Nagaland Firing: অবিলম্বে আফস্পা প্রত্যাহার হওয়া উচিত। নাগাল্যান্ড-কাণ্ডের পর এই দাবি তুললেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি পরিচালিত এনডিএ-র শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টি বা এনপিপি। সেই দলের নেতা মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কর্নাড সাংমা। তার এই দাবি ঘিরে স্পষ্টতই বিড়ম্বনা এনডিএ অন্দরে। তবে শুধু মিজোরাম নয়, আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি উঠেছে নাগাল্যান্ড থেকেও। খোদ সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের কাছে এই দাবি রেখেছেন। মন জেলার ওটিং গ্রামে নিহতদের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে এদিন যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী নেফিউ রিও। সেই সময় উপস্থিত সংবাদমাধ্যমকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেছি নাগাল্যান্ড থেকে আফস্পা প্রত্যাহোরের। পাশাপাশি নিহতদের পরিবারবর্গকে কেন্দ্র দেবে ১১ লক্ষ টাকা আর রাজ্য দেবে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ।
১৯৫৮ থেকে অসম, নাগাল্যান্ড, ইম্ফল বাদে গোটা মণিপুর, আংশিক অরুণাচল প্রদেশে আফস্পা কার্যকর। ২০১৮ সালে মেঘালয় থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে এই বিশেষ আইন। দেশের উপদ্রুত এলাকায় কেন্দ্রের মধ্যস্থতা ছাড়া সেনাকে বিশেষ ক্ষমতা দিতে এই আইনের রূপায়ণ। যদিও আফস্পার অপব্যবহার নিয়ে একাধিকবার সরব হয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
এদিকে, নাগাল্যান্ড গুলি চালনা-কাণ্ডে সংসদে বিবৃতি দিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। সোমবার সকাল থেকেই এই ঘটনাকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়েছে সংসদ। এদিন দুপুরে গুলি চালনার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘নাগাল্যান্ডের ঘটনার জন্য ভারত সরকার আপনাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। সেদিন মন জেলার ওটিং গ্রামের কাছে খনি শ্রমিকদের একটি গাড়ি ঢুকে পড়ে। তাকে দাঁড়াতে বলা হলে, সেই গাড়ি ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়। তখনই ভুল করে জঙ্গি সন্দেহে সেই গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চলে। ভুল বোঝাবুঝির জন্য এই ঘটনা। গাড়ির ভিতর থাকা ৮ জনের মধ্যে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুলিবিদ্ধ ২ জনকে বাহিনীই চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর বিক্ষুব্ধ জনতা পাল্টা বাহিনীর ছাউনিতে হামলা চালায়। সেই সময় গুলি চললে আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় সিট গঠন করা হয়েছে। নিরপেক্ষ তদন্ত হবে। একমাসের মধ্যে সিট তদন্ত রিপোর্ট জমা করবে।‘
পাশাপাশি এই ঘটনায় অসম রাইফেলসের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছে নাগাল্যান্ড পুলিশ। গ্রামবাসীদের আহত এবং খুন করাই বাহিনীর উদ্দেশ্য ছিল। এমনটাই উল্লেখ পুলিশের অভিযোগে।
অপরদিকে, সেনার কাণ্ডজ্ঞানহীন ভূমিকায় তপ্ত নাগাল্যান্ড। মন জেলার ওটিং গ্রামের ঘটনায় ফুঁসছে সাধারণ মানুষ। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্নের মুখে নাগা শান্তি আলোচনা। মানুষের ক্ষোভ প্রশমিত করে কবে ফের শান্তি আলোচনা সম্ভব তা নিয়েই সন্দিহান মধ্যস্থতাকারী গোষ্ঠীর সদস্যরা।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে প্রতিরক্ষা বিভাগের দায়িত্বে থাকা এক শীর্ষ আধিকারিক বলেছেন, ‘এটা নাগাল্যান্ড পুলিশের অভিযান ছিল না। ঘটনার দায় রাজ্যের পুলিশ বা রাজ্য সরকারের উপর চাপানো যাবে না। ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভিযানে মারাত্মক ভুলের কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। ফলে নাগা জনগোষ্ঠী বনাম ভারত রাষ্ট্রের সংঘাতের তত্ত্ব ফের গাঢ় হচ্ছে। ফলে সাময়িকভাবে হলেও এতে জঙ্গি সংগঠনগুলির হাত শক্ত হবে। এখন কেন্দ্রকে নিপুণ হাতে অবস্থার মোকাবিলা করতে হবে। প্রয়োজন অপরাধীদের দ্রুত শাস্তিবিধান করা, তাহলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে।’
গত কয়েকবছরে এনএসসিএন-এর বেশ কয়েকটি গোষ্ঠীকে আলোচনার টেবিলে বসাতেপেরেছে মোদী সরকার। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, খাঙ্গো কন্যাক ও নিকি সুমি গোষ্ঠী। এরা একসময় আলোচনা বিরোধী গোষ্ঠী এনএসসিএন (খাপলাং বা কে) গোষ্ঠূবুক্ত ছিল। খাপলাংয়ের মিলিটারি কমান্ডার ছিলেন নিকি সুমি। ফলে মায়ানমার সীমান্ত লাগোয়া অঞ্চলে তাঁর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন