Advertisment

দ্বিতীয় মোদী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের সংক্ষিপ্ত পরিচয়

দ্বিতীয় মোদী সরকারের মন্ত্রীরা শপথ নিয়েছেন। নতুন পুরনো মিলিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন মন্ত্রীদের অতীত থেকে বর্তমানের খতিয়ান দেখে নিন এক নজরে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Modi Swaring in

মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের সম্প্রচার চলছে রাজ্য বিজেপির দফতরে

পঞ্চদশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ৬০০০ অতিথির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী, সোনিয়া গান্ধী ও বিমস্টেকভুক্ত দেশের নেতারা। ছিলেন বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, কর্পোরেট কর্তা এবং সিনেমা জগতের মানুষজন।

Advertisment

মোদী সরকারের দ্বিতীয় দফায় প্রধান মন্ত্রী ও অন্যান্য় মন্ত্রীদের সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

publive-image দ্বিতীয় মোদী সরকারের শপথগ্রহণ

নরেন্দ্র মোদী

বিজেপি ও আরএসএস সদস্য নরেন্দ্র মোদী বারাণসী কেন্দ্র থেকে জিতে সংসদে এসেছেন। পূর্ণ শক্তি নিয়ে পর পর দুবার ক্ষমতায় এলেন তিনি। অকংগ্রেসি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এটা একটা রেকর্ড। অটলবিহারী বাজপেয়ীর পর তিনি দ্বিতীয় অকংগ্রেসি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাঁচ বছর পূর্ণ করছে।

গুজরাটি পরিবারের সন্তান ৬৮ বছরের মোদীকে দীর্ঘ পথ যাত্রা করতে হয়েছে এখানে পৌঁছনোর জন্য। ১৯৬৭ সালে ভাডনগর থেকে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। নির্বাচন কমিশনে দেওয়া তাঁর হলফনামা অনুসারে ১৯৮৩ সালে গুজরাট বিশ্ববিদ্য়ালয় থেকে এম এ পাশ করেন এবং তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক।

২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত মোদী ছিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সময়কালে গুজরাটে আর্থিক উন্নতি হয়েছে যেমন, তেমনই ২০০২ সালের গোধরা দাঙ্গার জন্য তাঁর প্রশাসনকে দায়ী করা হয়ে থাকে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য, দারিদ্র্য এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে তাঁর সরকার উল্লেখযোগ্য কিছু না করতে পারার জন্য সমালোচনাও হয়েছে।

২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি বিপুল জয় পায়। তাঁর প্রথম দফার প্রধানমন্ত্রিত্ব স্বাস্থ্য বিষয়ক উচ্চমানের প্রতার ও আমলাতন্ত্রের ক্ষমতাবৃদ্ধির জন্য প্রশংসিত হয়েছে। আবার নোটবন্দি এবং তাড়াহুড়ো করে জিএসটি লাগুর জন্য সমালোচিতও হয়েছেন তিনি। এবারের লোকসভা ভোটে জাতীয়তাবাদকে ইস্যু করেছিলেন তিনি, এবং সে পথে বিজেপি ২০১৪ সালের চেয়েও বেশি ভালভাবে জিতেছে।

অমিত শাহ

publive-image শপথ নিচ্ছেন অমিত শাহ

মুম্বইয়ের ধনী ব্য়বসায়ী পরিবারের সন্তান অমিত শাহ আরএসএসে যোগ দেন ১৪ বছর বয়সে। নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয় ১৯৮২ সালে এবং তখনই তিনি আরএসএসের ছাত্র সংগঠন, এবিভিপির সম্পাদক হন। ১৯৮৬ সালে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন এবং তখন থেকেই তাঁর উত্থানের শুরু। ৯৫ সালে গুজরাটের সরখেজ বিধানসভা থেকে তিনি প্রথমবার বিধায়ক নির্বাচিত হন। একই কেন্দ্র থেকে ১৯৯৮ এবং ২০০২ সালে নির্বাচিত হন তিনি। মোদীর মুখ্যমন্ত্রিত্বের সময়ে সে রাজ্যে স্বরাষ্ট্র, পঞ্চায়েতি রাজ সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মন্ত্রীও হন অমিত সাহ।

