এভারেস্টে উঠতে গিয়ে মারা গিয়েছেন ১১ জন। তার মধ্যে চার জন ভারতীয়। ১৯৯৬ সালের পর থেকে এক মরশুমে পর্বতশৃঙ্গে চড়তে গিয়ে মৃত্যুর এই সংখ্যা সর্বোচ্চ। এ ঘটনার পর নেপাল এভারেস্টে চড়ার অনুমতির ব্যাপারে কড়াকড়ির কথা ভাবছে। এত মৃত্যুর জন্য় অত্যধিক ভিড় ও অনভিজ্ঞতাকেই দায়ী করা হচ্ছে।
সংবাদসংস্থা এএফপি এ ব্যাপারে নেপাল পর্যটনমন্ত্রকের সচিব মোহন কৃষ্ণ সাপকোটাকে উদ্ধৃত করেছে। তিনি বলেছেন, "পর্বতারোহীদের ন্যূনতম যোগ্যতা, বেশি পরিমাণ দড়ি অথবা বেশি পরিমাণ অক্সিজেন এবং বেশি সংখ্যক শেরপা নেওয়ার ব্যাপারে আমরা চিন্তা ভাবনা করছি।"
আরও পড়ুন, এভারেস্টের পথে এত মৃত্যু কেন?
কয়েকদিন আগে পাহাড়চূড়ার দিকে একটি শৈলশিরায় পর্বতারোহীদের দীর্ঘ সাইনের একটি ফোটো ভাইরাল হয়। আবহাওয়ার পূর্বাভাস ভাল থাকায় প্রায় ২৫০ অভিযাত্রী এবং প্রায় সমসংখ্যক শেরপা সকলে একসঙ্গে পর্বতচূড়ায় ওঠার চেষ্টা করায় দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়, যা অনেকের পক্ষেই মারাত্মক হয়ে দেখা দিয়েছিল।
নেপাল ট্য়ুরিজম বোর্ডে এভারেস্টে চড়ার দরখাস্ত অনুমোদিত হয় আগে এলে আগে পাবেন ভিত্তিতে। নেপাল ট্যুরিজম বোর্ড গ্রুপ পিছু ১১ হাজার ডলার (প্রায় ৭.৬৫ লক্ষ টাকা) নিয়ে পর্বতারোহণের অনুমতি দেয়। এর সঙ্গে ফেরতযোগ্য আরও ৪০০০ ডলার দিতে হয়, যা সমস্ত নিয়ম মেনে ফেরার পর অভিযাত্রীদের ফেরত দেওয়া হয়। সমালোচকরা বলছেন কোনও যথাযথ নীতি না থাকার জন্য এমন অনেকে শৃঙ্গারোহণের চেষ্টা করছেন, যাঁদের ঠিকমত প্রশিক্ষণ নেই। এর ফলে ঝুঁকিও বাড়ছে। এ বছর নেপাল ট্যুরিজম বোর্ড মোট ৪৪ টি দলের ৩৮১ জন পর্বতারোহীকে অনুমতি দিয়েছে যা সংখ্যার দিক থেকে রেকর্ড।
আরও পড়ুন, এভারেস্টে দীর্ঘতম ট্র্যাফিক জ্যাম! গৌরবের কাহিনী লিখতে পারলেন না বাঙালি মেয়ে
তিব্বতের ক্ষেত্রে এভারেস্টে আরোহণের সংখ্যা বেঁধে দেওয়া রয়েছে। ৩০০ জনের বেশি সংখ্যক অভিযাত্রীকে অনুমতি দেওয়া হয় না সেখানে। নেপালের দিক থেকে এরকম কোনও সীমা বেঁধে দেওয়া নেই। নেপালের দিক থেকে এটা ক্রমবর্ধমান লাভজনক এবং বিপজ্জনক ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সস্তা অপারেটররা এর মধ্যে ঢুকে পড়ায় পর্বতারোহীর সংখ্যাও বেড়ে গিয়েছে। এর ফলে ৮৮৪৮ মিটার (২৯,০২৯ ফিট) উঁচু এই শৃঙ্গে ওঠা বিপজ্জনক হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে খারাপ আবহাওয়ার কারণে যখন সামিটের দিন কমে আসে তেমন মরশুমে। এ বারও তেমনটাই ঘটেছিল।