দিল্লি, পাঞ্জাব, হরিয়ানা সহ উত্তর ভারতে জেলে বন্দী গ্যাংস্টারদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে এই রাজ্যগুলির কারাগারে বন্দী কিছু গ্যাংস্টারকে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি দিয়েছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। সূত্রের খবর, এনআইএ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে এই গ্যাংস্টাররা জেলে বসে তাদের সিন্ডিকেট পরিচালনা করছে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের সেখানকার জেল থেকে সরিয়ে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কারাগারে স্থানান্তর করা উচিৎ বলেই মনে করছে এনআইএ।
রিপোর্ট অনুসারে, এর আগে এনআইএ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে একটি চিঠি লিখে উত্তর ভারতের জেল থেকে দক্ষিণ ভারতের জেলে কমপক্ষে ২৫ জন গ্যাংস্টারকে স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছিল। সিধু মুসেওয়ালা হত্যার প্রধান অভিযুক্ত লরেন্স বিষ্ণোইয়ের নামও NAI-র তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল।
যখন NIA-এর প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল, তখন দেখা গিয়েছিল যে এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া কারণ এর জন্য রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হবে। অন্যদিকে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ-এর প্রশাসনিক দায়িত্ব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে। সেজন্য বন্দীদের স্থানান্তর করতে বিশেষ কোন সমস্যা হবে না বলেই মনে করছে এনএইএ। এই কারণেই এনআইএ এখন আন্দামান-নিকোবরের জেলে বেশ কিছু গ্যাংস্টারদের পাঠানোর প্রস্তাব জানিয়েছে।
জাতীয় তদন্ত সংস্থা বেশ কিছু গ্যাংস্টারকে অসমের জেলে স্থানান্তর করার কথাও বিবেচনা করছে। বর্তমানে অসমে রয়েছে বিজেপির সরকার। তাই সেখানেও অপরাধীদের স্থানান্তর করতে কোন সমস্যা হবে না। পাঞ্জাবের খালিস্তানি সমর্থক এবং ওয়ারিস পাঞ্জাব দে প্রধান অমৃতপাল সিং ও তার সহযোগীদের বর্তমানে ডিব্রুগড় জেলে রাখা হয়েছে।
জেলে বন্দি মাফিয়াদের সিন্ডিকেটে চালানর বিষয়ে আঁচ করা যায় মার্চ মাসে লরেন্স বিষ্ণোইয়ের একটি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে। পাঞ্জাবি গায়ক সিধু মুসেওয়ালার মৃত্যুবার্ষিকীর ঠিক একদিন আগে এই সাক্ষাৎকারটি সামনে আসে। রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে সাক্ষাত্কারটি লরেন্স বিষ্ণোইয়ের মুক্তি পাওয়ার সময়ের। সেই সময় বিষ্ণোই ভাটিন্ডা জেলে বন্দী ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট বেগ পেতে দেখে পাঞ্জাব সরকারকে। এরপরই পাঞ্জাব সরকার এক বিবৃতিতে বলে যে বিষ্ণোই ভাটিন্ডা জেল থেকে সাক্ষাৎকার দেননি। সূত্রের খবর, এপ্রিলে যখন এনআইএ বিষ্ণোইকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল, জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বলেছিলেন যে তিনি জেল থেকেই সাক্ষাৎকারটি দিয়েছিলেন।
গত বছরের অগাস্টে, জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে সক্রিয় বেশ কয়েকটি গ্যাংস্টারের বিরুদ্ধে দুটি এফআইআর দায়ের করে। এফআইআর-এ বিদেশে বসে ভারতে সিন্ডিকেট চালানোর ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাসবাদী হামলা ও অপরাধের জন্য তহবিল সংগ্রহ, তহবিল সংগ্রহে যুবকদের নিয়োগের অভিযোগ রয়েছে। এর সঙ্গে টার্গেট কিলিং এর কথাও উল্লেখ করা হয়েছে এফআইআরে।