scorecardresearch

Doctors’ Day 2018: হেলায় পড়ে আছে বিধান রায়ের বাড়ি, দেওয়ালে চলছে বর্জ্যত্যাগ

বিধানচন্দ্র রায়ের বাড়ির চলমান ক্লিনিকে ডক্টর্স ডে-র দুদিন আগে গিয়ে দেখা গেল তাঁর ব্যবহৃত আসবাবপত্র অগোছালো, ধূলি ধূসরিত। তা যে স্বয়ং বিধান চন্দ্র রায়ের বাড়ি, হয় সে কথা এলাকার লোকজন জানে না, নয়ত বা ভুলে গেছে।

house of bidhan chandra ray
সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারের বিপরীতে হেলায় পড়ে আছে বি.সি রায়ের বাড়ি। ছবি : অরুণিমা কর্মকার

সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারের উল্টোদিকে বিধানচন্দ্র রায়ের বাড়ি। সে বাড়িতে এখন ক্লিনিক চলে। সেই ক্লিনিকের দৌলতেই পরিচয় এ বাড়ির। চিকিৎসক বিধানচন্দ্র রায়ের বাড়ি হিসেবে একে চেনেন, এমন এলাকাবাসীর সংখ্যা এখন নেহাৎই হাতে গোণা। অথচ এ বাড়ি হেরিটেজ বিল্ডিং বলে ঘোষিত। এমনকী জানা গেল এ বছর বিধান রায়ের জন্মদিনের আগে তাঁর মূর্তিটি সংস্কারের ‘বাজেট নেই’।

এই বাড়িতেই  বিধানচন্দ্র রায় চিকিৎসা করতেন বিনামুল্যে। বাড়ির মধ্যেই গড়ে তুলেছিলেন একটি ল্যাবরেটরি। সেকালে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের ভিড় জমত এখানে। সমাজসেবার খানিকটা দায়ভার নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন তাঁরা।  ক্লিনিকের এক আধিকারিকের মতে, সেদিনকাল এখন আর নেই।

এখানে এখন ডাক্তার দেখালে প্রথম খরচ ১০০ টাকা। দ্বিতীয় ও তৃতীয়বারের বেলায় খরচ ৫০ টাকা করে। এই ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মচারীরা দাবি করছেন, আয়ের ২৫ শতাংশই চলে যায় সরকারের তহবিলে। এখন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের আনাগোনা কমে গেছে। 

ক্লিনিকে যেসব ডাক্তাররা এখনও আসেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম দন্ত চিকিৎসক ড: পি বন্দোপাধ্যায়। তিনি বললেন, ‘‘এখানে যাঁরা আসেন, তাঁদের বেশিরভাগই সরকারি চিকিৎসক। সরকারের উচিত আরও শক্ত করে হাল ধরা।’’ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ড: এস মুখার্জি জানালেন, ভালোবাসার টানে সপ্তাহে দু-বার যাই। কিন্তু পরবর্তী প্রজন্ম কী করবে তা নিয়ে সন্দেহ আছে।’’ তিনিও মনে করছেন পরিকাঠামোর উন্নতি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।  একইসঙ্গে তাঁর অনুভব, ‘‘ চিকিৎসকরা যদি  সমাজসেবক হিসাবে এই দায়িত্ব নেন, তবেই ভবিষ্যতে টিকে থাকবে ড: বিধানচন্দ্র রায়ের ক্লিনিক।’’

 

বিধানচন্দ্র রায়ের অয়েল পেন্টিংয়ের হাল দেখে প্রশ্ন তুললেন এক রোগী। ছবি : অরুণিমা কর্মকার

বিধানচন্দ্র রায়ের বাড়ির চলমান ক্লিনিকে ডক্টর্স ডে-র দুদিন আগে গিয়ে দেখা গেল তাঁর ব্যবহৃত আসবাবপত্র অগোছালো, ধূলি ধূসরিত। জিজ্ঞাসা করায় আধিকারিকরা জানালেন, ডক্টরস ডে উপলক্ষে অনুষ্ঠানের জন্য কাজ চলছে, তাই এই হাল। তবে যাঁরা ক্লিনিকে নিয়মিত আসেন, তাঁদের কাছ থেকে জানা গেল, সারা বছরই এ ভাবেই ধুলো পড়ে থাকে বিধান রায়ের ব্যবহৃত চেয়ার-টেবিলে। এমনকী বিধানচন্দ্র রায়ের অয়েল পেন্টিংয়ের হাল দেখে প্রশ্ন তুললেন এক রোগী। তাঁর জিজ্ঞাসা ছিল ১ জুলাইয়ের আগে এই ছবিটা ঠিক করা যাবে কি না! 

এ তো গেল বাড়ির ভিতরের হাল। বাড়ির বাইরের দেওয়ালের হাল দেখলে আঁতকে উঠতে হবে। সেখানে দিনের পর দিন মূত্রত্যাগ করছেন এলাকার দোকানদাররা। বহুবার বারণ করা সত্ত্বেও কোনও লাভ হয়নি, অভিযোগ করছেন ক্লিনিকের লোকজন। তাঁদের অভিযোগ, এলাকার বিধায়ক নয়না বন্দোপাধ্যায়কে লিখিত অভিযোগ জানালেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি। এ সব বিষয়ে হুঁশ নেই কলকাতা পুরসভার, জানাচ্ছেন তাঁরা।

আজ ১ জুলাই। চিকিৎসক দিবস। প্রবাদ প্রতিম চিকিৎসক বিধান চন্দ্র রায়ের বাড়িতে আয়োজিত হয়েছে রক্তদান শিবির। দিন গড়াবে, ঘড়ির কাঁটা চিহ্নিত করবে নতুন দিন। ২ জুলাই থেকে আবার পুরোনো হালে ফিরতে শুরু করবে বিধান রায়ের বাড়ি। অর্থাৎ, বেহালে। তেমনটাই অন্তত আশঙ্কা। যে আশঙ্কা মিথ্যে প্রমাণিত হলে খুশি হবেন অনেকেই। 

Stay updated with the latest news headlines and all the latest General news download Indian Express Bengali App.

Web Title: National doctors day in india july 1 2018 bidhan chandra roy