প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সংসদীয় উপদেষ্টা কমিটি থেকে প্রজ্ঞা সিং ঠাকুরকে সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব এল তাঁর দল থেকেই। বিজেপি কার্যকরী সভাপতি জেপি নাড্ডা বৃহস্পতিবার এ প্রস্তাব দিয়েছেন। মহাত্মা গান্ধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসেকে দেশভক্ত বলে অভিহিত করেছিলেন প্রজ্ঞা। তার জেরেই তাঁকে কমিটি থেকে সরিয়ে দেবার এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বুধবার লোকসভায় ডিএমকে সদস্য এ রাজা এসপিজি সংশোধনী বিল সংক্রান্ত বিতর্কে অংশগ্রহণ করেন। তিনি মহাত্মা গান্ধীকে হত্যা করার পর গডসের বিবৃতির কথা বলতে চাইলে তাঁকে বাধা দিয়ে প্রজ্ঞা ঠাকুর গডসেকে দেশভক্ত বলেন।
প্রজ্ঞা ঠাকুরের মন্তব্যের সমালোচনা করে জেপি নাড্ডা বলেছেন, দল এ ধরনের বিবৃতি সমর্থন করে না। সেশন চলাকালীন বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রজ্ঞা ঠাকুরের অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞাও জারি করেন তিনি।
একই লাইনে হেঁটেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও। তিনি বলেন, "গডসেকে দেশপ্রেমী বলার দর্শনকে বিজেপি সমর্থন করে না। লোকসভায় তিনি বলেন, যদি কেউ গডসেকে দেশভক্ত বলে, তাহলে দল তার নিন্দা করবে। মহাত্মা গান্ধী আমাদের সকলের আদর্শ, তিনি আমাদের আলোকরেখা ছিলেন এবং থাকবেন।"
কংগ্রেস প্রজ্ঞা ঠাকুরের মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক চাইলেও অধ্যক্ষ ওম বিড়লা তার অনুমতি দেননি। এর পর কংগ্রেস সদস্যরা কক্ষ ত্যাগ করেন।
গত সপ্তাহে লোকসভা সদস্য প্রজ্ঞা ঠাকুরকে ২১ সদস্যের সংসদীয় উপদেষ্টা কমিটির সদস্য মনোনীত করা হয়। ওই কমিটির শীর্ষে রয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং।
বুধবার বিরোধী সদস্যরা প্রজ্ঞা ঠাকুরের ক্ষমাপ্রার্থনা দাবি করেন। বিজেপি সদস্যদের প্রজ্ঞাকে নিজের আসনে বসানোর জন্য চেষ্টা করতে দেখা যায়। অধ্যক্ষ ওম বিডলা জানান, তাঁর মন্তব্য নথিভুক্ত করা হবে না।
ডি রাজা বলেছিলেন, গডসে নিজেই স্বীকার করেছেন ৩২ বছর ধরে তিনি গান্ধীর উপর রাগ পুষে রেখেছিলেন। তিনি শেষ পর্যন্ত স্থির করেন গান্ধীকে খুন করবেন। রাজা বলেন, গডসে গান্ধীকে খুন করেছিলেন একটি নির্দিষ্ট মতাদর্শের কারণে। নিজের সপক্ষে কথা বলতে গিয়ে ডি রাজা উধম সিংয়ের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের বেশ কয়েক বছর পর জেনারেল ও ডায়ারকে হত্যা করেছিলেন উধম সিং। তিনি বলেন, একজন মানুষের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকি অপসারিত হয়ে যায় না। ফলে নিরাপত্তা হঠানোর আগে বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন।
এদিকে প্রজ্ঞা ঠাকুর দাবি করেছেন, উধম সিংয়ের উল্লেখে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন।
कभी-2 झूठ का बबण्डर इतना गहरा होता है कि दिन मे भी रात लगने लगती है किन्तु सूर्य अपना प्रकाश नहीं खोता पलभर के बबण्डर मे लोग भ्रमित न हों सूर्य का प्रकाश स्थाई है। सत्य यही है कि कल मैने ऊधम सिंह जी का अपमान नहीं सहा बस।
— Sadhvi Pragya Official (@SadhviPragya_MP) November 28, 2019
সংসদের বাইরে কংগ্রেসের সদস্যরা প্রজ্ঞা ঠাকুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার জন্য মোদীকে নিশানা করেন। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী দাবি করেন, প্রজ্ঞা ঠাকুর গডসে বা কারও নাম করেননি। "ওঁর মাইক বন্ধ ছিল। তিনি এব্যাপারে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, এবং আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে বিষয়টি জানিয়েওছেন।"
রাহুল গান্ধী এ বিষয় নিয়ে একটি টুইট করেছেন। তিনি লিখেছেন সন্ত্রাসবাদী প্রজ্ঞা ঠাকুর সন্ত্রাসবাদী নাথুরাম গডসেকে দেশভক্ত বলেছেন।
Terrorist Pragya calls terrorist Godse, a patriot.
A sad day, in the history of
India’s Parliament.— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) November 28, 2019
প্রজ্ঞা যখন এ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন তখন সভায় হাজির ছিলেন অমিত শাহ।
গডসের প্রশংসায় মুখর হওয়া অবশ্য প্রজ্ঞা ঠাকুরের কাছে নতুন বিষয় নয়। গত মে মাসে নির্বাচনী প্রচার চলাকালীন সংবাদসংস্থা এএনআইকে প্রজ্ঞা বলেন, "নাথুরাম গডসেজি দেশভক্ত ছিলেন, আছেন, থাকবেন... তাঁকে যাঁরা সন্ত্রাসবাদী বলেন, তাঁদের নিজেদের অন্তরটা দেখা উচিত... ভোটে এসব লোকদের জবাব দেওয়া হবে।"