শনিবার ঐতিহাসিক কর্তারপুর করিডোরের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারতের পাঞ্জাবের ডেরা বাবা নানক সৌধের সঙ্গে আন্দাজ চার কিমি দূরে পাকিস্তানের পাঞ্জাবের নারওয়াল জেলার কর্তারপুর সাহিবের সংযোগ স্থাপন করছে এই করিডোর। শনিবার ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের জন্য কর্তারপুর যাত্রার সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকেই মোদী বলেন, "পবিত্র বৈন নদীর তীরে অবস্থিত এই গুরুদ্বারের একটা আলাদা মাহাত্ম্য রয়েছে। এই করিডোর তৈরির পিছনে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেককে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি।"
Advertisment
একইসঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকেও ভারতীয়দের ভাবাবেগ বোঝার জন্য, এবং মোদী সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করার জন্য ধন্যবাদ জানান মোদী।
He thanked Pakistan Prime Minister Imran Khan for understanding Indian sentiments and cooperating with Modi-government in this project.
Punjab: Prime Minister Narendra Modi arrives at Dera Baba Nanak; meets Former Chief Minister of Punjab, Parkash Singh Badal #Kartarpurpic.twitter.com/0XaoJi8oTq
প্রসঙ্গত, ১২ নভেম্বর গুরু নানকের ৫৫০ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে খোলা হলো কর্তারপুর করিডোর। প্রথমে অমৃতসর বিমানবন্দরে নেমে সুলতানপুর লোধিতে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখান থেকে ডেরা বাবা নানকে পৌঁছে পাঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিং বাদলের সঙ্গেও দেখা করেন মোদী। শিরোমনি গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটির তরফে মোদীকে সাম্মানিক পোশাক 'শিরোপা' দিয়ে ভূষিত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, "এই করিডর এবং চেক পোস্ট দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার ভক্ত যাতায়াত করতে পারবেন। গুরু নানক প্রদত্ত শিক্ষাও বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হচ্ছে। যাতে পরবর্তী প্রজন্মও সমৃদ্ধ হতে পারে।"
এমনকি, গুরু নানকের বাণী প্রচারে সহায়তার জন্য ইউনেস্কোকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্যদিকে, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ করার পর সেই এলাকা শিখদের জন্য ক্রমশই বসবাসোপযোগী হয়ে উঠেছে, সে কথাও এদিন জানান নমো। মোদী বলেন, "৩৭০ ধারা বাতিল করার পর জম্মু ও কাশ্মীরের শিখ পরিবারগুলি সেখানে তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। এমনকী নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলও সাহায্য করবে তাঁদেরকে।"
এদিন ডেরা বাবা নানকে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের সঙ্গে লঙ্গরখানায় দুপুরের আহারও সারেন মোদী।
অন্যদিকে, শনিবারই অযোধ্যা মামলার রায় ঘোষণার সময়োপযোগীতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি। তাঁর বক্তব্য, আজকের মতো আনন্দের দিনে এই রায় ঘোষণায় যে "সংবেদনশীলতার অভাব" দেখা গিয়েছে, তাতে তিনি "অত্যন্ত দুঃখিত"। প্রসঙ্গত, শনিবার সর্বসম্মতিক্রমে অযোধ্যার বিতর্কিত ভূমিতে রাম মন্দির নির্মাণের সপক্ষে রায় দেয় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট, এবং কেন্দ্রকে নির্দেশ দেয়, যেন সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে অযোধ্যাতেই একটি মসজিদ নির্মাণের জন্য ৫ একর জমি প্রদান করা হয়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অবশ্য কোনও বিতর্কে না গিয়ে গুরু নানকের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে শিখ সম্প্রদায়কে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, কর্তারপুর করিডোর খুলে দিয়ে পাকিস্তান প্রমাণ করেছে, আঞ্চলিক শান্তি রক্ষা করতে তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।