প্রায় দু’বছরের বেশি সময় ধরে করোনা মহামারী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পৃথিবী জুড়ে। বিশ্বের একাধিক দেশ করোনা ভাইরাসে যখন কাবু তখন প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও রোগীদের সেবা করে চলেছেন চিকিৎসকরা। তাঁদের যেন বিরাম নেই। তাঁরা ছাড়া করোনার সঙ্গে যুদ্ধ যে কোন ভাবেই সম্ভব ছিলনা সেকথা সকলেরই জানা। ক্লান্ত পরিশ্রান্ত হয়েও লড়াই জারি রেখেছেন মারণ ভাইরাসের সঙ্গে। আর তা করতে গিয়ে কত চিকিৎসক যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন সেকথাও আমাদের জানা। আর করোনা কালে ১ লা জুলাই চিকিৎসক দিবসের গুরুত্ব যে কয়েকগুণে বেড়ে গেছে সেকথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। চিকিৎসা ক্ষেত্রে ডাক্তারদের অবদানের স্বীকৃতি দিতেই প্রতি বছর ১ জুলাই জাতীয় চিকিৎসক দিবস পালিত হয়। চিকিৎসক দিবস উপলক্ষে চিকিৎসকদের প্রতি বিশেষ সম্মান প্রদর্শন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এক টুইট বার্তায় তিনি উল্লেখ করেন " সমাজকে সুস্থ রাখতে যারা প্রতিদিন নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন, আজ চিকিৎসক দিবসের এই বিশেষ দিনে তাদের কুর্নিশ"।
ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) প্রথমবারের মতো ১৯৯১ সালের ১ লা জুলাই জাতীয় চিকিৎসক দিবস উদযাপন করে। বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়ের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে এই বিশেষ দিনটি পালন করা হয়। তিনি ছিলেন ছিলেন একজন চিকিৎসক এবং পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী। তিনি একাধারে শিক্ষাবিদ, সমাজসেবী ও স্বাধীনতা সংগ্রামী । চিকিৎসা ক্ষেত্রে দুর্দান্ত অবদান রাখার জন্য ১৯৬১ সালে ডঃ রায়কে ভারতরত্ন সম্মান প্রদান করা হয়। তাঁর স্মরণে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের তরফে চিকিৎসা, বিজ্ঞান, দর্শন, পাবলিক অ্যাফেয়ার্স, শিল্প ও সাহিত্যে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে আজকের দিনে বি সি রায় ন্যাশানাল অ্যাওয়ার্ড পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়। আমরা এই দিনটি উদযাপন করি সমাজের চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য যারা আমাদের সুস্থতা নিশ্চিত করার জন্য দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন।
আরও পড়ুন: <সংক্রমণ দেড় হাজারের গণ্ডি পেরোতেই গুচ্ছ নির্দেশিকা জারি রাজ্য সরকারের>
আজকের এই বিশেষ দিনে সমাজের সকল চিকিৎসক যারা দিন রাত পরিশ্রম করে মুমূর্ষু রোগীদের বাঁচাতে প্রাণপাত করছেন, সেই সঙ্গে সকল ডাক্তারি পড়ুয়াদের আজকের এই বিশেষ দিনে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। প্রতিবছরই বিভিন্ন সংগঠন ও হাসপাতালের চিকিৎসকদের তরফে এই দিন উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আন্তর্জাতিক স্তরে ৯৩৩ সালের ৯ মে, জর্জিয়ায় প্রথম চিকিৎসক দিবস পালন করা হয় বলে জানা গিয়েছে। ভারতে এই বছরের জাতীয় ডাক্তার দিবস উদযাপনের থিম হল ‘ফ্রন্ট লাইনে থাকা বীর যোদ্ধা’(Family Doctors on the Front Line) থিমটি চিকিৎসকদের সাধারণের প্রতি সেবা এবং সমাজের প্রতি ডাক্তারদের অবদানকে তুলে ধরে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রবিবার তার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে, চিকিৎসক দিবস সম্পর্কে ভাষণ কালীন সময় তিনি কিংবদন্তী চিকিৎসক ডাক্তার বিধান চন্দ্র রায়কে স্মরণ করে বলেন, "১লা জুলাই, আমরা জাতীয় চিকিৎসক দিবস উদযাপন করব। আমাদের অবশ্যই আজকের দিনে চিকিৎসকদের শ্রদ্ধা জানাতে হবে যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে কোভিডের মত কঠিন চ্যালেঞ্জের কাছে মাথা নত করেননি। তাদের কঠিন পরিশ্রমের ফলেই দেশ আজ নতুন ভাবে বাঁচতে শিখেছে”।