Advertisment

ক্রাইম ব্যুরোর রেকর্ডে প্রকাশ করা হল না গণপিটুনি বা ধর্মীয় হত্যার পরিসংখ্যান

এনসিআরবি-র সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুসারে ২০১৬ সালের তুলনায় রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনা বেড়েছে ৩০ শতাংশ। এই বিভাগের মধ্যে রয়েছে, দেশদ্রোহ, দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, এবং সরকারি সম্পত্তি নষ্ট।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NCRB, Crime Data

তথ্য সংগ্রহে যুক্ত এক আধিকারিক জানিয়েছেন, "এসব তথ্য প্রকাশিত না হওয়া বিস্ময়কর।"

সোমবার ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো দেশের অপরাধের ঘটনার সাম্প্রতিকতম পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক বছর পর এই পরিসংখ্যান প্রকাশিত হল। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, গণপ্রহারে মৃত্যু, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দ্বারা সংঘটিত হত্যা, খাপ পঞ্চায়েতের নির্দেশে হত্যা এবং ধর্মীয় কারণে হত্যার ঘটনার মত নতুন উপবিভাগ (সাব হেড) গুলি প্রকাশিত হয়নি।

Advertisment

২০১৬ সালের রিপোর্টকেই মোটামুটিভাবে অনুসরণ করে এই রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সাইবার ক্রাইম এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনা।

আরও পড়ুন, আধার-সোশ্যাল মিডিয়া লিঙ্কিং, সব মামলার শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে

এনসিআরবি-র প্রাক্তন ডিরেক্টর ইশ কুমারের নেতৃত্বে সংস্থা তথ্য সংগ্রহে ব্যাপক বদল আনছিল বলে সংস্থার আভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে। তাঁর অধীনেই ব্যুরোয় গণপ্রহার ও ধর্মীয় কারণে হত্যার মত বিভাগ যুক্ত করা হয়। তথ্য সংগ্রহে যুক্ত এক আধিকারিক জানিয়েছেন, "এসব তথ্য প্রকাশিত না হওয়া বিস্ময়কর। এ সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য সংগৃহীত ও এবং বিশ্লেষণ করে প্রকাশের জন্য প্রস্তুত রাখা ছিল। শুধু শীর্ষস্থানীয়রাই বলতে পারবেন এ সব তথ্য কেন প্রকাশ করা হয়নি।"

২০১৫-১৬ সালে দেশ জুড়ে গণপ্রহারের ঘটনা বাড়তে থাকায় এ সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আধিকারিকরা বলছেন, এ ধরনের তথ্য সংগ্রহের ফলে এ ধরনের অপরাধের মোকাবিলায় সরকারের নীতি নির্ধারণ করতে সুবিধে হবে বলেই মনে করা হয়েছিল। আধিকারিকরা বলছেন, গণপ্রহার বিভিন্ন কারণে ঘটে থাকে। তার মধ্যে রয়েছে চুরি বা ছেলেধরা সন্দেহে গণপ্রহার, আবার গবাদি পশু পাচার অথবা সাম্প্রদায়িক কারণও রয়েছে।

এনসিআরবি-র সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুসারে ২০১৬ সালের তুলনায় রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনা বেড়েছে ৩০ শতাংশ। এই বিভাগের মধ্যে রয়েছে, দেশদ্রোহ, দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, এবং সরকারি সম্পত্তি নষ্ট। তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে এ ধরনের অপরাধ ২০১৬ সালে ছিল ৬,৯৮৬টি, ২০১৭ সালে তা হয়েছে ৯,০১৩টি।

Sedition, NCRB রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ

এ ধরনের অপরাধ সব থেকে বেশি ঘটেছে হরিয়ানায় (২৫৭৬)। এর পরেই রয়েছে উত্তর প্রদেশ (২০৫৫)। তবে দু রাজ্যেই এ ধরনের অপরাধ মূলত ঘটেছে সরকারি সম্পত্তি নষ্টের জেরে।

দেশদ্রোহিতার মামলা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে আসামে (১৯টি)। এর পরেই রয়েছে হরিয়ানা (১৩)। জম্মু কাশ্মীরে দেশদ্রোহিতার মাত্র একটি মামলা রয়েছে। ছত্তিসগড় এবং আসাম ছাড়া উত্তর পূর্বের সব রাজ্যে দেশদ্রোহিতার মামলার সংখ্যা শূন্য।

বিভিন্ন ধরনের দেশবিরোধী শক্তির দ্বারা কৃত এক নতুন অপরাধ বিভাগে দেখা যাচ্ছে, এ ধরনের অপরাধ সবচেয়ে বেশি ঘটিয়েছে বাম উগ্রপন্থীরা (৬৫২)। এই তালিকায় এর পরেই রয়েছে উত্তরপূর্বের বিদ্রোহীরা (৪২১) এবং সন্ত্রাসবাদী (জিহাদি এবং অন্যরা) (৩৭১)।

সবথেকে বেশি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বাম উগ্রপন্থীরা (৮২)। ছত্তিসগড়েই তারা ৭২টি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এরপরেই রয়েছে সন্ত্রাসবাদীদের হত্যা (৩৬)। এর মধ্যে জম্মু কাশ্মীরেই তারা ৩৪টি খুন করেছে। উত্তর পূর্বের বিদ্রোহীরা ১০ জনকে খুন করেছে।

মোট ৫০,০৭,০৪৪ টি বিচার্য অপরাধের মধ্যে ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুসারে অপরাধের ঘটনা ৩০,৬২,৫৭৯ এবং বিশেষ ও স্থানীয় আইনানুসারে অপরাধের সংখ্যা ১৯,৪৪,৪৬৫টি ২০১৭ সালে নথিবদ্ধ হয়েছে। ২০১৬ সালের নথিকৃত অপরাধ (৪৮,৩১,৫১৫)-এর তুলনায় যা ৩.৬ শতাংশ বেশি।

NCRB,

২০১৭ সালে খুনের ঘটনা ঘটেছে মোট ২৮, ৬৫৩টি যা ২০১৬ সালের (৩০৪৫০)-এর চেয়ে ৫.৯ শতাংশ কম।  ২০১৭ সালে যত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তার মধ্যে বিবাদের কারণে (৭৮৯৮)টি খুন সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি। এর পরেই রয়েছে ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে হত্যা (৪৬৬০টি) এবং লাভের জন্য খুন (২০১৩টি)।

ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুসারে মহিলাদের বিরুদ্ধে যত অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি অপরাধ নথিবদ্ধ হয়েছে স্বামী ও তার আত্মীয়দের নৃশংসতার জন্য (৩৩.২ শতাংশ)। এর পরেই রয়েছে মর্যাদাহানির উদ্দেশ্যে মহিলাদের উপর আক্রমণ (২১ শতাংশ), এবং ধর্ষণ (১০.৩ শতাংশ)। শতকরা হিসেবে, ২০১৭ সালে শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধের বেশি ঘটনা ঘটেছে অপহরণ (৪২ শতাংশ) এবং শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধ প্রতিষেধক আইন, ২০১২ লঙ্ঘন (২৫.৩ শতাংশ)। এর মধ্যে রয়েছে শিশু ধর্ষণও।

Read the Full Story in English

crime
Advertisment