Advertisment

বিকৃত ইতিহাসের দাপট সোশাল মিডিয়ায়, নেতাজিকে আদৌ 'যুদ্ধ অপরাধী' বর্ণনা করে অ্যাটলিকে কোনো চিঠি লেখেননি নেহরু

চিঠির বক্তব্যে এবং লেখার ধরণে একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। যেমন, প্রথমেই উল্লেখ করতে হয়, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর নামের বানানে ভুল। জওহরলাল নেহরুর মত ইংরেজি ভাষার ওপর দখল থাকা এক পণ্ডিতের পক্ষে যে ধরণের ভুল হওয়া অসম্ভব।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ফেসবুক, টুইটারে বছর দুই আড়াই ধরেই ঘোরা ফেরা করছে এরকম এক চিঠির ছবি। ১৯৪৫ সালে লেখা এক চিঠির ছবি। তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে লেখা নেহরুর চিঠি। সোশাল মিডিয়ায় তা ভাইরাল হওয়ার কারণ, সেখানে নাকি নেহরু নেতাজিকে বর্ণনা করেছেন 'যুদ্ধ অপরাধী' হিসেবে।

Advertisment

অনেকে বলেন ২০১৬ সালে কেন্দ্র থেকে নেতাজিকে নিয়ে যে সমস্ত তথ্য সামনে এনেছিল কেন্দ্র, এ চিঠিও ছিল তার মধ্যে। এবার সেই চিঠি নিয়েই ফেসবুক টুইটারে শুরু হয়েছে নানা বিতর্ক।

চিঠির বক্তব্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে জানানো হয়েছিল নেতাজি সেই মুহূর্তে স্ত্যালিনের সহায়তায় রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন। অ্যাটলি যেন এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন।

নেটিজেনদের অনেকেই সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কেউ কেউ ক্ষুব্ধ হয়ে বলেছেন, নেহরু পরিবারের জন্যই নাকি মানুষ সুভাষ বোসকে ভুলতে বসেছে।
অন্যদিকে অবশ্য ফেসবুক-টুইটারে ভাইরাল হয়ে যাওয়া চিঠির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ইতিহাস বিশ্লেষকরা বলছেন এইরকম কোনো চিঠিই আদপে লেখাই হয়নি। চিঠির বক্তব্যে এবং লেখার ধরণে একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। যেমন, প্রথমেই উল্লেখ করতে হয়, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর নামের বানানে ভুল। জওহরলাল নেহরুর মত ইংরেজি ভাষার ওপর দখল থাকা এক পণ্ডিতের পক্ষে যে ধরণের ভুল হওয়া অসম্ভব। এরপরেই যে মারাত্মক ভুলটি নজর কেড়েছে ইতিহাস নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা মানুষের, তা হল  ক্লিমেন্ট অ্যাটলি-র পদের বর্ণনা। প্রাইম মিনিস্টার অব ইংল্যান্ড বলে সম্বোধন করা হয়েছে অ্যাটলিকে। অথচ যুক্তরাজ্যের সংবিধান বলে প্রধানমন্ত্রী ইংল্যান্ডের নয়, ইউনাইটেড কিংডম-এর।
চিঠিতে রাশিয়াকে ব্রিটিশ-আমেরিকার বন্ধু হিসেবে বর্ণনা দিয়েছেন নেহরু। বলেন মিত্র পক্ষের দেশ হওয়ায় রাশিয়ার সুভাষ চন্দ্রকে আশ্রয় দেওয়ার কথা না। অথচ চিঠির তারিখ ২৭ ডিসেম্বর ১৯৪৫। অর্থাৎ দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শেষ। মিত্র পক্ষের ধারণাই ততদিনে অকেজো হয়ে গেছে।
চিঠিতে নেহরুর সই কিম্বা সিল, নেই কোনোটাই। পরাধীন ভারতে ব্রিটিশ সরকারকে লেখা চিঠিতে নিয়ম-কানুন একটু বেশিই মানা হত কিনা। স্বভাবতই এ সব না থাকায় স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে চিঠিটি ভুয়ো। ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ টুইট করে চিঠির অসত্যতা নিয়ে সরব হয়েছেন।

netaji Mahatma Gandhi
Advertisment