দেশে টিকার আকালের মধ্যেই ব্রিটেনে চলে গিয়েছেন সেরাম কর্তা আদার পুনাওয়ালা। এদিকে, দেশে ভ্যাকসিনের জোগান অপর্যাপ্ত হওয়ায় টিকাকরণ প্রক্রিয়া শ্লথ গতিতে এগোচ্ছে। বারবার বিরোধীরা কেন্দ্র এবং সেরামকে নিশানা করে অভিযোগ করেছে, দেশবাসীকে বঞ্চিত করে টিকা বিদেশে রফতানি করা হয়েছে। মঙ্গলবার সেই অভিযোগ খণ্ডণ করলেন সেরাম কর্তা। সাফ জানিয়ে দিলেন, দেশবাসীকে বঞ্চিত করে কখনও বিদেশে ভ্যাকসিন রফতানি করেন সেরাম।
পাশাপাশি তিনি আরও জানান, "ভারতে টিকাকরণ প্রক্রিয়া মসৃণ রাখতে সবরকম চেষ্টা করতে অঙ্গীকারবদ্ধ সেরাম ইনস্টিটিউট। তিনি বলেছেন, আমরা ২০ কোটি টিকার ডোজ সরবরাহ করেছি মার্কিন ওষুধ সংস্থাগুলির দুমাস পর অনুমোদন পাওয়া সত্ত্বেও। যত ডোজ উৎপাদন ও সরবরাহ হয়েছে, সেই নিরিখে সেরাম বিশ্বের শীর্ষ তিনটি সংস্থার একটি। আমরা উৎপাদন প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছি এবং ভারতবাসীকেই প্রাধান্য দিয়েছি। এই বছরের শেষে কোভ্যাক্স কর্মসূচিতে অন্যান্য দেশে রফতানি শুরু করব আশা করি।"
তাঁর দাবি, "ভারত-সহ গোটা বিশ্বে করোনা অতিমারী ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। গত কয়েক দিন ভারত সরকার এবং সেরাম-সহ অন্য টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির গভীর আলোচনা চলছে বিদেশে টিকা রফতানি নিয়ে। কিন্তু তার আগে কয়েকটি বিষয়ে স্বচ্ছতা থাকা আবশ্য়ক। এবছর জানুয়ারি মাসে আমাদের কাছে প্রচুর সংখ্যক টিকার ডোজ মজুত ছিল। তারপর টিকাকরণ যখন শুরু হয় তখন দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কম ছিল। সেইসময় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ-সহ অনেকে ভেবেছিলেন অতিমারী হয়তো শেষের দিকে। একইসঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য দেশে তখন করোনা সঙ্কট মারাত্মক ছিল। সাহায্যের জন্য তারা আর্তি জানাচ্ছিল।"
আদার বলেছেন, "সেইসময় ভারত সরকার বিভিন্ন দেশকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। গত বছর অতিমারীর শুরুতে এই সমন্বয়-সহযোগিতা সব দেশই দেখিয়েছিল। প্রযুক্তিগত ও স্বাস্থ্যসুরক্ষা সংক্রান্ত আদানপ্রদান দেশগুলির মধ্যে সম্পর্ক মজবুত করে। যখন ভারত হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও টিকা দিয়ে অন্য দেশগুলিকে সাহায্য করেছিল, সেইভাবে তাদের থেকেও সাহায্য পেয়েছে।"
এরপরই বিবৃতিতে পুনাওয়ালা বলেছেন, "সারা বিশ্বে সবাই এই ভাইরাসকে না হারোনা পর্যন্ত আমরা কেউই সুরক্ষিত নই। আরও একটি বিষয় মানুষ বুঝতে চাইছেন না যে, আমাদের দেশ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল দেশ। তাই এত জনবহুল দেশে টিকাকরণ ২-৩ মাসের মধ্যে শেষ করা অসম্ভব। অনেক সমস্যা-বাধা আসে।"