Advertisment

২ দিনের সম্মেলনের ব্যয় ৪১০০ কোটি, G-20 বৈঠক থেকে ভারত কী পাবে?

ওয়ান ফিউচারের অধীনে, বিশ্ব নেতারা প্রযুক্তি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
G20 Summit 2023 | G20 Summit Meeting 2023 | G20 summit live news

২দিনের সম্মেলনের ব্যয় ৪১০০ কোটি, G-20 বৈঠক থেকে ভারত কী পাবে?

জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের প্রস্তুতির জন্য ৪,১০০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় হয়েছে। শনিবার থেকে শুরু হওয়া দু’দিনের এই সম্মেলনে ব্যয়ের সরকারি নথি তেমনটাই বলছে। রেকর্ড অনুসারে, ব্যয়গুলো প্রায় ১২টি ক্ষেত্রে হয়েছে। সূত্রের খবর, জি-২০ প্রস্তুতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল- নিরাপত্তা, রাস্তা, ফুটপাথ, রাস্তার সাইনবোর্ড এবং আলোর রক্ষণাবেক্ষণ। এগুলোর পিছনেই সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয়েছে। এনডিএমসি এবং এমসিডির মত পুরসংস্থা থেকে শুরু করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্ত বিভাগ পর্যন্ত নয়টি সরকারি সংস্থা উদ্যানপালনের উন্নতি থেকে শুরু করে জি২০-র ব্র্যান্ডিং পর্যন্ত প্রায় ৩,৫০০ কোটি টাকারও বেশি খরচ করেছে।

Advertisment

কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের নথি অনুযায়ী সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে ৪,০০০ কোটি টাকারও বেশি। কেন্দ্রীয় সংস্থা যেমন আইটিপিও, সড়ক পরিবহণ এবং মহাসড়ক মন্ত্রক এবং মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং পরিষেবা সংস্থাগুলো ছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে রাজধানীতে প্র্স্তুতির জন্য কাজ করছে দিল্লি পুলিশ, এনডিএমসি এবং ডিডিএ। যার মোট ৯৮% ব্যয় করেছে। কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের নথি থেকে সম্মেলনের খরচ হিসেবে এগুলোই জানা গিয়েছে।

G-20 হল বিশ্বের ২০টি শক্তিশালী দেশের একটি গ্রুপ, যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক এবং পরিবেশগত সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে। এর সমাধানও খোঁজার চেষ্টা করে। G-20 বৈঠকের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৩টি বড় বিষয় তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন যে G-20 এর কর্ম পরিকল্পনা, শক্তিশালী উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs) ত্বরান্বিত করবে, যা ভবিষ্যতের দিকনির্দেশ নির্ধারণ করবে।

৯ এবং ১০ সেপ্টেম্বর G-20 বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে দিল্লিতে। রাষ্ট্রপ্রধানরা ৩টি বিষয়ে আলোচনা করবেন। এবারের জি-২০-এর থিম হল– এক পৃথিবী, এক পরিবার এবং এক ভবিষ্যত। ওয়ান আর্থ-এ জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশের মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে এই বৈঠকে।

ওয়ান ফিউচারের অধীনে, বিশ্ব নেতারা প্রযুক্তি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জি-টোয়েন্টি বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়টিও উঠে আসতে পারে। গত দেড় বছর ধরে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ চলছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছেন, সভা আয়োজনে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৪১০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। ব্যয় মোট ১২টি অংশে বিভক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা, রাস্তা পরিষ্কার, ফুটপাথ রক্ষণাবেক্ষণ, রাস্তার সাইনবোর্ড এবং আলোর ব্যবস্থা।  

G-20 বৈঠক থেকে ভারত কী পাবে?

বিশ্বে ভারতের ভাবমূর্তি মজবুত করার প্রচেষ্টা ভারতের। এমন সময়ে এই বৈঠক হচ্ছে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের জেরে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই দুই ভাগে বিভক্ত। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন জি-টোয়েন্টি বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ও সমাধানে আসা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, বৈঠকে আমেরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের রাষ্ট্রপ্রধানরা অংশ নিচ্ছেন, যারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। ২০২২ সালের নভেম্বরে বালি বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছিল। শেষ পর্যন্ত, বেশ কয়েকটি দেশ একটি প্রস্তাব পাস করে যে তারা ইউক্রেন যুদ্ধের বিরুদ্ধে, রাশিয়া এবং চিন তীব্র যার বিরোধিতা করেছিল।

ভারতের চেষ্টা ইউক্রেন ইস্যু থেকে মনোযোগ সরানোরও। এ জন্য ভারত শক্তিশালী উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) বিষয়টি সামনে এসেছে। ভারত বলেছে যে উন্নয়নশীল দেশ, গ্লোবাল সাউথ এবং আফ্রিকান দেশগুলির প্রান্তিক আকাঙ্খাগুলিকে মূল স্রোতে আনা দরকার। ভারতে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে যদি ওয়ান আর্থ, ওয়ান ফ্যামিলি অ্যান্ড ওয়ান ফিউচারের সমাধান পাওয়া যায়, তাহলে বিশ্বে ভারতের ভাবমূর্তি মজবুত হবে।

প্রধানমন্ত্রী মোদী তার ব্লগে লিখেছেন- ‘ভারতের জনসংখ্যা, গণতন্ত্র, বৈচিত্র্য এবং উন্নয়নের কথা অন্য কারও কাছ থেকে শোনা এক কথা এবং সরাসরি অভিজ্ঞতা দুটি বিষয় সম্পুর্ণ ভিন্ন। আমি নিশ্চিত যে আমাদের G-20 প্রতিনিধিরা নিজেরাই এটি উপলব্ধি করবেন। G-20-এর দেশগুলির বিশ্ব অর্থনীতিতে ৭৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। কারণ আমেরিকা, চিন ও রাশিয়ার মতো এই গ্রুপে রয়েছে। ভারতও G-20 বৈঠকের মাধ্যমে বিনিয়োগ বাড়ানোর চেষ্টা করছে।

G-20-এ আফ্রিকান দেশগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষে ভারত বারে বারে বলে আসছে। আফ্রিকান ইউনিয়নকে G20-এ অন্তর্ভুক্ত করতে ভারতকে সমর্থন করেছে চিন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এমন পরিস্থিতিতে এই বৈঠকের পর এই দেশগুলি G-20-এর স্থায়ী সদস্যপদ পেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এমনটা ঘটলে G-20-এর কাঠামো বদলে যাবে। সেক্ষেত্রে ভারতের আধিপত্য অনেকটাই বাড়বে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।  

তবে চিনের প্রেসিডেন্ট জিংপিং এই বৈঠকে যোগ দিচ্ছে না। ইউএস ইনস্টিটিউট অফ পিস-এর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সিনিয়র বিশেষজ্ঞ সমীর লালওয়ানির মতে, জি ২০-এ জিনপিংয়ের অনুপস্থিতি ভারত ও চিনের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের পদক্ষেপে একটি বড় ধাক্কা৷ প্রায় তিন বছর ধরে ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ চলছে। সম্প্রতি উভয় দেশের তরফ থেকে বলা হয়েছে, শিগগিরই এর সমাধান হবে। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ চোখে পড়েনি।

G-20 Summit
Advertisment