২০১০ সালে সোহরাবুদ্দিন শেখ, তাঁর স্ত্রী কৌসের বাই এবং তাঁর সহযোগী তুলসীরাম প্রজাপতির বিচারবহির্ভূত হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অভিযুক্ত হন। পরে সিবিআই অমিত শাহকে ক্লিন চিট দেয়।

রাজনাথ সিং

publive-image রাজনাথ সিংয়ের শপথ

১৯৬৯ সালে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের হাত ধরে রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরু হয় রাজনাথ সিংয়ের। জয়প্রকাশ নারায়ণের ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি ১৯৭০ সালে ইন্দিরা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যোগ দেন এবং জরুরি অবস্থার সময়ে গ্রেফতারও হন।

প্রথমবার তিনি বিধায়ক নির্বাচিত হন ১৯৭৭ সালে মির্জাপুর থেকে। উত্তর প্রদেশে ১৯৯১ সালে প্রথম বিজেপি সরকারের তিনি ছিলেন প্রথম শিক্ষামন্ত্রী। এসময়েই নকল বিরোধী আইন লাগু করে তিনি বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। দীর্ঘদিন ধরে উত্তর প্রদেশের রাজনীতিতে যুক্ত থাকলেও সংসদে তাঁর প্রবেশ ১৯৯৪ সালে, রাজ্যসভার টিকিট পেয়ে। ১৯৯৯ সালে তিনি সড়ক যোগাযোগ মন্ত্রকের দায়িত্ব পান।

২০০৪ সালে লোকসভা ভোটে বিজেপির ব্যাপক পরাজয়ের পর রাজনাথ হিন্দুত্ব আদর্শে দলকে পুনর্গঠনের কাজে নামেন এবং অযোধ্যায় রাম মন্দির তৈরির ব্যাপারে কোনও আপোস না করার কথা ঘোষণা করেন। ২০০৫ সালে তিনি বিজেপির জাতীয় সভাপতি হন। ২০০৯ সাল থেকে সে পদে ছিলেন তিনি। ২০১৩ সালে ফের তিনি পার্টি প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন।

২০১৪ সালে তিনি লখনউ আসন থেকে জেতেন এবং মোদী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্ব পান।

নিতিন গড়করি

publive-image নিতিন গড়করির শপথ

আরএসএস ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত গড়করি ছাত্রাবস্থাতেই এবিভিপির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন। ১৯৮৯ সালে তিনি মহারাষ্ট্র বিধান পরিষদের সদস্য হন। ১৯৯৫ সালে তিনি মহারাষ্ট্রের পিডব্লুডির মন্ত্রী হন এবং তাঁর সময়েই তৈরি হয় মুম্বই-পুণা এক্সপ্রেস হাইওয়ে।

২০০৯ সালে গড়করি সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে বিজেপি জাতীয় সভাপতি নির্বাচিত হন। বাজপেয়ী সরকারের আমলে তাঁকে জাতীয় গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়। সে কমিটির সুপারিশের উপর ভিত্তি করেই বর্তমানে বহু আলোচিত প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা শুরু হয়েছিল। ২০১৩ সালে নিতিনি বিজেপি সভাপতির পদ ছাড়েন এবং ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে জয় লাভ করেন। বিগত মোদী সরকারের আমলে তিনি জাহাজ মন্ত্রক ও সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী হন। পরে তাঁর হাতে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয় জলসম্পদ, নদী উন্নয়ন মন্ত্রকের।

নির্মলা সীতারমণ

publive-image নির্মলা সীতারমণের শপথ

তামিলনাড়ুর তিরুচিরাপল্লির নির্মলা সীতারমণ ২০০৬ সালে বিজেপিতে যোগ দেন প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সুপারিশে। জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে সুষমার যোগাযোগ হয়েছিল। ২০১০ সালে নির্মলা বিজেপির মুখপাত্র মনোনীত হন।

২০১৪ সালে তাঁকে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়। তিন বছর পর, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে মনোহর পারিক্করের হাত থেকে প্রতিরক্ষামন্ত্রকের দায়িত্ব নেন তিনি।

rajnath singh amit shah PM Narendra Modi
Advertisment