ভয়াবহ ভূমিকম্প নেপালে। শুক্রবার রাতের বিধ্বংসী ভূমিকম্পে নেপালে মৃত্যু মিছিল। পশ্চিম নেপালে ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পের রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৪। শক্তিশালী ওই ভূমিকম্পের জেরে শনিবার সকাল পর্যন্ত কমপক্ষে ১২৮ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে।
নেপালের পাহাড়ি গ্রাম জুড়ে জোরদার তৎপরতায় চলছে উদ্ধারকাজ। ওই এলাকা থেকে আরও বেশ কয়েকজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনিক আধিকারিকরা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানিয়েছেন, অনেক জায়গার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। নেপাল সেনাবাহিনী এবং নেপাল পুলিশ উভয়েরই উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছে। কম্পনের ফলে সৃষ্ট ভূমিধস এবং এর আফটারশকগুলি উদ্ধারকারীদের কাজে বেশ সমস্যা তৈরি করেছে।
ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি (এনসিএস)-র তথ্য অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬.৪ এবং ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল নেপালের ১০ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল নেপালের পশ্চিম মন্দির শহর জুমলার কাছে। রাত ১১.৩২ টার দিকে ভূমিকম্প হয়। নেপালের জাতীয় ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল জাজারকোটে ছিল, যা নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে প্রায় ২৫০ মাইল উত্তর-পূর্বে অবস্থিত।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহল "প্রচন্ড" শুক্রবার রাতে ভূমিকম্পের জেরে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির জন্য তার গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং অবিলম্বে উদ্ধার ও ত্রাণের জন্য ৩টি নিরাপত্তা সংস্থাকে সক্রিয় করেছেন। নেপালের ভূমিকম্পটি দিল্লি এবং উত্তর ভারতেও শক্তিশালী কম্পন সৃষ্টি করেছে। ভূকম্পনে তৈরি আতঙ্কের জেরে শুক্রবার গভীর রাতে লোকজনকে তাঁদের বাড়িঘর থেকে বেরিয়ে আসতে বাধ্য করেছে। দিল্লি-এনসিআর, উত্তরপ্রদেশ এবং বিহার সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় কম্পন অনুভূত হয়েছে।
গত এক মাসে নেপালে এটি ছিল ৬ মাত্রার দ্বিতীয় ভূমিকম্প। গত ২ অক্টোবর দেশটিতে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। আগের মাসের ঘটনার মতো, সর্বশেষ ভূমিকম্পটিও বেশ অগভীর ছিল, যা পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার নীচে তৈরি হয়েছিল। ছোট গভীরতায় উদ্ভূত ভূমিকম্প সাধারণত বেশি শক্তিশালী হয় এবং এর ধ্বংসাত্মক শক্তি বেশি থাকে। শুক্রবারের ভূমিকম্পটি নেপালে আট বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল। এর আগে গত ২০১৫ সালে নেপালে ভূমিকম্পে প্রায় ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।