করোনার তৃতীয় ঢেউকালে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ষাটোর্ধ মানুষের। ইতিমধ্যেই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য আমাদের সামনে এসেছে। দেশের মোট যোগ্য জনসংখ্যার প্রায় ৪২ শতাংশ মানুষ কোভিডের বুস্টার ডোজ নিতে আগ্রহী নন, এবার যে তথ্য উঠে এসেছে তা রীতিমত ভয় ধরানোর। দেশের প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষের বেশি বয়স্ক জনসংখ্যার মানুষ এখনও টিকার একটি মাত্র ডোজও পান নি।
সরকারি তথ্য অনুসারে দেশের প্রবীণ নাগরিকের মোট ১০ শতাংশ মানুষ এখনও কোভিড টিকার একটি মাত্র ডোজও পাননি। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্ট অনুসারে ষাটোর্ধ মোট ১২ কোটি ৫৮ লক্ষ ৩৬৮ জন তাদের প্রথম টিকার ডোজ পেয়েছেন। অন্যদিকে টিকার দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন এমন সংখ্যা ১০ কোটি ৯৫ লক্ষ ৭৯ হাজার ১২৮ জন। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে ভারতে ষাটোর্ধ মানুষের সংখ্যা ১৩ কোটি ৮০ লক্ষ। সেই সংখ্যা অনুসারে দেশের প্রায় ১ কোটি ২ লক্ষের বেশি ষাটোর্ধ ব্যক্তি এখনও টিকার একটিও ডোজ পাননি। এই পরিসংখ্যান রীতিমত ভয় ধরানোর মতোই। যেখানে করোনা থেকে বাঁচার জন্য বারবার টিকার প্রয়োজনীয়তার কথা বলছেন চিকিৎসকরা সেখানে এত সংখ্যক ষাটোর্ধ ব্যক্তি কিভাবে টিকার আওতার বাইরে রইলেন উঠেছে প্রশ্নও।
এ বিষয়ে দিল্লির AIIMS-এর অন্যতম চিকিৎসক ডাঃ বিজয় কুমার বলেন “ এই বয়সের মানুষদের টিকাদানের কাজ সম্পূর্ণ হওয়া উচিত ছিল। কারণ এই গোষ্ঠীর মানুষরাই বেশি করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন এবং মৃত্যুও হচ্ছে। এছাড়াও, বার্ধক্যের সঙ্গে সঙ্গে হার্ট, ফুসফুস, লিভার, কিডনি ইত্যাদির মতো প্রধান অঙ্গগুলির সাথে সম্পর্কিত অনেক দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা আসে এবং এমনকি কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ক্যানসারের ঝুঁকিও লক্ষ করা যায়”।
কেন্দ্রীয় সরকার জাতীয় কোভিড ১৯ টিকাদান কর্মসূচির অংশ হিসাবে গত বছর ১ লা মার্চ থেকে ৪৫ বছর বেশি বয়সীদের সঙ্গে ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের টিকাদানের কাজ শুরু করেছিল। লক্ষ্য করা গিয়েছিল প্রথম দিকে টিকা কেন্দ্রে ভিড়ের কারণে অনেকে বয়স্ক ব্যক্তি সেই সময় করোনা টিকা নিতে আসেননি। গত বছর, একটি সরকারী সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল ৭০ বছরের বেশি প্রতি ১০ জন মানুষের মধ্যে ৪ জন টিকা নিতে ইচ্ছুক ছিলেন না।
দিল্লির সাফদরজং হাসপাতালের ডিরেক্টর, এবং বিভাগীয় প্রধান যুগল কিশোর, এপ্রসঙ্গে জানিয়েছেন, “সরকারের উচিত যত দ্রুত সম্ভব ষাটোর্ধ ব্যক্তিদের টিকাদানের কাজ সম্পূর্ণ করা”। তার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা সরকারের তরফে গ্রহণ করা উচিত বলেও তিনি মনে করেন।