কোভিড থেকে সুস্থ হলে টিকা নিতে অপেক্ষা করতে হবে আরও ৩ মাস। সম্প্রতি কেন্দ্রকে এই সুপারিশ পাঠিয়েছে এনভ্যাক হাই পাওয়ার কমিটি। জাতীয় স্তরের এই কমিটির সুপারিশ মেনে নিয়েছে মোদী সরকার। এমনকি, করোনা টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার পর আক্রান্ত হলেও দ্বিতীয় ডোজের জন্য সুস্থদের অপেক্ষা করতে হবে ৩ মাস। আক্রান্তদের মধ্যে যাঁদের প্লাজমা থেরাপি করা হয়েছে, তাঁদের টিকাকরণের সময়সীমাও ৩ মাস পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। দেশ জুড়ে করোনার টিকানীতি নিয়ে বুধবার একগুচ্ছ নতুন নিয়ম জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
প্রসঙ্গত, এর আগে এনভ্যাক-এর সুপারিশেই করোনার টিকা ‘কোভিশিল্ড’-এর ২টি ডোজের মধ্যে ব্যবধান বাড়িয়ে ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ করা হয়েছিল। যদিও ‘কোভ্যাক্সিন’-এর ডোজগুলির মধ্যে সময় বাড়ানোর জন্য ওই কমিটির তরফে সুপারিশ করা হয়নি বলে একটি বিবৃতিতে জানিয়েছিল কেন্দ্র। টিকার ডোজ ছাড়াও বুধবার ওই কমিটির বাকি সুপারিশগুলো মেনে নিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
এদিকে, দেশে টিকার আকালের মধ্যেই ব্রিটেনে চলে গিয়েছেন সেরাম কর্তা আদার পুনাওয়ালা। এদিকে, দেশে ভ্যাকসিনের জোগান অপর্যাপ্ত হওয়ায় টিকাকরণ প্রক্রিয়া শ্লথ গতিতে এগোচ্ছে। বারবার বিরোধীরা কেন্দ্র এবং সেরামকে নিশানা করে অভিযোগ করেছে, দেশবাসীকে বঞ্চিত করে টিকা বিদেশে রফতানি করা হয়েছে। মঙ্গলবার সেই অভিযোগ খণ্ডণ করলেন সেরাম কর্তা। সাফ জানিয়ে দিলেন, দেশবাসীকে বঞ্চিত করে কখনও বিদেশে ভ্যাকসিন রফতানি করেন সেরাম।
পাশাপাশি তিনি আরও জানান, “ভারতে টিকাকরণ প্রক্রিয়া মসৃণ রাখতে সবরকম চেষ্টা করতে অঙ্গীকারবদ্ধ সেরাম ইনস্টিটিউট। তিনি বলেছেন, আমরা ২০ কোটি টিকার ডোজ সরবরাহ করেছি মার্কিন ওষুধ সংস্থাগুলির দুমাস পর অনুমোদন পাওয়া সত্ত্বেও। যত ডোজ উৎপাদন ও সরবরাহ হয়েছে, সেই নিরিখে সেরাম বিশ্বের শীর্ষ তিনটি সংস্থার একটি। আমরা উৎপাদন প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছি এবং ভারতবাসীকেই প্রাধান্য দিয়েছি। এই বছরের শেষে কোভ্যাক্স কর্মসূচিতে অন্যান্য দেশে রফতানি শুরু করব আশা করি।”
তাঁর দাবি, “ভারত-সহ গোটা বিশ্বে করোনা অতিমারী ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। গত কয়েক দিন ভারত সরকার এবং সেরাম-সহ অন্য টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির গভীর আলোচনা চলছে বিদেশে টিকা রফতানি নিয়ে। কিন্তু তার আগে কয়েকটি বিষয়ে স্বচ্ছতা থাকা আবশ্য়ক। এবছর জানুয়ারি মাসে আমাদের কাছে প্রচুর সংখ্যক টিকার ডোজ মজুত ছিল। তারপর টিকাকরণ যখন শুরু হয় তখন দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কম ছিল। সেইসময় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ-সহ অনেকে ভেবেছিলেন অতিমারী হয়তো শেষের দিকে। একইসঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য দেশে তখন করোনা সঙ্কট মারাত্মক ছিল। সাহায্যের জন্য তারা আর্তি জানাচ্ছিল।”