারোলে মুক্তি পাচ্ছেন রাজীব হত্যার আসামি
২০১৬ সালে তার বাবার মৃত্যুর পর জরুরি ভিত্তিতে ১২ ঘন্টার প্যারোলে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি পায় নলিনী। এবার প্রথমবারের মতো সে পেল সাধারণ প্যারোল।
আদালতে নলিনীর প্রার্থনা ছিল, যেহেতু সে এবং তার স্বামী মুরুগান তাদের মেয়ের প্রতিপালন এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনও অবদান রাখতে পারেনি, অন্তত তার বিয়ের ব্যবস্থাটুকু করার অনুমতি যেন তাদের দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, গ্রেফতারের সময় সন্তানসম্ভবা নলিনী কারাগারেই হরিদ্রার জন্ম দেয়।
দুই বিচারপতি এম এম সুন্দরেশ এবং এম নির্মল কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ নলিনীর প্যারোলের আবেদন মঞ্জুর করেছে এই শর্তে, যে সে কোনও রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে দেখা করবে না, সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেবে না, অথবা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করবে না।
প্রসঙ্গত, মেয়ের বিয়ের প্রস্তুতির জন্য ছয় মাসের ছুটির জন্য আবেদন করেছিল নলিনী। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে সশরীরে আদালতে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। নলিনীর যুক্তি, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত যে কোনও কয়েদী প্রতি দু-বছরে একবার ৩০ দিনের ছুটি পেতে পারে। কিন্তু গত ২৭ বছরে সে একবারও এমন কোনও ছুটি নেয়নি। সেই বিষয়টি বিবেচনা করে মেয়ের বিয়ের জন্য তাকে ছয় মাসের ছুটি দেওয়া হোক। এবছরের ২২ মার্চ নলিনীর মাও কারা কর্তৃপক্ষের কাছে একই আবেদন করেছিলেন। তাঁর আর্জি নামঞ্জুর হওয়ায় তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।