নির্বাচন কমিশনের কাজকর্মের বিষয়ে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতে দায়ের করা একটি পিটিশনের শুনানির সময়, সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সরকারের সামনে একটি অনেক বড় প্রশ্ন তুলেছে। ২০০৭ সাল থেকে সমস্ত মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের মেয়াদ কেন কমানো হয়েছে তা কেন্দ্রের কাছে জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে কাছে এই প্রশ্ন তুলেছে, কেন ২০০৭ সাল থেকে সমস্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মেয়াদ কমানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ‘আমরা এই প্রবণতা ইউপিএ এবং বর্তমান সরকারের আমলেও লক্ষ্য করছি’। সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি অজয় রাস্তোগি, বিচারপতি অনিরুদ্ধ বোস, বিচারপতি হৃষিকেশ রায় এবং বিচারপতি সিটি রবিকুমার।
পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ বলেছে, গণতন্ত্র সংবিধানের মৌলিক কাঠামো। এটা নিয়ে কোন বিতর্ক নেই। আমরা সংসদকে কিছু করতে বলতে পারি না এবং আমরা তা করবও না। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, নির্বাচন কমিশনের (ইসিআই) সদস্য নিয়োগে সংসদকেই সংস্কার আনতে হবে। কারণ এর প্রভাব পড়ে নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমে।
আদালত বলেছেন, এটি নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতাকেও প্রভাবিত করে। সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন করে যে ১৯৯১ সালের আইনের অধীনে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের কার্যকাল ছয় বছর। তাহলে কোন যুক্তিতে তাঁর কার্যকালের মেয়াদ কমানো হচ্ছে? মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে সংবিধান মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং দুই নির্বাচন কমিশনারের "কাঁধে" অনেক দায়িত্ব অর্পণ করেছে এবং মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হিসাবে টিএন সেশনের মতো শক্তিশালী চরিত্রের একজন ব্যক্তির প্রয়োজন। উল্লেখযোগ্য ভাবে, টিএন সেশন কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রীপরিষদ সচিব ছিলেন এবং ১২ ডিসেম্বর, ১৯৯০-এ তিনি মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিযুক্ত হন। তার মেয়াদ ১১ ডিসেম্বর, ১৯৯৬-এ শেষ হয়। তিনি ১০ নভেম্বর, ২০১৯ এ প্রয়াত হন।
আরও পড়ুন: < ‘উস্কানিতেই রাগের মাথায় খুন’! আদালতে বিস্ফোরক মন্তব্য আফতাব পুনাওয়ালার >
বিচারপতি কে এম জোসেফের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ বলেছে যে তাদের চেষ্টা হচ্ছে এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করা যাতে সেরা ব্যক্তি মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিযুক্ত হন। বেঞ্চ বলেছে যে অনেক মুখ্য নির্বাচন কমিশনার পদ অলংকৃত করেছে, কিন্তু টিএন সেশন এক ও একমাত্র। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার পদের জন্য সেরা ব্যক্তিকেই বেছে নিতে হবে। প্রশ্ন হল কিভাবে আমরা সেরা ব্যক্তিকে বেছে নেব এবং নিয়োগ করব।
নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ বলেছে যে ভারতের নির্বাচন কমিশনের (ইসিআই) স্বাধীনতা "সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস"। আদালত আরও উল্লেখ করেছেন, ১৯৯৬ সাল থেকে কোন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নির্বাচনী সংস্থার প্রধান হিসেবে পূর্ণ ছয় বছর মেয়াদ পাননি এই বিষয়টিও স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন।